
বাঁকুড়া: দুর্গাপুজোর পর বাঙালির অন্যতম প্রধান পুজো কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। এই বিশেষ দিনে বারোয়ারি-সহ অনেক গৃহস্থের বাড়িতে পুজিত হন দেবী লক্ষ্মী। রাজ্যের বিভিন্ন অংশের সাথে সাথেই বাঁকুড়া জেলা জুড়েও দেবী আরাধনায় শামিল হয়েছেন অনেকে। কোজাগরী লক্ষ্মী সাধারণত পদ্মফুলের উপর দণ্ডায়মান, কাঁখে কলস আর হাতে সোনালি পাকা ধান, পাশে দেবীর বাহন প্যাঁচা – এই অবস্থায় বিরাজ করেন। কিন্তু এক ব্যতিক্রমী দেবী লক্ষ্মীর মূর্তি দর্শন করতে হলে অবশ্যই আপনাকে আসতে হবে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের রামকানালী গ্রামে। এখানে দেবী ‘গজগামিনী লক্ষ্মী’ অর্থাৎ হাতির পিঠে বিরাজ করেন মা।
কৃষিনির্ভর এই গ্রামের মানুষ প্রায় ৭০ বছর ধরে এই ব্যাতিক্রমী ‘গজগামিনী লক্ষ্মী’ পুজো করে আসছেন। তবে এই বছর ধারাবাহিক ভাবে হাতির আক্রমণ আর অনাবৃষ্টির কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ধান চাষে। যার জেরে দেবী লক্ষ্মীর বাৎসরিক পুজো হচ্ছে নমো নমো করে।
গ্রামবাসী অনুপ দে বলেন, “আমরা কৃষিজীবী মানুষ। বৃষ্টির জলের উপর মূলত নির্ভর করে এখানে চাষাবাদ হয়। এ বছর বর্ষায় তেমন বৃষ্টি হয়নি। সব জমিতে ধান রোয়া যায়নি। যেটুকু জমিতে ধান রোয়া হয়েছিল সেচের জলের অভাবে সেটুকুও শুকিয়ে গিয়েছে। আর তার সঙ্গে হাতিদের উৎপাত তো আছেই। ফলে এই অবস্থায় কী করে পুজো হবে তা খুবই ভাবাচ্ছিল আমাদের।” পাশাপাশি বছরের বাকি দিনগুলো কী ভাবে সংসার চলবে সে কথা ভেবেও দিন কাটাচ্ছে রামকানালী গ্রামের সিংহভাগ মানুষ।
গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ধারাবাহিক ভাবে চলে আসা পুজো বন্ধ করতে চাননি গ্রামবাসী। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়েই পুজোর অনুষ্ঠান কাটছাঁট করেই এ বার পুজো হচ্ছে।