
ঝাড়গ্রামে ব্যবসায়ী,উচ্চবিদ্যলয়ের শিক্ষক, গবেষক, অফিসের কর্মচারি, মৃত ব্যক্তি ও অনেক অ-শিল্পী দেদার লুঠেপুটে খাচ্ছেন লোক প্রসার প্রকল্পের টাকা! তদন্তে নেমে প্রসাসনের চক্ষু চড়কগাছ।
ইতিমধ্যেই এক প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক তথা গবেষককে ১৫ জুন জেলা তথ্য দফতরে তলব করা হয়। নিয়ম বহির্ভুত ভাবে তিনি কেন লোকপ্রসার প্রকল্পের টাকা নিচ্ছেন তা জানতে চান বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বরুণ মণ্ডল। সুত্রের খবর, ওই গবেষক লিখিত আবেদন জানিয়ে প্রকল্প থেকে নিজেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানান। এমনকি, কয়েক বছর ধরে যে ভাতা তিনি নিয়েছেন তা ফেরত দিয়ে দিতে পারেন। প্রসঙ্গত, ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা সারা দেশও বিদেশ খ্যাত রায়বেশে নৃত্য শিল্পী (যিনি আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য) ২০১৫ সালে আবেদনপত্র জমা দিয়েও এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারেননি। তিনিই মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, যাঁরা শিল্পী নয় তাঁরা লোকপ্রসার প্রকল্পের টাকা পাচ্ছেন। নড়েচড়ে বসেন ঝাড়গ্রাম মহকুমা শাসক নকুলচন্দ্র মাহাত ও আধিকারিক বরুণ মণ্ডল।
উল্লেক্ষ্য, নিয়মানুযায়ী যে সমস্ত শিল্পীদের বাৎসরিক পারিবারিক আয় দেড় লক্ষ বা তার কম তাঁরাই এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন। তথ্য পেয়ে প্রশাসনের চক্ষু চড়কগাছ। সুত্র মতে, ওই গবেষকের মত, বহু শিক্ষক এই প্রকল্পের টাকা পাচ্ছেন। ভুপেনচন্দ্র মাহাত-সহ বেশ কয়েক জন শিক্ষক, নিমাইচাঁদ সরেণ (সরকারি কর্মচারি), মঞ্জু মাহাত, সুমিত্রা মুখোপাধ্যায় এ রকম বেশ কয়েক জন লোকশিল্পীর তথ্য খতিয়ে দেখতে ডাক পড়তে পারে বলে সুত্র মতে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি জঙ্গল মহলের “নাইটিঙ্গেল” ঝুমুর শিল্পী হিসেবে খ্যাত ইন্দ্রানী মাহাতর স্বপরিবার ও আত্মীয়-স্বজন মিলে কম পক্ষে দশ জনেরও বেশি লোকপ্রসার প্রকল্পের টাকা পাচ্ছেন বলে জানতে পেরেছে প্রশাসন। আদৌ পরিবারের সকলেই এই প্রকল্পের যোগ্য কিনা তাও খতিয়ে দেখবে প্রসাসন। আবার মৃত্যুর পরেও কয়েক জন শিল্পী এই প্রকল্পের টাকা পেয়েছেন। আবার তদন্ত উপরে গড়ালে উঠে আসতে পারে মেদিনীপুরের পূর্বতন জেলা সাংস্কৃতিক আধিকারিক কৌশিক নন্দীর নাম। কেন না এর আগে এই প্রকল্পের যাবতীয় কাজ হয়েছে তাঁর অফিসেই।
ঝাড়গ্রামের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, সরকারি টাকা পাঁচ হোক বা এক হাজারই হোক, বেনিয়মে কেউ আত্মসাৎ করতে পারেন না। নয়াগ্রামের এক লোক শিল্পী বলেন, পঁচিশ হাজার লোক হয়রানি হয়ে ফিরে এসেছে। এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হোক। প্রকৃত শিল্পীদের টাকা যাঁরা আত্মসাৎ করেছেন, তাঁদের সবার যোগ্য শাস্তি হোক।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।