ঝাড়গ্রাম
ফের দফায় দফায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জেরার মুখে ছত্রধর মাহাতো
শুক্রবারের পর ছত্রধরকে ফের জেরা শনিবার।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: গত ফেব্রুয়ারিতেই লালগড়ে ফিরেছন ছত্রধর মাহাতো। ইউএপিএ মামলায় হাইকোর্ট তাঁর সাজার মেয়াদ কমানোয় তিনি আমলিয়া গ্রামে ফেরেন। এখন করোনা আবহেই ফের নতুন করে তিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার (NIA) জেরার মুখোমুখি।
১১ বছর আগের দু’টি মামলায় নতুন করে ছত্রধর মাহাতোকে (Chhatradhar Mahato) জেরা করছে এনআইএ। ওই মামলা দু’টিতে তাঁকে জেরা করতে চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই আবেদন মঞ্জুর হলে শুরু হয় জেরা পর্ব।
ফের কী কী মামলায় জেরা?
শুক্রবার একটি মামলায় প্রথম দফার জেরার পর শনিবারও অন্য একটি মামলায় তাঁকে জেরার জন্য নোটিশ ধরানো হয়েছে। গতকাল তাঁকে লালগড়ের ধরমপুর অঞ্চলের শালবনি গ্রামে মাওবাদীদের হাতে সিপিএম কর্মী প্রবীর মাহাতোর খুনের মামলায় জেরা করা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে ২০৭ নম্বর কোবরা ব্যাটালিয়নের দফতরে তাঁকে ম্যারাথন জেরা করেন এনআইএর দুই অফিসার।
গতকাল সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত টানা পাঁচ ঘণ্টা তাঁকে জেরা করেন এনআইয়ের দুই আধিকারিক। এ দিন সকালে ফের তাঁকে বাঁশতলায় রাজধানী এক্সপ্রেস আটকের মামলায় জেরার কথা জানানো হয়েছে।
এক সময়ে জনসাধারণের কমিটির নেতা ছত্রধর বর্তমানে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। স্বাভাবিক ভাবেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা পুরনো মামলায় নতুন করে তাঁকে জেরা শুরু করতেই “রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি” দেখছেন ছত্রধর। তবে তিনি ভীত নন বলেই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
বছর ১২ আগে!
২০০৮-এর নভেম্বরে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Buddhadeb Bhattacharjee) কনভয় লক্ষ্য করে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সেই বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পরের বছর বীনপুরের জঙ্গল থেকে ছত্রধর মাহাতোকে গ্রেফতার করা হয়।
ছ’বছর ধরে শুনানি পর্বের শেষে ২০১৫-র মে মাসে ছত্রধর মাহাতো-সহ অন্যান্যদের দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঘোষণা করে মেদিনীপুর দায়রা আদালত। যাবজ্জীবনের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ও ধৃতদের মুক্তির দাবি জানিয়ে হাইকোর্টে সওয়াল করেন বর্ষীয়ান আইনজীবী শেখর বসু। সেই আবেদনেরই এ দিন চূড়ান্ত রায় ঘোষণায় সাজা কমানো হয় ছত্রধর মাহাতোর।
গ্রেফতারির সময় তাঁর কাছ থেকে কিছু বইপত্র, লিফলেট, জিলেটিন, অস্ত্র পেয়েছিলেন গোয়েন্দারা। সেই সব তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে ছত্রধর মাহাতোকে অস্ত্র মামলায় ৩ বছর, ইউএপিএ আইনে ১০ বছর এবং রাষ্ট্রদোহিতার অপরাধে ৮ বছর কারাবাসের সাজা শোনান বিচারপতিরা।
বছর ঘুরলেই ভোট!
সামনে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। গত লোকসভা ভোটে জঙ্গলমহলের তিন জেলা ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ায় তৃণমূলের ভোট বাক্সে জোরালো ধাক্কা লাগে। স্বাভাবিক ভাবেই আগামী বিধানসভা ভোটে দলের খোয়া যাওয়া সমর্থন পুনরুদ্ধারে এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে তৃণমূল।

ছত্রধর গ্রামে ফেরার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে একটা কানাঘুষো চলছিল-ই! ছত্রধর মাহাত কি শাসক তৃণমূলের হয়েই ময়দানে নামবেন? জল্পনার অবসান ঘটিয়ে গত জুলাই মাসে তাঁকে তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন খোদ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সামনের ভোটে জঙ্গলমহলে ‘এক্স ফ্যাক্টর’ হয়ে উঠতে পারেন ছত্রধর। তিনি নিজেও দাবি করেছেন, জঙ্গলমহল-সহ গোটা বাংলাতেই ক্ষমতায় ফিরবে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে পুরনো মামলায় ছত্রধরকে এনআইএর জেরা করার মধ্যে রাজনৈতিক রং খুঁজে পাচ্ছে তারা।
ঝাড়গ্রাম
তৃণমূলকে ভোট ‘না’ বলে দিন, ঝাড়গ্রামের সভায় বললেন শুভেন্দু অধিকারী
কুড়মি-আদিবাসীদের বার্তা দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।

খবর অনলাইন ডেস্ক: বুধবার ঝাড়গ্রামের সভা থেকে কুড়মি-আদিবাসীদের বার্তা দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
সামনে বিধানসভা ভোট। জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে কুড়মি-সহ অন্যান্য জনজাতিকে কাছে পেতে মরিয়া বিজেপি। এ দিনের সভা থেকে সরাসরি তেমন বার্তাই দিতে শোনা গেল শুভেন্দুকে।
তিনি বলেন, “কুড়মিদের সংরক্ষণ, চাকরি দেওয়া হয়নি। তাঁদের ক্রমশ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। কুড়মিদের বলব, এগিয়ে যেতে হলে, অধিকার পেতে হলে বিজেপিকে ভোট দিন। তফসিলিদের কথা এক মাত্র ভেবেছে বিজেপি। সাঁওতালি ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ি”।
কুড়মিদের একটা বৃহত্তর অংশে তৃণমূলের প্রভাব যথেষ্ট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এ বিষয়ে শুভেন্দু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী অলচিকি ভাষার স্বীকৃতির দাবি করেন। আপনারা অলচিকি ভাষায় কি বই বা সিলেবাস পেয়েছেন। অলচিকি ভাষায় কি শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে”?
তৃণমূলকে ভোট না দেওয়ার আবেদন জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোটে না বলে দিন। তৃণমূল ঝাড়গ্রামের উন্নয়ন চুরি করেছে। তৃণমূলের এখন চুরি ছাড়া কোনো কাজ নেই। ওদের শ্মশানে যাওয়ার সময় এসেছে”।
অঞ্চলের মানুষ বিজেপির সঙ্গে রয়েছে বলে দাবি করে প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গলমহলকে আমি হাতের তালুর মতো চিনি। এখানকার মানুষ বিজেপির সঙ্গে রয়েছেন। ২০২১-এর প্রতীক্ষায় রয়েছেন তাঁরা”।
আরও পড়তে পারেন: ‘দুয়ারে সরকার’-এর সাফল্যের খতিয়ান প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ঝাড়গ্রাম
‘মাস্ক কেনার টাকা না থাকলে, প্রশাসনকে কিনে দিতে হবে’, ঝাড়গ্রামে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এখানকার মানুষ মাস্ক পরছেন না”।

খবর অনলাইন ডেস্ক: বুধবার ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক পর্যালোচনা সভায় করোনাভাইরাস (coronavirus) মোকাবিলায় একগুচ্ছ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন-সহ আর্থিক সহযোগিতার অর্থ তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
এ দিন অনুষ্ঠানের শুরুতেই ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণকাজের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর পরই হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। মাওবাদী হামলায় মৃতের পরিবারের সদস্যদের হাতেও চার লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য অথবা চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন তিনি।
সাঁওতাল অ্যাকাডেমির জন্য এক কোটির টাকার চেক তুলে দেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে। পাশাপাশি পুরোহিত ভাতার চেকও তুলে দেন।
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে একের পর এক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ঝাড়গ্রামে কোভিডরোগীর সংখ্যা ধীরে হলেও বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “লাগোয়া রাজ্য ঝাড়খণ্ড। সেখান থেকে লরি আসে এই রাজ্যে। তাই ঝাড়গ্রামে বিশেষভাবে সাবধানে থাকা দরকার”।
পাশাপাশি তিনি বলেন, করোনা ঠেকাতে একমাত্র পথ সাবধানতা অবলম্বন করা। এর জন্য প্রশাসনকে সচেতনতামূলক প্রচার বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, “এখানকার মানুষ মাস্ক পরছেন না। মাস্ক পরার জন্য সচেতনতার প্রসার করতে হবে। মানুষের হাতে মাস্ক কেনার টাকা না থাকলে প্রশাসনের উদ্যোগে তা কিনে দিতে হবে”।
বিগত কয়েক বছরে ঝাড়গ্রামের একাধিক উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান পেশ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারি প্রকল্পের কাজে বাধা দেবেন না। প্রশাসন থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্বকেও তিনি নির্দেশ দিয়েছেন টেন্ডার নিয়ে যেন কোনো গন্ডগোল না হয়। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে হাসপাতাল, রাস্তাঘাট, পর্যটনের উন্নয়ন, কিষান মান্ডি- কী হয়নি? এই উন্নয়নকে ধরে রাখতে হবে”।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ঝাড়গ্রামে অনেক কাজ হয়েছে। এর পরেও যাঁরা বড়ো বড়ো কথা বলছেন, তাঁরা আগে নিজেরা একটু কাজ করে দেখান। আমরা প্রায় আট বছরের মধ্যে আমরা অনেক কাজ করেছি। সে সবের সাক্ষী রয়েছেন এলাকার মানুষ। ঝাড়গ্রামে নতুন করে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করবেন না”।
আরও পড়তে পারেন: হাতির হানায় মৃতের পরিবারের সদস্যকে চাকরি, ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ঝাড়গ্রাম
ঢাঙিকুসুমে মাওবাদী-দর্শন সাজানো, জানিয়ে দিল নবান্ন
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, গত মার্চ থেকে বেশ কয়েকটি ঘটনায় জঙ্গলমহলে ফের মাওবাদীদের নামে হুমকি চিঠি এবং পোস্টার পড়ছে। সেগুলি আসলে মাওবাদীরা করছে, না কি অন্য কেউ, তার তদন্ত শুরু হয়েছে।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ির ঢাঙিকুসুমে ঝরনা দেখতে গিয়ে মাওবাদীদের খপ্পরে পড়ার যে দাবি খড়গপুরের চার যুবক করেছিলেন, তা ‘সাজানো’ বলে সাফ জানিয়ে দিল নবান্ন। তবে জঙ্গলমহলে গত কয়েক মাসে পর পর যে ক’টি ঘটনা ঘটেছে, তা হালকা ভাবে দেখছে না প্রশাসন।
উল্লেখ্য, ৩ সেপ্টেম্বর খড়গপুরের চার যুবক ঢাঙিকুসুম থেকে ফিরে মাওবাদীদের দেখেছেন বলে দাবি করেছিলেন। তাঁদের ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছিলেন তাঁরা।
পরে পুলিশি জেরার মুখে পড়ে বয়ান বদলে যায় তাঁদের। তাঁরা বলেন, নেশাগ্রস্ত থাকায় তাঁদের এক জনের মোবাইল ফোন ঝরনার জলে ভেসে গিয়েছিল। তখনই তারা মাওবাদী তত্ত্ব সাজিয়ে চার যুবকের ফোন হারিয়ে গিয়েছে বলে থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগ নবান্নে জানিয়েছে, এখন জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের আনাগোনা না-থাকলেও ঝাড়খণ্ড সীমানায় স্কোয়াড আসছে। ধলভূমগড়, গালুডি, ঘাটশিলা এবং পটমদা এলাকায় মাঝে মাঝে মাওবাদীরা আসে। খবর এলেই ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, গত মার্চ থেকে বেশ কয়েকটি ঘটনায় জঙ্গলমহলে ফের মাওবাদীদের নামে হুমকি চিঠি এবং পোস্টার পড়ছে। সেগুলি আসলে মাওবাদীরা করছে, না কি অন্য কেউ, তার তদন্ত শুরু হয়েছে।
১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের বিরোধিতা করে পোস্টার পড়ে। গত ৪ সেপ্টেম্বর সিন্দুরিয়ার কাছে হাদরা মোড়ে ২০টি হাতে লেখা পোস্টারে এক ঠিকাদারকে রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ করতে বলে হুমকি দেওয়া হয়। যদিও পুলিশ মনে করছে এর পেছনে মাওবাদীরা নয়, স্থানীয় শত্রুতাও অন্যতম কারণ হতে পারে।
খবরঅনলাইনে আরও পড়ুন
হাওড়া, শিয়ালদহ শাখায় লোকাল ট্রেন চালাতে চেয়ে রাজ্যকে চিঠি রেলের
-
রাজ্য2 days ago
ব্রিগেড সমাবেশ: দরকারে ‘শান্তিনিকেতন’ বাড়ি নিলাম করে প্রতারিত মানুষের টাকা ফেরত, হুঁশিয়ারি মহম্মদ সেলিমের
-
রাজ্য2 days ago
পশ্চিমবঙ্গে ফিরতে পারে তৃণমূল সরকার, কী বলছে সমীক্ষা
-
ভ্রমণের খবর3 days ago
দোলেই ভোট! পর্যটন ব্যবসায়ে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় হতাশ রাঢ়বঙ্গ
-
ফুটবল2 days ago
পাঁচ গোল করেও ওড়িশার কাছে ছয় গোলের মালা পরল ইস্টবেঙ্গল