রাজ্যে এখন অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালু রয়েছে মিড ডে মিল প্রকল্প। কেন উপেক্ষিত উঁচু শ্রেণির পড়ুয়ারা?
কলকাতা: এ দেশের স্কুল ও মাদ্রাসা স্তরে প্রচলিত মিড ডে মিল প্রকল্প সারা বিশ্বেই প্রায় নজিরবিহীন। যদিও তা নির্দিষ্ট শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্যই সীমাবদ্ধ। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্কুল ও মাদ্রাসার সব শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এই প্রকল্প চালু করার দাবি জানাল মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর।
ভূমিকা গুরত্বপূর্ণ মিড ডে মিলের

দেশে স্কুল ও মাদ্রাসা স্তরে ড্রপ-আউট কমাতে এবং সার্বিক ভাবে ছেলেমেয়েদের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানমুখী করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে চলেছে মিড ডে মিল প্রকল্প। গত দু’দশকে একাধিক সমীক্ষায় স্কুলশিক্ষার ক্ষেত্রে এই প্রকল্পের সদর্থক ভূমিকার তথ্য উঠে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গেও এই প্রকল্পের সাফল্যে বিপুল সংখ্যক পড়ুয়া খিদের যন্ত্রণা থেকে যেমন মুক্ত, তেমনই অভিভাবকরাও খানিকটা নিশ্চিন্ত হতে পেরেছেন।
কঠিন সময়ের তীব্র সমস্যা

করোনাভাইরাস মহামারির জেরে দীর্ঘ কয়েক মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর ফের গত ১৬ নভেম্বর থেকে রাজ্যে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুলের দরজা খুলে গিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, স্কুল এবং মাদ্রাসার অপেক্ষাকৃত নিচু শ্রেণির জন্যই অফলাইনে পঠনপাঠন শুরু হয়ে যাবে অচিরেই। কিন্তু মহামারির সংকট শুধুমাত্র জনস্বাস্থ্য নয়, শিক্ষা-সহ জীবনযাপনের বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং অবলম্বনগুলির জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। একদিকে বেড়েছে বেকারত্ব, কাজ হারাতে হয়েছে অনেককেই, আবার মজুরিও হ্রাস হয়েছে বড়ো অংশের কর্মীর। এমন পড়ুয়াই এমন পরিস্থিতিতে পড়াশোনা শিকেয় তুলে কাজের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েছে।
সারা বছর সবার জন্য

স্কুল এবং মাদ্রাসার সব শ্রেণির জন্যই স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে ছাত্র-ছাত্রীদের পুষ্টির বিষয়টিতে সবচেয়ে জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করছে এপিডিআর। এ ব্যাপারে পড়ুয়াদের মধ্যে কোনো ভাগাভাগি না করে সারা বছর স্কুল ও মাদ্রাসার সব শ্রেণির পড়ুয়াকেই মিড ডে মিল দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠন। কারণ, শুধুমাত্র অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই প্রকল্প চালু থাকলে বাকিরা উপেক্ষিতই রয়ে যাবে। তা ছাড়া খাদ্যের নিরাপত্তার ধারণা শুধুমাত্র অষ্টম শ্ৰেণি পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। রাষ্ট্রসঙ্ঘের শিশু অধিকার সনদ ১৯৯০-এ অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ ভারত। ফলে দেশের প্রতিটি শিশুর পুষ্টিকর খাদ্যের সংস্থানে দায়বদ্ধ সরকার।
দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রকল্পের সুবিধা দিল্লিতে

দিল্লি সরকার ইতিমধ্যেই দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত অন্ততপক্ষে ছাত্রীদের জন্য মিড ডে মিল প্রকল্প চালু করেছে। কর্নাটক সরকারও কয়েক বছর আগে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এই প্রকল্পের ঘোষণা করেছিল। পশ্চিমবঙ্গে দুয়ারে রেশন-সহ বিভিন্ন প্রকল্প চলছে। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যই বিভিন্ন রকমের প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। এ ক্ষেত্রে সব ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অন্তত একবেলা আহারের বন্দোবস্ত করা অত্যন্ত জরুরি বলে দাবি করেছে এপিডিআর। আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। তার আগেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, মাদ্রাসা শিক্ষামন্ত্রী গোলাম রব্বানি-সহ শিক্ষা আধিকারিকদের লিখিত আবেদনে এই দাবির কথা সবিস্তারে জানিয়েছে এপিডিআর।
আরও পড়তে পারেন
কলকাতায় চালু হল কফিপ্রেমীদের নতুন আড্ডাস্থল ‘কাফে বউবাজার’
সংক্রমণ সাড়ে ন’হাজারের কাছাকাছি, তবে আগের বৃহস্পতিবারের থেকে বেশ কিছুটা কম
অক্ষরেখার জন্য আজ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে, শুক্রবার থেকে দাপট বাড়বে উত্তুরে হাওয়ার
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।