উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: প্রবাদপ্রতীম সংগীত শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জন্ম শতবর্ষ গত বছর আমরা পার করেছি। শনিবার ছিল এই মহান শিল্পীর ৩১তম মৃত্যুদিবস। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বহড়ু গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায় পৈতৃক বাসস্থান কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের। এখন বাড়ির আর কিছু অবশিষ্ট নেই। জঙ্গল হয়ে পড়ে আছে। কিছু অংশ আবার বেআইনি দখল অথবা বিক্রি হয়ে গেছে বলে অভিযোগ।
এই শিল্পীর পৈতৃক ভিটাতে হেমন্তের মূর্তি, জায়গাটাতে তাঁর নামাঙ্কিত মিউজিয়াম ও শিশুদের জন্য পার্ক এবং শিল্পীর নামাঙ্কিত রাস্তা তৈরি করার দাবি জানালেন হেমন্তের ভ্রাতৃবধূ ৮২ বছরের গায়ত্রী মুখোপাধ্যায়। এ দিন গায়ত্রী মুখোপাধ্যায় ও তাঁর পুত্রবধূ ঝর্না মুখোপাধ্যায় দেখালেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পৈতৃক বসতবাড়ি যেখানে ছিল, সেটি এখন জঙ্গলে ঘেরা । নানা গাছপালায় ভরতি।

সকালবেলাতেই ঢোকা যায় না। আশ্চর্য লাগে এখানে কোথাও এতোটুকু কিছু নেই যা দেখে বোঝা যাবে এটি মহানশিল্পীর পৈতৃক ভিটা। রাস্তা পেরিয়ে যে গঙ্গার অবশেষরূপী যে বড়ো দিঘি আছে, সেটিও এই শিল্পীর পরিবারের। কিন্তু শিল্পীর পৈতৃক ভিটের মতো তাও আজ অবহেলিত।
এ ভাবে সরকারি উদ্যোগের অভাবে আজও অবহেলিত শিল্পীর গ্রাম বহড়ু। স্থানীয় মানুষ জানালেন, গত বছর জন্ম শতবর্ষে বহড়ুর প্রাচীন শ্যামসুন্দর লাইব্রেরি তাঁদের নিজ উদ্যোগে লাইব্রেরির ভেতর হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের একটি আবক্ষ মূর্তি বসিয়েছেন। তা ছাড়া বহড়ু এলাকায় হেমন্তের নামাঙ্কিত আর কোনো স্মৃতি চিহ্ন নেই। গ্রামবাসী হিসেবে তাঁরা চান, বহড়ু স্টেশনে তাঁর নামাঙ্কিত স্মৃতি ফলক, তাঁর জন্মভিটায় শিশুদের পার্ক, মিউজিয়াম ও মূর্তি স্থাপন করতে। যাতে সঙ্গীতপ্রেমী, ইতিহাসপ্রেমী বহু মানুষ এলাকায় এসে এই মহান শিল্পীর বসত ভিটেকে দেখে যেতে পারেন।

তাঁরা বলেন, সরকার উদ্যোগ নিয়ে এগুলো করলে মহান শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানানো হবে। তবে তাঁর ৩১তম মৃত্যু দিবসে শনিবার বহড়ুতে কোনো অনুষ্ঠান দেখতে পাওয়া যায়নি সরকারি তরফে। এ দিন পঞ্চায়েত অফিসে বসে এ ব্যাপারে বহড়ু ক্ষেত্র গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান স্নেহাশিস নাইয়া বলেন, “এই মহান শিল্পীর জন্য কিছু করতে পারলে অবশ্যই আমার ভালো লাগবে। তবে আগামী বছরে এই মহান শিল্পীর পৈতৃক ভিটায় মূর্তি বসানো, মিউজিয়াম করার ইচ্ছে রয়েছে , এর জন্য শিল্পীর পরিবার থেকে সরকারকে লিখিত অনুমতি দিতে হবে। অনুমতি পেলেই শিল্পীর পৈতৃক ভিটেতে কাজ শুরু হবে”।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, “তবে আর কয়েক মাসের মধ্যেই বহড়ু ক্ষেত্র তলাতে হেমন্তের নামাঙ্কিত একটি পার্ক চালু করা হবে। আর রাস্তার নামকরণ নিয়ে সেরকম কোনো সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া সম্ভব হয়নি। আমরা চাইছি সরকারি ভাবে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীকে স্মরণ করে তাঁর নামাঙ্কিত অনেককিছুই এলাকায় স্থাপন করতে। এখান দেখা যাক কী হয়”।
আরও পড়তে পারেন: প্রগতিশীল সামাজিক-রাজনৈতিক সাংবাদিকতার অন্যতম প্রবর্তক ও পথপ্রদর্শক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।