পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত এক প্রৌঢ়কে গণপিটুনিতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম সুখচাঁদ মাইতি। তাঁকে গ্রামের মহিলারা বাড়ি থেকে টেনে বের করে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করেন। অভিযোগ, সুখচাঁদ তাঁর প্রতিবেশিনীকে ধর্ষণ করে কীটনাশক খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। এই ঘটনার পর পুরো গ্রামে উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং মহিলার মৃত্যুসংবাদ পৌঁছানোর পর ক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্তকে পিটিয়ে হত্যা করেন।
গত শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, পটাশপুরে সুখচাঁদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি তাঁর প্রতিবেশিনীকে ধর্ষণ করেন এবং পরে তাঁকে কীটনাশক খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। গুরুতর অবস্থায় মহিলাকে তমলুকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিন দিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর রবিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
মহিলার মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই উত্তেজিত জনতা সুখচাঁদের বাড়ির সামনে ভিড় জমায়। স্থানীয় মহিলারা তাঁকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করেন। প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে এই হামলা। কেউ কেউ মোবাইলে এই ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করেন এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে (ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা হয়নি)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সুখচাঁদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই নানা রকম অপকর্মের অভিযোগ ছিল, তবে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার ঘটনা গোটা গ্রামকে ক্ষিপ্ত করে তোলে। এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘এ ধরনের অপরাধ সহ্য করা যায় না। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু গ্রামবাসীরা রাগে এতটাই ফেটে পড়েছিলেন যে তাঁরা অভিযুক্তকে ছেড়ে দিতে চাননি।’’
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গণপিটুনির মতো ঘটনা আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার উদাহরণ এবং এতে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে মহিলার মৃত্যুর ঘটনার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশ সম্পূর্ণ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছে।
এই ঘটনার পর পটাশপুর এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ বিরাজ করছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তের মৃত্যুর ঘটনা এবং মহিলার মৃত্যুর পেছনে থাকা কারণগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই পুরো ঘটনার একটি পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যাবে। তবে, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ সত্য বলে মনে করা হচ্ছে এবং গণপিটুনির ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া চলছে।
সব খবর পড়ুন এখানে