শিলিগুড়ি: পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং ভুটানের মিলনস্থলে অবস্থিত নেওড়াভ্যালি ন্যাশনাল পার্ককে আরও আকর্ষণী করতে উদ্যোগ নিচ্ছে বন দফতর। পূর্ব হিমালয়ের শেষ অবশিষ্ট বাস্তুতন্ত্রগুলির মধ্যে অন্যতম এই নেওড়া উপত্যকায় বন দফতর, লাভায় পৃথক অ্যাসিস্ট্যান্ট ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেনের অফিস চালু করতে চলেছে।
নেওড়াভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক একটি বিশাল বনাঞ্চল যা ৩০ মিটার থেকে ৩২০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত প্রসারিত। র্যাচেল ডান্ডা নেওড়া উপত্যকার সর্বোচ্চ বিন্দু যা ১০,৬০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। এই পার্কে নাতিশীতোষ্ণ ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় গাছপালা এবং সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য রয়েছে। এখানে কিছু বিরল স্থানীয় প্রজাতির উদ্ভিদ, প্রাণী এবং পাখি দেখা যায়।
প্রতি বছর মার্চ এবং এপ্রিল মাসে নেওড়াভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে বিভিন্ন প্রকারের ফুল সম্পূর্ণরূপে প্রস্ফুটিত হয়। পাখি দেখার জন্য, ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস হলো সেরা সময়। তবে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে, জাতীয় উদ্যানটি বন্ধ থাকে।
নেওড়াভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং বাঘের আবাসস্থল দেখাশোনা সহজতর করতে বন দফতর লাভায় নতুন অফিস চালু করতে চলেছে। এই অফিসে একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন, যিনি বনাধিকারিক পদমর্যাদার হবেন, সহ রেঞ্জ অফিসার, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর এবং আরও অন্যান্য কর্মী থাকবেন।
নেওড়াভ্যালির উচ্চতায় বনকর্মীদের কাজ করতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকার কারণে, খুব প্রয়োজনে বনকর্মীরা ট্রেকিং করে লাভার অফিসে আসতে পারবেন এবং সেখান থেকে যে কোনও প্রয়োজনীয় নির্দেশ পেতে পারবেন। গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের অধীনে থাকা লাভার এই অফিসের মাধ্যমে নেওড়াভ্যালির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং বাঘের আবাসস্থল দেখাশোনা আরও কার্যকর হবে।
নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানে খয়ের, শিশু, শিরীষ প্রভৃতি বৃক্ষ দেখা যায়। এছাড়া, এখানে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, চিতাবাঘ, বনবিড়াল, কালো ভল্লুক, কাঠবিড়ালি, লাল পাণ্ডা, দেশি বনরুই, সম্বর হরিণ, গোরাল, বন ছাগল এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখা যায়।
নেওড়াভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের এই নতুন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে এলাকার জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।