বিজয়া সম্মিলনী সারতে গিয়ে আক্রান্ত তৃণমূল নেতা, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহিলাদের উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ

0

ঘটনাস্থলের ভিডিয়োয় দেখা যায়, উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আবাসন থেকে বেরিয়ে আসছেন বেশ কিছু আতঙ্কিত পরিবার। তাঁদের সঙ্গে শিশুরাও রয়েছে।

ব্যারাকপুর: বেলঘরিয়া প্রসাদনগর আবাসন এলাকায় এক পরিচিতের বাড়িতে বিজয়া সম্মিলনী সারতে গিয়ে আক্রান্ত বরানগরের তৃণমূল নেতা শংকর রাউত। তাঁর অভিযোগ, “ব্যাপারটাকে অন্য দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন স্থানীয় এক যুবকের নেতৃত্ব কিছু লোক”। পুরো ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। যার রেশ রয়ে গিয়েছে এখনও।

উত্তর বরানগর যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শংকর রাউত বলেন, “গত ২১ অক্টোবর রাত ১০টা নাগাদ আমি প্রসাদনগরে আমার এক পরিচিতের বাড়িতে পরিবার নিয়ে পৌঁছাই। কিছুক্ষণ পরে আমার ড্রাইভার আমাকে ফোন করে জানান, কিছু লোক আমার গাড়িটাকে ঘিরে ধরেছে। আমি তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চাই। কিন্তু আরমান মালিকের নেতৃত্বে কয়েকজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সেখানে উপস্থিত পাঁচ-ছ’টি পরিবারের মহিলাদের উপর চড়াও হন। বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসি”।

তবে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আরমান মালিক নামের ওই যুবকের অভিযোগ, “শংকর রাউত নামে এক ব্যক্তি নিজেকে বরানগরের বড়ো নেতা হিসেবে পরিচয় দেন। বেশ কয়েক দিন ধরে ওই ব্যক্তি নিজের সঙ্গী ও বেশ কয়েক জন মহিলাদের নিয়ে এখানে আসছিলেন। এলাকার মানুষ অভিযোগ করছিলেন। ঘটনার দিনেও তাঁর সঙ্গে দু’-তিনজন মহিলা ছিলেন। আমরা হাতজোড় করে তাঁদের সঙ্গে কথা বলি। কিন্তু তাঁদের আচরণ ভালো ছিল না। পরিস্থিতি দেখে আমরা পুলিশকে ঘটনার কথা জানাই”।

কিন্তু পুরো এই ঘটনায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন তৃণমূল নেতা শংকর। পরিবারকে যে ভাবে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে এবং সে সব খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিকৃত ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নিতে চলেছেন বলে জানান তিনি। শংকর জানান, “ভুয়ো খবর প্রচারের বিরুদ্ধে আমি আজ-ই দু’টি মাধ্যমের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করছি। এমনকী আরমান মালিকের বিরুদ্ধে বেলঘরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করব”।

ঘটনাস্থলের ভিডিয়োয় দেখা যায়, উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আবাসন থেকে বেরিয়ে আসছেন বেশ কিছু আতঙ্কিত পরিবার। তাঁদের সঙ্গে শিশুরাও রয়েছে। ওই অনুষ্ঠান যাঁর ফ্ল্যাটে হচ্ছিল, সেই পাপিয়া রায় এবং আক্রান্ত মহিলারা অভিযোগ করেন, “বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে পারিবারিক অনুষ্ঠান চলছিল। কোনো সমস্যাই ছিল না, কিন্তু অকারণে গোলমাল পাকানো হয়েছে। এলাকার প্রচুর ছেলে এসে আমাদের আতঙ্কিত করে দিয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘেরাও করা হয়েছিল। লাঠি, বন্ধুক নিয়ে আমাদের উপর হামলা হয়। কোনো রকম ভাবে আমরা পরিবার নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসি”।

তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে খবর, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও এক বার শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এল। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক বা গ্রেফতারও করেনি। এমনকী শংকর নিজেও বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকলেও থাকতে পারে। তবে আমি নির্দিষ্ট কোনো গোষ্ঠীর লোক নই। আমি তৃণমূল কংগ্রেসের এক জন কর্মী মাত্র”।

আরও পড়ুন: শাহরুখ খান বিজেপি-তে যোগ দিলেই মাদক হবে চিনির গুঁড়ো, কটাক্ষ মহারাষ্ট্রের মন্ত্রীর

বিজ্ঞাপন