ফ্ল্যাট কিনতে গেলে সতর্ক থাকুন! রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি (RERA) রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কোনও আবাসন প্রকল্পে আর মিলবে না গৃহঋণ। ব্যাঙ্কগুলির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেসব আবাসন প্রকল্প রেরার আওতায় নথিভুক্ত নয়, সেখানে ক্রেতারা গৃহঋণের সুবিধা পাবেন না। একইসঙ্গে, ব্যাঙ্কগুলিও রেজিস্ট্রেশনহীন প্রোমোটারদের ঋণ দেবে না।
রাজ্যের স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটি (SLBC)-র শেষ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। রেরার চেয়ারম্যান জয়ন্তকুমার বসুর প্রস্তাবে ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক সর্বসম্মতভাবে মত দিয়েছে। ফলে, এখন থেকে প্রোমোটাররা আবাসন প্রকল্পে বিনিয়োগ করলেই রেজিস্ট্রেশন করাতে বাধ্য হবেন।
প্রতারণ রুখতে রেরা বাধ্যতামূলক
বিগত বছরগুলিতে বহু ফ্ল্যাট ক্রেতা প্রতারণার শিকার হয়েছেন। প্রোমোটারদের একাংশ প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে বিলম্বিত পজেশন, নিম্নমানের নির্মাণ, বেআইনি ফ্ল্যাট বিক্রি কিংবা কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই টাকা হাতিয়ে নিতেন। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকার রেরা আইন চালু করলেও, ছোট আবাসন প্রকল্পগুলি আইনের ফাঁক গলে ক্রেতাদের প্রতারিত করে যাচ্ছিল।
কোন প্রকল্পে রেরা বাধ্যতামূলক?
বর্তমানে ২০০ বর্গমিটারের বেশি এলাকা এবং ৬টির বেশি ফ্ল্যাট থাকলে রেরা রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। আবাসন দপ্তরের মতে, প্রায় সব আবাসন প্রকল্পই এই শর্ত পূরণ করে, তাই রেরার আওতায় আসতে হবে। রেজিস্ট্রেশন হলে, আবাসন নির্মাণে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে এবং প্রতারণা ধরা পড়লে শাস্তি হবে।
পশ্চিমবঙ্গের অগ্রগতি
২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে রেরা রেজিস্ট্রেশন কিছু সময়ের জন্য বন্ধ ছিল, তবুও বর্তমানে রাজ্যে ৩,৮০৩টি প্রকল্প রেজিস্ট্রেশন পেয়েছে, যা বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, কেরলের তুলনায় অনেক বেশি।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
আবাসন দপ্তরের মতে, রেরা ছাড়া ক্ষুদ্র আবাসন প্রকল্পে ক্রেতারা সবচেয়ে বেশি প্রতারিত হচ্ছেন। তাই গৃহঋণ সংক্রান্ত কড়াকড়ির মাধ্যমে রেরার বাধ্যবাধকতা বাড়ানো হচ্ছে।
নতুন নিয়মের প্রভাব
- রেরা অনুমোদিত ফ্ল্যাট কিনতে হবে, নচেৎ গৃহঋণ মিলবে না।
- রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কোনও প্রোমোটার ঋণ পাবেন না।
- আবাসন নির্মাণে স্বচ্ছতা ও ক্রেতাদের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।