জুনিয়র ডাক্তারদের দীর্ঘ অনশন এবং রাজ্য প্রশাসনের সাথে চলমান অচলাবস্থা কাটাতে মধ্যস্থতা করা ইচ্ছা প্রকাশ করলেন নাগরিক সমাজের একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি। রবিবার সকালে অভিনেত্রী অপর্ণা সেন, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, রত্নাবলী রায় এবং আরও কয়েকজন বিদ্বজ্জন একটি ইমেল প্রেরণ করেন, যেখানে তারা রাজ্য প্রশাসন ও আন্দোলনরত চিকিৎসকদের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন।
ইমেলটি প্রেরিত হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং পশ্চিমবঙ্গ জুনিয়র ডক্টরস’ ফ্রন্টের কাছে। ইমেলে চিকিৎসকদের আন্দোলনের ন্যায্যতা ও যৌক্তিকতা স্বীকার করা হলেও অনশনরত চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ইমেলে লেখা হয়েছে, “নাগরিক সমাজের সক্রিয়তায় আস্থা রেখে অনশনরত চিকিৎসকদের বিনীত অনুরোধ, আপনারা অনশন প্রত্যাহার করুন।”
রাজ্য প্রশাসনের উদ্দেশ্যে ইমেলে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘‘অনশনরত চিকিৎসকদের বক্তব্য শুনে তাঁদের দাবির ন্যায্য সমাধানে সততার সাথে উদ্যোগী হোন।’’ ইমেলের শেষে, ‘সংলাপের সেতু’ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়।
এই ইমেলে সই করেছেন মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র, প্রাক্তন সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার, মনোসমাজকর্মী মোহিত রণদীপ, চিত্রপরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, ঋদ্ধি সেন এবং নাট্য ব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন প্রমুখ।
এর আগেও, গত বুধবার সন্ধ্যায় অপর্ণা সেন ধর্মতলায় অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের মঞ্চে গিয়ে বক্তৃতা করেন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনশনকারীদের মঞ্চে আসার আহ্বান জানান। এবার, ইমেলের মাধ্যমে তাঁরা আবারও এক যৌক্তিক সংলাপের প্রস্তাব দিয়ে উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসতে আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের বেশ কয়েকটি দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হলেও, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ও দাবি বাস্তবায়নের প্রশ্নে অনশন চলছেই। চিকিৎসকদের ১০ দফা দাবির অন্যতম হল হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। সম্প্রতি এসএসকেএম হাসপাতালে দুষ্কৃতী হামলার ঘটনা এবং আরজি কর হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে চিকিৎসকদের ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়েছে।
বিদ্বজ্জনদের এই প্রস্তাব উভয় পক্ষের কাছে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে, এবং এখন সকলের নজর সরকারের প্রতিক্রিয়া এবং চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের দিকে।