মেদিনীপুর: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্যালাইনের বিভ্রাটকে কেন্দ্র করে উত্তাল পরিস্থিতি। শুক্রবার সকালে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। আরও চারজন প্রসূতি আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। পরিবারের অভিযোগ, সন্তানের জন্মের পরই প্রসূতিদের শারীরিক অবস্থার অবনতি শুরু হয়। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত, শারীরিক দুর্বলতা—সব কিছুর জন্যই স্যালাইনের মান খারাপ হওয়াকেই দায়ী করছেন আত্মীয়রা।
কেউ দাবি করেছেন, স্যালাইনের মধ্যে ছত্রাক ছিল। আবার কারও বক্তব্য, মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার থেকেই সমস্যার কথা সামনে আসে। আত্মীয়দের অভিযোগ, সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর প্রথমে কিছু জানানো হয়নি। পরে জানা যায়, প্রসূতিদের রক্তক্ষরণ থামছে না। এছাড়া সরকারি হাসপাতাল হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন অজুহাতে টাকা নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
এক আত্মীয় দাবি করেন, “অপারেশন করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেখানে কোনও সিনিয়র ডাক্তার ছিলেন না। এটি অবহেলার একটি উদাহরণ।”
হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। যদিও রিপোর্ট আসার আগে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, স্যালাইনের মান খারাপ থাকার কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।
এর আগে কলকাতার এসএসকেএম ও এনআরএস হাসপাতালেও স্যালাইনের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কর্নাটকেও সম্প্রতি স্যালাইনের কারণে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় কটাক্ষ করে বলেছেন, “একটি মেডিক্যাল কলেজেই যদি স্যালাইনের সমস্যা থাকে, তাহলে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কী অবস্থা?” তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন থেকে সরকার কোনও শিক্ষা নেয়নি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কাজলকৃষ্ণ বণিক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “ওষুধ ও স্যালাইনের মান নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠছে। নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। সজাগ না হলে এমন ঘটনা বাড়বে।”