পূর্ব বর্ধমান: যে আশংকাটা করা হচ্ছিল, সেটাই হল। অসময়ের বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পশ্চিমবঙ্গের শস্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান এবং তার সন্নিহিত জেলাগুলি। এর ফলে মাঠেই নষ্ট হয়ে গেল পাকা ধান। চার মাসের প্রবল পরিশ্রমের শেষে এখন মাথায় হাত অধিকাংশ কৃষকের।
অথচ এই রকম পরিস্থিতি যে হতে পারে, তার আগাম পূর্বাভাস দিয়েছিল খবরঅনলাইন। গত ২৭ নভেম্বর আমরা প্রথমবার জানাই যে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গে। তখনও অন্য সংবাদমাধ্যমে সে ভাবে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়নি। পাকা ধান যাতে দ্রুত কেটে নেওয়া হয় এবং সেই পাকা ধানকে যাতে কোনো ভাবেই খোলা মাঠে না রাখা হয় সেটাই ছিল এই পূর্বাভাস দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও রাজ্যের অনেক সংবাদমাধ্যমেই আগাম সে খবর দেওয়া হয়নি। সেখানে বেশি করে গুরুত্ব পেয়েছে করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতি ‘ওমিক্রন।’ যে প্রজাতি নিয়ে এখন গবেষণাই শেষ হল না, প্রাথমিক গবেষণায় পাওয়া তথ্যে যেখানে বোঝা যাচ্ছে যে এই ‘ওমিক্রন’-এর মারণ ক্ষমতা তো দূর, কাউকে গুরুত্ব অসুস্থ করে তোলারও ক্ষমতা নেই, সেখানে তাকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন দুর্যোগের খবর সে ভাবে করা হয়নি।

পরিণাম যা হওয়ার তাই হল। শনিবার সকাল থেকেই আবহাওয়া ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল দক্ষিণবঙ্গে। কিন্তু রবিবার রাতের প্রবল বৃষ্টি কৃষকদের মাথায় হাত তুলে দিল। শনিবারই আমার খবর করেছিলাম, কী ভাবে এখনও মাঠেই রেখে দেওয়া হয়েছে পাকা ধানকে। সেই পাকা ধানের অর্ধেকও যদি এই বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যায় তা হলে কৃষকদের দুর্দশার শেষ থাকবে না।
গত ২৪ ঘণ্টায় সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুর। বর্ধমান শহরে বৃষ্টি হয়েছে ১২৮ মিলিমিটার, যা দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে সর্বোচ্চ। এ ছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হাওড়া এবং হুগলিতেও ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে বিঘার পর বিঘা জমিতে নষ্ট হয়েছে পাকা ধান। তবে শুধু পাকা ধানই হয়, এই বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়েছে আলু এবং সবজি চাষেরও।
আরও পড়তে পারেন:
দুশোর ঘরে নামল দৈনিক মৃত্যু, আরও কমল সক্রিয় রোগী
কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জায়গায় ডিসেম্বরের নিরিখে বৃষ্টির পরিমাণে রেকর্ড
নাগাল্যান্ডের ঘটনায় মৃত বেড়ে ১৬, সেনার বিরুদ্ধে ‘খুনের উদ্দেশ্য’-এর ধারায় এফআইআর করল পুলিশ