কলকাতা: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার বিধানসভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাংলাদেশে শান্তি বজায় রাখতে রাষ্ট্রপুঞ্জের মাধ্যমে শান্তিরক্ষা বাহিনী (পিসকিপিং ফোর্স) পাঠানোর জন্য কেন্দ্রকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মমতা বলেন, “আমাদের প্রস্তাব, কেন্দ্র রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে বাংলাদেশে শান্তিসেনা পাঠানোর আর্জি জানাক।”
বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে একাধিক অশান্তির ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই বিষয়ে আমি সরাসরি নাক গলাতে চাই না। এটি কেন্দ্রীয় সরকারের এক্তিয়ারে পড়ে। তবে আমাদের মৎস্যজীবীদের আটক হওয়া বা সীমান্তে সমস্যা হলে তা মেনে নেওয়া যায় না।”
মমতা বলেন, পশ্চিমবঙ্গের ৭৯ জন মৎস্যজীবী সম্প্রতি ভুলবশত বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছিলেন। তাদের আটক করে বাংলাদেশের জেলে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রের কাছে একাধিকবার অনুরোধ সত্ত্বেও তারা এখনও মুক্তি পাননি। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের নিষ্ক্রিয়তার জন্য অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বা বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট বিবৃতির দাবি জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ নিয়ে সংসদে বিবৃতি দেওয়া হোক। প্রধানমন্ত্রী বা বিদেশমন্ত্রী পরিষ্কার করে দেশের মানুষকে জানান, সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে।”
মমতা সাফ জানিয়ে দেন, বাংলাদেশে ভারতীয় নাগরিকরা যদি আক্রান্ত হন, তবে তা তাঁর সরকার মেনে নেবে না। প্রয়োজনে ভারত সরকার যেন সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে আনে। তিনি বলেন, “আমাদের পরিবার এবং প্রিয়জনেরা বাংলাদেশে আছেন। তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।”
মমতা আরও বলেন, “বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে ধর্মীয় কারণে কেউ অত্যাচারিত হলে আমরা তার নিন্দা করি। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যে অবস্থান নেবে, আমরা তার সঙ্গে থাকব। তবে মানবাধিকারের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”