আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ ও উত্তাল পরিস্থিতির মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার ঘোষণা করলেন, রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরজি কর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা সরাসরি জানালেন স্বাস্থ্য ভবনের সামনে চলমান জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নাস্থলে উপস্থিত হয়ে। এই পদক্ষেপ সাম্প্রতিক আরজি কর-কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে, যেখানে একাধিক অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি নিয়ে।
জুনিয়র ডাক্তাররা গত মঙ্গলবার থেকে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে পাঁচ দফা দাবিতে অবস্থান করছেন। আন্দোলনের মাঝে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করার প্রস্তাব থাকলেও, তা ভেস্তে যায়। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী নিজেই আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হন এবং জানান, ‘‘আমি আরজি কর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দিলাম। পাশাপাশি, রাজ্যের সব হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতিও ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
প্রসঙ্গত, ৯ সেপ্টেম্বর নবান্নে অনুষ্ঠিত এক প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা রোগী কল্যাণ সমিতি নিয়ে কিছু প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি জানান, হাসপাতালের অধ্যক্ষকে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদে বসানোর প্রস্তাব করা হয়েছিল। বর্তমানে স্থানীয় বিধায়ক বা সাংসদ এই পদে থাকেন। আরজি কর হাসপাতালে এই পদে ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ্ত রায়, যার বাড়িতে সম্প্রতি সিবিআই হানা দিয়েছিল।
‘বড় দিদি হয়ে এসেছি’, আচমকাই স্বাস্থ্য ভবনে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী
মমতা আরও প্রস্তাব দিয়েছিলেন, অধ্যক্ষের সঙ্গে এক জন সিনিয়র ডাক্তার, এক জন জুনিয়র ডাক্তার, এক জন নার্স, স্থানীয় বিধায়ক এবং স্থানীয় থানার আইসিকে রোগী কল্যাণ সমিতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। তবে এই প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার আগেই রোগী কল্যাণ সমিতি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই পদক্ষেপের ফলে রাজ্যের সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি নতুন করে গঠন হবে এবং এতে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।