সোমবার এক মাস পূর্ণ হল আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার মৃত্যুর। এই দিনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহ্বান জানান, ‘‘পুজোয় ফিরে আসুন, উৎসবে ফিরে আসুন।’’ তাঁর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী দলগুলি তীব্র সমালোচনায় সরব হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রতিদিন রাতে আপনারা যদি রাস্তায় থাকেন, অনেক মানুষের তো সমস্যা হয়। অনেক এলাকায় অনেক বয়স্ক মানুষ আছেন। আলো লাগলে তাঁদের ঘুমের সমস্যা হয়।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মন্তব্য করেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কি গোটা রাজ্যের মানুষকে তাঁর দলের চাকরবাকর মনে করছেন? তিনি কি ঠিক করবেন, মানুষ কখন আন্দোলন থামাবে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গোটা বাংলা ভারাক্রান্ত, আন্দোলনকারীরা নিজেদের কন্যা, মা, সহোদরা মনে করে প্রতিবাদ করছেন। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ছিল সমব্যথী হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো, অথচ তিনি মানুষকে পুজোর আনন্দে মাততে বলছেন।’’
এই সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীরাও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। রাত দখলের ডাক দেওয়া রিমঝিম সিংহ বলেন, ‘‘জনসাধারণ এখন আন্দোলনকেই মহোৎসব মনে করছেন। তাঁরা ঠিক করবেন কোনটা উৎসব।’’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘‘এই আন্দোলন শুধুমাত্র একটি ঘটনার জন্য নয়, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা না ঘটে, সেই দাবিতেই মানুষ পথে নেমেছেন। রাজ্য প্রশাসন এখনও পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, তাই মানুষই ঠিক করবেন, তাঁরা কোন উৎসবে যোগ দেবেন।’’
আরজি কর মামলায় সুপ্রিম কোর্টের একাধিক প্রশ্নের মুখে রাজ্য
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি শেষ হওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রীর এই আহ্বান এসেছে। আদালত জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিলেও সাধারণ আন্দোলনকারীদের জন্য কোনো নির্দেশ দেয়নি। এরই মধ্যে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন চলছে এবং পুজোর সময়ে আন্দোলনের রূপ কেমন হবে, তা নিয়ে প্রশাসন চিন্তিত।
অনেকে মনে করছেন, পুজোর আবহে আন্দোলনের তীব্রতা কমতে পারে, তবে অন্য অনেকের ধারণা পুজোর সময়ে আন্দোলনের রূপ পরিবর্তিত হতে পারে। বামপন্থী হিসেবে পরিচিত অভিনেত্রী উষসী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এবার পুজোর মুড নেই কারও মনেই। যেখানে নারীরা সুরক্ষিত নন, সেখানে পুজোর কেনাকাটা করার কোনো মানে হয় না।’’