শ্রয়ণ সেন
ধারাটা শুরু হয়েছিল ২০১৮ থেকে। তার পর, প্রত্যেক বছরই মে মাসে ঘূর্ণিঝড় দেখেছে বঙ্গোপসাগর। সেই ধারায় ছেদ পড়তে চলেছে, এই বছর। অর্থাৎ, সাত বছর পর ঘূর্ণিঝড়হীন মে মাস দেখতে চলেছে বঙ্গোপসাগর।
কিছুদিন ধরেই বিভিন্ন মহলে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত নানা রকম খবর রটছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল ও আতঙ্ক দুই-ই ছড়িয়েছে। যদিও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার কোনো পরিস্থিতিই এখন নেই।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অন্য বছরগুলির তুলনায় এ বছর আন্দামান সাগর দিয়ে খুব দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমি বায়ু। ইতিমধ্যেই আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের অধিকাংশ অঞ্চল, আন্দামান সাগর আর দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরে বর্ষা পৌঁছে গিয়েছে। সব ঠিকঠাক চললে আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যেই বর্ষা সাগরের আরও বড়ো অংশে প্রবেশ করে যাবে। ঠিক এই কারণেই সাগরের পরিস্থিতি আর ঘূর্ণিঝড় জন্ম দেওয়ার মতো অনুকূল থাকবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার জন্য সাগরের জলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু বর্ষা প্রবেশ করে যাওয়ায় এবং আকাশে মেঘের আস্তরণের কারণে জল আর খুব বেশি গরম হচ্ছে না। সে কারণেই বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই।
যদিও নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। মনে করা হচ্ছে মে মাসের শেষের দিকে চলতি মরশুমের প্রথম নিম্নচাপ দানা বাঁধতে পারে বঙ্গোপসাগরে। তার হাত ধরে উত্তরপূর্ব এবং পূর্ব ভারতে অনেকটাই অগ্রসর হতে পারে বর্ষা। তবে তা ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হবে না।
উল্লেখ্য, ২০১৮ থেকে মে মাসে টানা ঘূর্ণিঝড়ের জন্ম দিয়েছে বঙ্গোপসাগর। এর মধ্যে ২০১৯-এর ফণী, ২০২০-এর আম্ফান, ২০২১-এর ইয়াস এবং ২০২৪-এর রেমাল উল্লেখযোগ্য। এই সবকটি ঝড়ই পশ্চিমবঙ্গে প্রভাব ফেলেছিল। তবে সব কিছু ঠিকঠাক চললে এবার আর মে মাসে কোনো ঘূর্ণিঝড়ের জন্ম বঙ্গোপসাগর দেবে না।