ব্যারাকপুর: বরানগরের বিশেষ ভাবে সক্ষমদের হাসপাতালে ছাত্র মৃত্যুতে নয়া মোড়। অভিযোগ, কলেজে দিনের পর দিন ব়্যাগিংয়ের শিকার হন প্রিয়রঞ্জন সিং নামে ওই ছাত্র। সেই তথ্য তুলে ধরে মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন মৃতের দাদা। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, মৃতের নাম প্রিয়রঞ্জন সিং। বাড়ি, বিহারে। বরানগরের বনহুগলিতে বিশেষ ভাবে সক্ষমদের হাসপাতালের ছাত্র ছিলেন তিনি। হস্টেলে থেকে পড়াশোনা করতেন।
মঙ্গলবার কলেজে নবীণবরণ হওয়ার কথা ছিল। গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠানে মহড়া চলে হস্টেলে। এরপর হস্টেলে নিজের ঘরে চলে যান প্রিয়রঞ্জন। কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, তাঁর ঘরের দরজা ভিতরে থেকে বন্ধ! বাইরে থেকে ডাকাডাকি করেও সাড়া মেলেনি। শেষপর্যন্ত যখন ঘরের দরজা ভাঙা হয়, তখন ওই পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
অভিযোগ, ছাত্রকে উদ্ধার করা গেলেও ওই হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার ব্যবস্থা না থাকায় সেখানে তাঁর কোনো চিকিৎসাই করা সম্ভব হয়নি। এমনকী হাসপাতাল চত্বরে কোনো অ্যাম্বুল্যান্সও ছিল না। শেষমেশ বাইকে করে ওই ছাত্রকে পানিহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, উদ্ধার করার সময় ওই পড়ুয়ার দেহে প্রাণ ছিল। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় পড়ুয়ারা প্রিয়রঞ্জনকে নিয়ে সাগর দত্ত হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন। যদিও পথেই মৃত্যু হয় ওই ছাত্রের।
এরপরই মঙ্গলবার সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বরানগরের প্রতিবন্ধী হাসপাতালচত্বর। পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে অবস্থানে বসেন পড়ুয়ারা। এ দিন হাসপাতালের গেট বন্ধ রেখে পরিষেবা কার্যত অচল করে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান ছাত্র-ছাত্রীরা। বরানগর থানার পুলিশ খবর পেয়েও দেরিতে আসে বলে অভিযোগ তুলে পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা।
এ সবের মাঝেই বিস্ফোরক মৃত প্রিয়রঞ্জনের পরিবার। তাঁদের দাবি, কলেজে দীর্ঘদিন ধরেই ব়্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছিলেন ওই পড়ুয়া। পরিবারে তা জানিয়েছিলেন। এমনকী অ্যান্টি ব়্যাগিং সেলেও জানিয়েছিলেন। এরপরই মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ তুলে বরানগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের পরিবার। সেখানে কলেজের দুই সিনিয়রের নাম রয়েছে।
মৃত ছাত্রের পরিবারের দাবি, অভিযুক্তরা না কি দীর্ঘদিন ধরে প্রিয়রঞ্জনকে বিরক্ত করত। বিভিন্নরকম হুমকি দিত। পরিবারের দাবি, এদের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই মৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছেন প্রিয়রঞ্জন। বিষয়টা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন কলেক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ।