খবর অনলাইন ডেস্ক: দ্রোহের কার্নিভালে অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি রবিকিষন কপূর বলেন, “শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার সকলেরই রয়েছে। আদালত এই নির্দেশ বারবার দিয়েছে।”
দ্রোহের কার্নিভালে অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি হাইকোর্ট ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারামতে যে নির্দেশিকা জারি করেছিল কলকাতা পুলিশ, তাও খারিজ করে দিয়েছে। বিচারপতি কপূর জানিয়ে দিয়েছেন, রেড রোড এবং রানি রাসমণি রোডের মাঝখানে ব্যারিকেড করে দেওয়া হবে।
হাইকোর্টের নির্দেশের খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ধর্মতলার অনশন-মঞ্চকে ঘিরে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। উল্লাসে মেতে ওঠে সবাই। দ্রোহের কার্নিভাল শুরু করতে প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। মহিষবাথান থেকে যে ঢাকির দল এসেছে তারাও ঢাক বাজানো শুরু করে দেন। ধর্মতলার অনশন-মঞ্চ যেন এক উৎসবের মঞ্চে পরিণত হয়। ওদিকে পুলিশ রানি রাসমণি রোডকে ঘিরে যে ব্যারিকেড তৈরি করেছিল, হাইকোর্টের নির্দেশ আসার পর তাও খোলা শুরু হয়ে যায়।
রানি রাসমণি রোডকে ঘিরে পুলিশ যে ১৬৩ ধারা জারি করে সেই নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে মঙ্গলবার হাইকোর্টে যায় জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টর্স। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের কাছে তাঁরা দ্রুত শুনানির আর্জি জানান। সেই আর্জি মঞ্জুর হয়। দুপুর দুটোর কিছু পরেই হাইকোর্টে বসে বিচারপতি রবিকিষন কপূরের বিশেষ বেঞ্চ।
শুনানির সময় রাজ্যের আইনজীবী বলেন, মঙ্গলবার (পুজোর) কার্নিভাল রয়েছে। সে কথা রাজ্যের সবাই জানেন। মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, রেড রোড থেকে দূরেই দ্রোহের কার্নিভাল করা হচ্ছে। বিকাশবাবু সে কারণেই রানি রাসমণি রোডে কর্মসূচি পালনের অনুমতি প্রার্থনা করেন। রাজ্যের আইনজীবী জানান, রেড রোড এবং রানি রাসমণি রোডের সংযোগও রয়েছে।
বিচারপতি কপূর জানতে চান, দু’টি কর্মসূচিই একসঙ্গে করতে হলে রাজ্য কী শর্ত দেবে? রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ডাক্তারদের কর্মসূচি চললে উত্তর কলকাতার বহু পুজোর রেড রোডে পৌঁছোতে সমস্যা হবে। বিকাশরঞ্জন পালটা বলেন, “ডাক্তারেরা গুন্ডা নন। আমি নিশ্চিত করে বলছি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হবে। পুলিশ বলতে পারে না আমি কোন দিন কর্মসূচি করব। রানি রাসমণি রোডে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে পুলিশ। তারা আটকে রাখুক।”
দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি কপূর ফের রাজ্যকে প্রশ্ন করেন, তারা কি কোনো শর্তেই এই কর্মসূচি পালন করতে দেবে না? রাজ্যের আইনজীবী তখন বলেন, অন্য দিন এই দ্রোহের কার্নিভাল করা যেতে পারে।
শেষ পর্যন্ত বিচারপতি দ্রোহের কার্নিভাল আয়োজন করার পক্ষেই রায় দেন। এবং একই সঙ্গে রানি রাসমণি রোডে জারি করা ১৬৩ ধারা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন কলকাতা পুলিশকে।