শনিবার দুপুরে হঠাৎ করেই সল্টলেকের স্বাস্থ্য ভবনে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তাররা গত ৩৪ দিন ধরে ধর্নায় বসে আছেন। মমতা নিজেই তাঁদের অবস্থানে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখার চেষ্টা করেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী মাইক নিয়ে দাঁড়ানোর পরও, ধর্নাস্থল থেকে বিচারের দাবিতে স্লোগান উঠতে থাকে। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রী ধৈর্যের সঙ্গে বক্তব্য শুরু করেন।
মমতা বলেন, ‘‘নিরাপত্তাজনিত কারণে বারণ থাকা সত্ত্বেও আমি এখানে নিজে এসেছি। আপনাদের আন্দোলনের প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। আমি ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছি, তাই আপনাদের কষ্ট আমি বুঝতে পারছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আপনাদের দাবিগুলির প্রতি সরকার সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করবে। যদি কেউ দোষী হয়, তাকে শাস্তি পেতেই হবে। আমি সিবিআইকে অনুরোধ করব, দোষীদের ফাঁসি হোক।’’
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, আরজি কর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং নতুন করে সেটি গঠনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, সব হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি নতুন করে গঠন করা হবে, যাতে জুনিয়র এবং সিনিয়র ডাক্তার, নার্স এবং পুলিশ কর্মকর্তারা যুক্ত থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি আপনাদের বড় দিদি হয়ে এসেছি। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, একজন সমব্যথী হিসেবে এসেছি। আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হবে না, শুধু আপনারা কাজে ফিরে যান।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডাক্তারেরা যে খাবার খাচ্ছেন, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং খাবার সম্পর্কে সাবধানতা অবলম্বন করার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের কাছে আসা মানে নিজের মর্যাদা খর্ব করা নয়, এটি আমার শেষ চেষ্টা।’’
এর আগে বৃহস্পতিবার, জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে নবান্নে বৈঠকের জন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রস্তুত থাকলেও, বৈঠক ভেস্তে যায়। ডাক্তারেরা সরাসরি সম্প্রচারের দাবি করেন, যা সরকার গ্রহণ করেনি। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শুক্রবার মমতা নিজে ধর্নাস্থলে উপস্থিত হয়ে চিকিৎসকদের আশ্বাস দিলেন।