একদিকে রাজ্যের সেরা চিকিৎসকদের পরিষেবা, অন্যদিকে পাঁচতারা প্রাইভেট হাসপাতালের মতো স্বাচ্ছন্দ্য—তাও আবার একেবারে মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে! পুজোর আগেই উদ্বোধন হতে চলেছে এসএসকেএম হাসপাতালের চত্বরে নবনির্মিত ‘বাজেট হাসপাতাল’। এই দশতলা অত্যাধুনিক ভবনটি এক নজরে নজর কাড়বে তার অবস্থান এবং সুযোগ-সুবিধার জন্য।
নতুন এই হাসপাতালের প্রতিটি দিকেই চমক। মায়ের উড়ালপুল সংলগ্ন এই বহুতলের একাধিক কেবিন থেকে সরাসরি দেখা যাবে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সৌন্দর্য। শুধু দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যই নয়, হাসপাতালটি পাবে প্রথম শ্রেণির চিকিৎসা পরিষেবাও। থাকছে আধুনিক ওয়ার্ড, আইসিইউ, এইচডিইউ এবং রিকভারি বেড।
সূত্রের খবর, প্রথম ধাপে এই হাসপাতালের চারটি তলা পুজোর আগেই চালু করে দেওয়া হবে। এরপর ধাপে ধাপে খুলে যাবে বাকি অংশ। সর্বোচ্চ তলায় থাকছে ৮টি ভিআইপি সুইট, বাকি তলাগুলিতে ১০২টি কেবিন, ৫টি এইচডিইউ এবং ১৬টি আইসিইউ বেড সহ মোট ১৩১টি বেড।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই হাসপাতালটি তৈরি হয়েছে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (PPP) মডেলে। এর আগে পিজি-র উডবার্ন ওয়ার্ডেও এই মডেল প্রয়োগ করে রাজ্য সরকার উল্লেখযোগ্য সফলতা পেয়েছে। রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে থাকা ‘ভিআইপি-কেন্দ্রিক চিকিৎসা’-র ধারণা ভেঙে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই পরিষেবা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেন। সেই একই মডেল অনুসরণ করেই এই নতুন বাজেট হাসপাতালের ভাবনা।
২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। এখন তা প্রায় সম্পূর্ণ। নতুন হাসপাতালের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে প্রাচীন উডবার্ন ওয়ার্ডও। বর্তমানে সেখানে ৩৬টি কেবিন রয়েছে, যা বেড়ে দাঁড়াতে পারে প্রায় ৬০-এ। সব মিলিয়ে পিজি-তে কেবিনের সংখ্যা হতে চলেছে প্রায় ২০০।
যদিও এই নতুন বাজেট হাসপাতালের কেবিনের ভাড়া এখনো ঠিক হয়নি, তবে উডবার্নের ভাড়ার কাছাকাছিই হতে পারে বলে পিজি-র এক কর্তা জানিয়েছেন।
এই ‘বাজেট হাসপাতাল’ প্রকল্প শুধুমাত্র কলকাতায় সীমাবদ্ধ থাকবে না। রাজ্য সরকারের লক্ষ্য, জেলার বিভিন্ন জায়গায় জমি চিহ্নিত করে একই ধরনের হাসপাতাল তৈরি করা।
মধ্যবিত্তের নাগালে অত্যাধুনিক পরিষেবা—এই ভাবনা সফল হলে চিকিৎসাক্ষেত্রে রাজ্যে এক নতুন দিশা তৈরি হতে পারে বলেই মত স্বাস্থ্য মহলের।
পড়ুন: নির্মাণে স্বচ্ছতা আনতে কিউআর কোড, স্ক্যান করলেই মিলবে যাবতীয় তথ্য