ময়নাগুড়ি (জলপাইগুড়ি): এ বছর শ্রাবণীমেলার সময় জল্পেশ মন্দিরের গর্ভগৃহ পুণ্যার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। হাইকোর্টের নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জল্পেশ মন্দির ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক গিরিন্দ্রনাথ দেব জানিয়েছেন। মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকে শিবলিঙ্গে জল ঢালতে পারবেন পুণ্যার্থীরা। এ বছর ২১ জুলাই গুরু পূর্ণিমার দিন থেকে জল্পেশে শ্রাবণীমেলা শুরু হচ্ছে। আদালতের নির্দেশেই গত দু’ বছর শ্রাবণীমেলার সময় জল্পেশ মন্দিরের গর্ভগৃহে পুণ্যার্থীদের ঢোকা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
গিরিন্দ্রনাথ দেব জানান, পুণ্যার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতে মন্দিরের ভেতর কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে অত্যাধুনিক যন্ত্র বসানো হয়েছে। মন্দিরের বাইরে একাধিক জোন তৈরি করা হচ্ছে। সেই জোন থেকে প্রতিবারে ৫০ জন করে পুণ্যার্থীকে মন্দিরে ঢোকানো হবে। ৫০ জন মন্দিরে ঢুকে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গেট বন্ধ হয়ে যাবে। এ সব কিছুই করা হচ্ছে হাইকোর্টের নির্দেশে।
২০২২ সালে শ্রাবণীমেলার সময় মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকতে গিয়ে অত্যধিক ভিড়ের চাপে এক পুণ্যার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনিই আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তখন পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আদালত জল্পেশ মন্দিরের ভেতর প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। মন্দিরের বাইরে থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে শিবলিঙ্গে জল ঢালার ব্যবস্থা করা হয়। ২০২৩ সালেও এই ব্যবস্থা চালু ছিল।
জল্পেশ মন্দির কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনার আবেদন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। হাইকোর্ট কিছু শর্তসাপেক্ষে শ্রাবণীমেলার সময় মন্দিরের ভেতর পুণ্যার্থীদের প্রবেশে অনুমতি দিয়েছে। আদালতের নির্দেশ মেনেই মন্দির কমিটির তরফে এবার নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷
স্বয়ংক্রিয় গেট, বিশেষ জোন ইত্যাদি ছাড়াও মন্দিরের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রায় ১০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। শ’পাঁচেক স্বেচ্ছাসেবক মন্দিরের ভেতরে ও বাইরে মোতায়েন থাকবেন। এ ছাড়াও থাকবে কুইক রেসপন্স টিম, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম।
উত্তরবঙ্গের এক অতিপরিচিত পর্যটনকেন্দ্র জল্পেশ জলপাইগুড়ি জেলায়। ময়নাগুড়ি শহর থেকে ৯ কিমি, জলপাইগুড়ি সদর থেকে ২২ কিমি এবং গোরুমারা অভয়ারণ্য থেকে ৩৩ কিমি দূরে জল্পেশ মন্দির প্রসিদ্ধ তীর্থস্থান। সারা বছরই এখানে পর্যটক তথা পুণ্যার্থীদের ভিড় লেগে থাকে। গর্ভগৃহে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা শ্রাবণীমেলার সময় তুলে নেওয়া হবে, এই খবরে পর্যটন ব্যবসায়ী-সহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা খুশি। মন্দিরকে ঘিরে শ্রাবণীমেলার সময় তাঁদের ব্যাবসা বাড়বে বলে তাঁরা আশায় বুক বাঁধছেন।