হৃষীকেশ থেকে হাওড়াগামী দুন এক্সপ্রেসে তাণ্ডব চালাল এক দল দুষ্কৃতী। সোমবার রাতে বিহারের মধ্যে দিয়ে আসার সময় সংরক্ষিত আসনে বসা নিয়ে বিবাদ থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। দুষ্কৃতীরা যাত্রীদের মারধর করে এবং ট্রেনের মধ্যেও ভাঙচুর চালায়। যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে গুরুতর প্রশ্ন।
ঘটনাটি ঘটেছে দুন এক্সপ্রেসের এস ৯ কামরায়। যাত্রীদের অভিযোগ, কিছু লোক টিকিট ছাড়াই সংরক্ষিত কামরায় ওঠে এবং আসন দখল করার চেষ্টা করে। যাত্রীরা বাধা দিলে শুরু হয় বচসা, যা পরবর্তীতে মারামারিতে রূপ নেয়। কামরায় থাকা বিশ্বজিৎ ভট্ট নামে এক যাত্রী জানান, “আমাদের ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। বলা হয়, পরের স্টেশন এলে দেখে নেওয়া হবে। ট্রেন কুন্দ্রা স্টেশন ঢুকতেই কামরায় উঠে পড়ে প্রচুর লোক। তাদের কারও হাতে ছুরি, কারও হাতে লাঠি। আমাদের ধরে মারধর শুরু করে। আমাদের সঙ্গে ছ’বছরের বাচ্চা ছিল। তাকেও মারধর করা হয়। তার পর ট্রেনে ভাঙচুর চালায়। জানলার কাচ ভেঙে দেয়।”
বিশ্বজিৎ ভট্ট আরও জানান, হুমকি পাওয়ার পর রেলের নিরাপত্তারক্ষীদের জানানো হলেও হামলার সময় কোনও সহায়তা পাওয়া যায়নি। “আমাদের কাছ থেকে এক দুষ্কৃতীকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যায় রেল পুলিশ,” বলেন তিনি। এই অভিযোগ যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে।
একাধিক যাত্রী আহত হয়েছেন এই ঘটনায়। কারও মাথা ফেটেছে, কারও হাত-পায়ে চোট লেগেছে। হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে আহত যাত্রীরা জিআরপিতে অভিযোগ দায়ের করেন। স্টেশনেই তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর রাতের ট্রেন যাত্রা কতটা নিরাপদ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যাত্রীদের অভিযোগ, রেলের নিরাপত্তারক্ষীদের নিষ্ক্রিয়তা এবং দুষ্কৃতীদের অবাধে ট্রেনে ওঠা-নামা যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের কাছ থেকে সঠিক নিরাপত্তা না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা এই ঘটনার সুবিচার দাবি করছেন।
দুন এক্সপ্রেসে এই তাণ্ডবের ঘটনা যাত্রী নিরাপত্তার প্রতি রেলের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। যাত্রীরা আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে রেল কর্তৃপক্ষ কঠোর পদক্ষেপ না নিলে যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন। এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি উঠেছে।