রাজ্য
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করতে সিপিএমের লাইনেই খেলছেন শুভেন্দু অধিকারী
মরিয়া শুভেন্দুর ঝোলা থেকে আর কী কী বেরোয়, সেটাই দেখার!

জয়ন্ত মণ্ডল
প্রকাশ্য সভায় কখনো বলছেন, “সিপিএম কোনো দিনও তৃণমূলের সভায় ঢিল ছোড়েনি”, আবার কখনো নন্দীগ্রাম গণহত্যা সমর্থন করা না করে বলছেন, “বামেদের ভূমি সংস্কারকে খারাপ বলা যাবে না। অথচ, বামফ্রন্ট শাসিত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে রাজনীতিতে উত্থান তাঁর। এখন বামেদের প্রতি সদয় হয়ে কতকটা বামেদের ঢঙেই তৃণমূলকে আক্রমণ করছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন?
১৯ ডিসেম্বর দলবদলের সভা থেকেই নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) নিশানা করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। রীতিমতো হুঙ্কার দিয়েছিলেন, ‘‘ভাইপো হঠাও’’। হালকা চালে হলেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee)। তবে সেটা ছিল নিতান্তই সিপিএমের বেঁধে দেওয়া পুরোনো তত্ত্ব। তার পর থেকে মমতাকে নিশানা করতে সেই একই কথার পুনরাবৃত্তি করছেন শুভেন্দু। কেন?
মমতা এবং এনডিএ (অথবা বিজেপির) পুরোনো সম্পর্কের রেশ ধরেই তৃণমূল নেত্রীকে লাগাতার খোঁচা দিয়ে চলেছেন শুভেন্দু। বিগত কয়েক বছর ধরে এই একই ধরনের পন্থা অবলম্বন করে মমতাকে তুলোধনা করছেন বামেরা। মমতাই যে এ রাজ্যে বিজেপির জন্য জায়গা করে দিয়েছেন, তেমন অভিযোগ প্রায়শই শোনা যায় সিপিএম নেতৃত্বের মুখে। সেই লাইনেই হাঁটতে দেখা যাচ্ছে শুভেন্দুকে। তবে উদ্দেশ্য অন্য।
দলবদলের সভায় শুভেন্দুর মন্তব্য

১৯ ডিসেম্বর, ২০২০, মেদিনীপুর: ‘বিশ্বাসঘাতক’ কটাক্ষের জবাব দিতে শুভেন্দু বলেন, “আমাকে বিশ্বাসঘাতক বলছে। কারা বলছে? ১৯৯৮ সালে যখন তৃণমূল প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন এনডিএ-র শরিক ছিল তৃণমূল। ১৯৯৯ সালে আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। মমতা বলেছিলেন, ‘দল গঠনের পর কাঁথিতে লড়ে দ্বিতীয় হয়েছিলাম’। অর্থাৎ, অধিকারীদের বাদ দিয়ে আপনি দ্বিতীয় হয়েছিলেন। হ্যাঁ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বারও প্রথম হতে পারবেন না, দ্বিতীয় হবেন। বিজেপি প্রথম হবে।”
দলবদলের পরের কয়েকটি সভায়

২২ ডিসেম্বর, ২০২০, পূর্ব বর্ধমান: তৃণমূলের বাড়বাড়ন্তের প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “বিজেপির আশ্রয়’ না থাকলে ১৯৯৮ সালে তৈরি মমতার তৃণমূল ২০০১ সালের আগে উঠে যেত। আমি জানি, বিজেপি নেতারা সে দিন বলেছিলেন, ‘পারলে পদ্মফুলে দাও, না পারলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দাও। কারণ এই অত্যাচারী কমিউনিস্ট রাজ খতম হওয়া দরকার আছে’। তাই পরোক্ষ ভাবে সেই নির্বাচনে বিজেপিরও ভূমিকা ছিল। পরিবর্তন হয়েছিল।’’
তিনি আরও বলেন, “২০০৪ সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল এনডিএর অংশীদার হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল এবং আমি এক হাতে তৃণমূলের পতাকা এবং অন্য হাতে বিজেপির পতাকা ধরেছিলাম।” প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ভোটে তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হন শুভেন্দু। সিপিএম প্রার্থী লক্ষ্মণ শেঠের কাছে পরাজিত হন সে বার।
৮ জানুয়ারি, ২০২১, পূর্ব মেদিনীপুর: নন্দীগ্রাম স্টেট ব্যাঙ্কের পাশের মাঠে জনসভা করেছিল বিজেপি। কয়েক জনের বিরুদ্ধে ঢিল ছুড়ে এই সভা ভণ্ডুল করার চেষ্টার অভিযোগ করেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু।
সঙ্গে তিনি বলেন, “বাইরে থেকে ঢিল ছুড়েছে। দু’-এক জন এই কাজ করেছে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে। তবে আমরা তাদের চক্রান্ত রুখে দিয়েছি। আমি সিপিএমের আমলেও বিরোধী রাজনীতি করেছি। কিন্তু সিপিএমকে কখনোই তৃণমূলের জনসভায় ঢিল ছুড়তে দেখিনি”।
১৬ জানুয়ারি, ২০২১, পশ্চিম মেদিনীপুর: চন্দ্রকোনায় তৃণমূলকে আক্রমণ আক্রমণ করতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, দেশে যদি কেউ সুবিধাবাদী হয়ে থাকে তবে তিনি তৃণমূল নেত্রী। অটলবিহারী বাজপেয়ীর হাত ধরে তৃণমূল জন্ম নিয়েছিল।

আর রাজ্যের শিল্প নিয়ে তাঁর উক্তি, “রাজ্যে গত ৯ বছরে একটাও শিল্প হয়নি। কিন্তু বামেদের ভূমি সংস্কারকে খারাপ বলা যাবে না। তবে নেতাই, নন্দীগ্রামের গণহত্যাকে সমর্থন করা যায় না। বাম আমলেও এসএসসি হত, গত ৯ বছরে একটাও এসএসসি হয়নি”।
উদ্দেশ্য ভিন্ন
গত লোকসভা ভোটের আগে মেদিনীপুরে থেকেই মমতা-বিজেপি-আরএসএস সম্পর্ক নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘বিজেপি ও আরএসএস-এর দালাল’ বলে আক্রমণ করেন তিনি। রাজ্যের বামপন্থীরা এমনটা অভিযোগ আকছার করে থাকেন প্রায় দেড় দশক ধরে।
কিন্তু সেই পুরোনো অভিযোগ নতুন বোতলে ভরে ফের এক বার বাজারে ছাড়ছেন শুভেন্দু। এর নেপথ্যে কারণ থাকতে পারে একাধিক। ক’ দিন আগের ‘শ্রদ্ধেয় দিদি’ এখন তাঁর মূল প্রতিপক্ষ। তাঁকে রাজনৈতিক ভাবে আক্রমণ করতে যা যা করা দরকার, শুভেন্দু সবই করতে পারেন। রাজ্যের উন্নয়ন, আইন-শৃঙ্খলা, বেকার সমস্যা (বিজেপি এবং রাজ্যপাল যেগুলো করে থাকেন) নিয়ে সরব হবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সিপিএমের লাইনে মমতার সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক খুঁচিয়ে তোলার অন্যতম কারণগুলি কতকটা এ রকম হলেও হতে পারে-
১) তৃণমূল জন্মলগ্ন থেকে বিজেপির পরিচর্যা পেয়েছিল, সেই বিজেপিতেই যোগ দিয়ে কৃতজ্ঞতা স্বীকারের পাশাপাশি হয়তো মূলস্রোতে ফিরলেন শুভেন্দু।
২) এক সময়ে বিজেপির সহায়তা পেয়েও এখন তাদের বিরোধিতা করে তৃণমূল ‘বেইমানি’ করছে, সেটাই হয়তো রাজ্যের মানুষের কাছে তুলে ধরতে চাইছেন শুভেন্দু।
৩) তৃণমূল এক সময়ে কেন্দ্রে বিজেপির জোটসঙ্গী ছিল, তৃণমূল ছেড়ে সেই বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মধ্যে কোনো নীতিবিরুদ্ধ পদক্ষেপ নেই।
অথবা, ৪) শুভেন্দু যে দলেই থাকুন না, তাঁর অনুগামীরাও যাতে সে দিকে ঢলে পড়েন, সে দিকে তাকিয়েই তিনি কি আকারে-ইঙ্গিতে বোঝাতে চাইছেন – যাহা তৃণমূল, তাহাই বিজেপি?
এর আগে অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেতাদের একাংশকে আক্রমণ করলেও দলনেত্রীকে নিয়ে মুখ খোলেননি শুভেন্দু। দল বদলের পর আর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। পূর্বস্থলীর সভা থেকেই তিনি বলেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেস কোম্পানিকে বলব, তার নেত্রীকে বলব, নিজের দমে যদি মুখ্যমন্ত্রী হতেন তা হলে ২০০১ সালেই হয়ে যেতেন। নন্দীগ্রামের ওই শবদেহগুলোর ওপরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন।” এ ভাবেই ঝুলি থেকে বেড়াল বেরোচ্ছে। সামনে বিধানসভা ভোট। মরিয়া শুভেন্দুর ঝোলা থেকে আর কী কী বেরোয়, সেটাই দেখার!
*প্রতিবেদনটি আপডেট করে পুনঃপ্রকাশিত
রাজ্য
ভোটের আগে ভ্যাকসিন নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে পাল্টা চাপ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
মমতার বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন রাজনীতির অভিযোগ বিজেপির!

খবর অনলাইন ডেস্ক: বিহারে ভোট বৈতরণী পার হতে ভ্যাকসিনে ভরসা করেছিল বিজেপি। এ বার সেই একই চালে বাজিমাত করার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে চিঠিতে মমতা লিখেছেন, “প্রত্যেককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেবে রাজ্য সরকার”। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা কমপক্ষে ১০ কোটি। ফলে প্রত্যককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে খরচ হতে পারে আনুমানিক ৫,০০০ কোটি টাকা।
বিহার ভোটে ভ্যাকসিন
গত বছরের অক্টোবরে বিহার বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) সরকার ফিরলে বিহারবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। যদিও তখনও পর্যন্ত ভারতে কোনো ভ্যাকসিনই ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পায়নি। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বিহার ভোটে বিজেপির ইস্তেহার প্রকাশ করে বিহারবাসীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিনের প্রতিশ্রুতি দেন। যা নিয়ে দেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitharaman) বলেন, “করোনাভাইরাসের টিকার (Coronavirus vaccine) গণহারে উৎপাদন শুরু হলেই বিহারের প্রত্যেককে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হবে। এটাই আমাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে প্রথম প্রতিশ্রুতি”।
বিহারে প্রথম দফায় ভোটগ্রহণ হয় ২৮ অক্টোবর। নির্বাচনী প্রচারের চূড়ান্ত লগ্নে বিজেপির বিনামূল্যের ভ্যাকসিন নিয়ে যে কারণে তুমুল তরজা বেঁধে যায়। বিহার ছেড়ে সেই বিতর্কে পৌঁছে যায় দেশের অন্য়ান্য রাজ্যেও।
মমতা বলছেন কিনে নেবেন!
তবে এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। একাধিক ভ্যাকসিন জরুরি অনুমোদন পেয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মী, প্রথমসারির কর্মীদের জন্য টিকাকরণ শুরু হয়েছে গত ১৬ জানুয়ারি। বুধবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভাড়েকর ঘোষণা করেছেন, আগামী ১ মার্চ থেকে সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে প্রবীণ নাগরিকদের টিকাকরণ শুরু হবে। কিন্তু মমতা দাবি তুলেছেন সরকারি এবং আধা-সরকারি কর্মচারীদের টিকাকরণের। কারণ, সামনে ভোট।
ভোটের সময় সাধারণ মানুষকে বুথে যেতে হবে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) উদ্দেশে লেখা চিঠিতে মমতা এ দিন বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার পর্যাপ্ত সংখ্যক ভ্যাকসিন কিনে নিতে সক্ষম। প্রধানমন্ত্রী যেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। স্বীকৃত সংস্থার কাছ থেকে ভ্যাকসিন কিনে প্রত্যেককে তা বিনামূল্যে দিতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার।
ভ্যাকসিন রাজনীতির অভিযোগ বিজেপির
এখন অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলছে বিজেপি। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই তিন কোটি ভ্যাকসিন বরাদ্দ করেছে। স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রথমসারির কর্মীদের তা দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ফের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি বিধানসভা ভোটের কথা ভেবেই।

ভোটারদের কেন্দ্রের উদ্যোগকে লঘু করে দেখানোর জন্যই মমতার এমন প্রতিশ্রুতি বলে দাবি করছে বিজেপি। বিহার ভোটে অবশ্য নির্বাচন কমিশন রায় দিয়েছিল, বিজেপির বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রতিশ্রুতি নির্বাচনের ‘আদর্শ আচরণ বিধি’ লঙ্ঘন করেনি।
এই সম্পর্কিত আরও খবর পড়তে পারেন নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে-
১ মার্চ থেকে প্রবীণদের জন্য শুরু হচ্ছে বিনামূল্যে করোনা টিকাকরণ
রাজ্য
নতুন সংক্রমণ দুশো পার করলেও রাজ্যে সংক্রমণের হার ফের ১ শতাংশের নীচে
স্বস্তি-অস্বস্তি মিলিয়ে আজকের কোভিড পরিসংখ্যান।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: ১১ ফেব্রুয়ারির পর রাজ্যে নতুন সংক্রমণ ফের একবার দু’শোর ওপরে উঠল। তবে সংক্রমণ বাড়ার অন্যতম কারণ হল টেস্টের সংখ্যায় বেশ বড়ো রকমের বৃদ্ধি আসা। এর ফলে মঙ্গলবারের থেকে সামান্য কমল সংক্রমণের হার।
রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির কোনো অবনতি না হলেও সতর্কতায় ঢিলে দিলে যে কোনো ভাবেই চলবে না, সেটা নিশ্চিত ভাবেই বোঝা যাচ্ছে।
রাজ্যের কোভিড-তথ্য
গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে কোভিডে (Covid 19) আক্রান্ত হয়েছেন ২০২ জন। এর ফলে রাজ্যে মোট কোভিডরোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫ লক্ষ ৭৪ হাজার ৩০১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২২১ জন। এর ফলে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট কোভিডজয়ীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫ লক্ষ ৬০ হাজার ৬৬৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। এর ফলে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১০ হাজার ২৫৬ জন।
রাজ্যে বর্তমানে সক্রিয় রোগী রয়েছেন ৩ হাজার ৩৭৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ২২ জন সক্রিয় রোগী কমেছে রাজ্যে। রাজ্যে সুস্থতার হার বর্তমানে ৯৭.৬৩ শতাংশ।
দৈনিক সংক্রমণের হার কমল
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২০ হাজার ২১২টি। ফলে এ দিন সংক্রমণের হার ছিল ০.৯৯ শতাংশ। মঙ্গলবার সংক্রমণের হারটি ১ শতাংশের ওপর উঠে গিয়েছিল। বুধবারের পরিসংখ্যানে যে সামান্য স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে তা বলাই বাহুল্য।
তবে রাজ্যের সামগ্রিক সংক্রমণের হারও আরও কিছুটা কমেছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৮৪ লক্ষ ৮৩ হাজার ২১টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। সংক্রমণের হার রয়েছে ৬.৭৭ শতাংশ।
হাসপাতাল শয্যা-তথ্য
করোনার সংক্রমণ মোটের ওপর কমে আসায় রাজ্যে কোভিড চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত শয্যার সংখ্যা আরও কিছুটা কমানো হয়েছে। সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে রাজ্যে বর্তমানে ৬০ হাসপাতালের ৬,৭৩৬টি শয্যা কোভিডের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত রয়েছে। এর মধ্যে ভরতি আছে মাত্র ৩.১৫ শতাংশ বেড।
কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগণার পরিস্থিতি
মঙ্গলবারের তুলনায় কলকাতায় নতুন কোভিডরোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে এর মধ্যে টেস্টের সংখ্যা বাড়ানোটাও একটা কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় ৭৫ এবং উত্তর ২৪ পরগণায় ৪৩ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। দুই জেলায় সুস্থ হয়েছেন যথাক্রমে ৫৫ এবং ৪৭ জন। দুই জেলাতেই একজন করে কোভিডরোগীর মৃত্যু হয়েছে।
কলকাতায় এখন মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ২৯ হাজার ১৩০, উত্তর ২৪ পরগণায় মোট আক্রান্ত ১ লক্ষ ২২ হাজার ৯৪৯। কলকাতায় বর্তমানে সক্রিয় রোগী রয়েছেন ১,১২৭ জন এবং উত্তর ২৪ পরগণায় ৯৩৮। দুই জেলায় মৃত্যু হয়েছে যথাক্রমে ৩,০৯৭ এবং ২,৫০৪ জনের।
তিন জেলা ছিল সংক্রমণ-শূন্য
একটু স্বস্তি এসেছে। বুধবার রাজ্যের তিন জেলা ছিল নতুন সংক্রমণহীন। সোমবার এবং মঙ্গলবার এই সংখ্যাটা ছিল ২। এই তিন জেলা হল আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং ঝাড়গ্রাম।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের ১৬ জেলায় সংক্রমিতের সংখ্যা এক অঙ্কে ছিল। এই জেলাগুলি হল দক্ষিণ দিনাজপুর (১), মালদা (১), পূর্ব বর্ধমান (১), দার্জিলিং (২), মুর্শিদাবাদ (২), বীরভূম (২), পশ্চিম মেদিনীপুর (২), পূর্ব মেদিনীপুর (২), কালিম্পং (৩), উত্তর দিনাজপুর (৩), পশ্চিম বর্ধমান (৪), জলপাইগুড়ি (৫), বাঁকুড়া (৫), নদিয়া (৬), পুরুলিয়া (৬) এবং হুগলি (৮)।
এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় দুই জেলায় সংক্রমণ ছিল দুই অঙ্কে। এই জেলাগুলি হল হাওড়া (২০) এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণা (১১)।
খবরঅনলাইনে আরও পড়তে পারেন
রাজ্য
প্রত্যেককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে নিজেই কিনে নেবে রাজ্য, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

খবর অনলাইন ডেস্ক: প্রত্যেককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে বিশেষ উদ্যোগ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বীকৃত সংস্থার কাছ থেকে ভ্যাকসিন কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করে তিনি বুধবার চিঠি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।
চিঠির শুরুতে মমতা লিখেছেন, “আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য ইস্যুতে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি”।
তিনি লিখেছেন, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, পুরকর্মী, রাজস্বকর্মী-সহ অন্যান্য প্রথম সারির কর্মীদের জন্য দ্রুত টিকাকরণ সম্পন্ন করেছে রাজ্য সরকার। সামনে রাজ্যের বিধানসভা ভোট। আমরা চাই জরুরি ভিত্তিতে সমস্ত সরকারি, আধা-সরকারি কর্মচারীদের টিকা দিতে।
একই সঙ্গে তিনি লিখেছেন, দু:খের বিষয় এটাই যে মানুষকে ভোট দিতে বুথে যেতে হবে। কিন্তু তাঁদের জন্য কোনো টিকার ব্যবস্থা নেই। আমরা মনে করি, তাঁদেরও দ্রুত টিকা দেওয়ার দরকার। নির্বাচনের সময় জনস্বাস্থ্য নিয়ে এই উদ্বেগ দূরীভূত হওয়া উচিত।

মুখ্যমন্ত্রী এই চিঠিতে স্পষ্টতই লিখেছেন, “এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বৃহত্তর অংশের মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ভ্যাকসিন নিজের সংগ্রহ করে নেওয়া হবে। এ ব্যাপারটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমি তুলে ধরুন। স্বীকৃত সংস্থার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভ্যাকসিন কিনে নিতে সক্ষম রাজ্য সরকার। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রত্যেককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে চায়”।
আরও পড়তে পারেন: ১ মার্চ থেকে প্রবীণদের জন্য শুরু হচ্ছে বিনামূল্যে করোনা টিকাকরণ
-
প্রযুক্তি6 hours ago
রান্নার গ্যাসের ভরতুকির টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে কি না, কী ভাবে দেখবেন
-
প্রযুক্তি2 days ago
এ ভাবেই তৈরি করুন সদ্যোজাত শিশুর আধার কার্ড, জানুন কী কী লাগবে
-
বিনোদন2 days ago
পর্ন ‘লাইভ স্ট্রিমিং’ থেকে আয় কোটি টাকা, অ্যাপের মাধ্যমে চিত্রনাট্য-সহ পরিবেশিত হচ্ছে অশ্লীলতা
-
রাজ্য2 days ago
দেড় ঘণ্টা পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ছাড়লেন সিবিআই আধিকারিকরা