মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। অভিযোগ ওঠার পরই রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইনের ব্যবহার আপাতত নিষিদ্ধ করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর। সোমবার স্বাস্থ্যভবনে দফায় দফায় বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান স্বাস্থ্যশিক্ষা দপ্তরের স্পেশাল সেক্রেটারি ডা. অনিরুদ্ধ নিয়োগী।
স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতির মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সেদিন ব্যবহার করা ওষুধ ও স্যালাইনের গুণমান খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট
বিশেষজ্ঞ কমিটির দাবি, শুধুমাত্র রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন থেকে বিষক্রিয়া ছড়ানোর সম্ভাবনা খুবই কম। স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের কাছে জমা পড়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘হিউম্যান এরর’ এবং অন্যান্য ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রসূতিদের অসুস্থতার কারণ হতে পারে।
শুক্রবার রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ১,২৫০ বোতল রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন ব্যবহৃত হয়। তবে বিষক্রিয়ার অভিযোগ আসে মাত্র চারজনের ক্ষেত্রে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সেদিন সিনিয়র চিকিৎসকরা দায়িত্বে না থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সৌমিত্র ঘোষ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থার রিঙ্গার ল্যাকটেট থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। একই ব্যাচের স্যালাইন অন্য রোগীদেরও দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তাদের কোনও সমস্যা হয়নি। বিষয়টি আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
আইনগত পদক্ষেপ ও অতীত ঘটনা
২০২৪ সালের মার্চ মাসে কর্ণাটকে সংশ্লিষ্ট সংস্থার স্যালাইন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও রাজ্যের হাসপাতালে এই স্যালাইন ব্যবহৃত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। ইতিমধ্যে কলকাতা হাই কোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
সরকারের পদক্ষেপ
মেদিনীপুর থেকে গ্রিন করিডরের মাধ্যমে আরও তিনজন প্রসূতিকে এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। আপাতত তাদের অবস্থা স্থিতিশীল। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে, সমস্ত সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজকে রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইন ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।