দঃ ২৪ পরগনা
বিডিও অফিসে উম্পুনে ক্ষতিপূরণের ফর্ম জমা দিতে গিয়ে কুলতলিতে পদপিষ্ট একাধিক
ভিড়ের চাপে বেশ কয়েকজন মহিলা মাটিতে পড়ে যান। কেউ আবার তাঁদের উপর দিয়েই চলে যান। ফলে মাটিতে পড়ে থাকা মহিলারা আহত হন।

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলিত: ঘূর্ণিঝড় উম্পুনে (Cyclone Amphan) ক্ষতিপূরণের ফর্ম জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে। বৃহস্পতিবার বিডিও অফিসের সামনে হুড়োহুড়িতে সরকারি ভাবে দু’জন মহিলার পদপিষ্ট হওয়ার কথা স্বীকার করা হয়েছে।
বিডিও অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যা গায়েন এবং অসীমা হালদার নামে দুই পদপিষ্ট মহিলাকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। তবে আবেদনকারীদের দাবি, আরও বেশ কয়েকজন জখম হয়েছেন।

এ দিন বিডিও অফিসের সামনে আবেদনকারীদের ভিড় ক্রমশ লম্বা হতে শুরু করে। সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে পড়তে শুরু করেন অনেকে। বেলা গড়ালে রোদের তাপে কেউ কেউ অসুস্থ হয়েও পড়েন। ঘটনায় প্রকাশ, তাঁদের মধ্যেই কেউ কেউ আগে নিজের ফর্ম দিতে চান। যা নিয়ে বিতর্ক বাঁধে। শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি।
সে সময় ভিড়ের চাপে বেশ কয়েকজন মহিলা মাটিতে পড়ে যান। কেউ আবার তাঁদের উপর দিয়েই চলে যান। ফলে মাটিতে পড়ে থাকা মহিলারা আহত হন। দুই মহিলাকে তৎক্ষণাৎ সেখান থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় জামতলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

বিক্ষোভ আগেও!
গত বুধবার বিকেলে কুলতলির দেউলবাড়ি দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধবপুর গ্রামে ‘উম্পুন দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে ক্ষোভ চরমে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না। উল্টে গ্রামের বাইরের কিছু লোক ক্ষতিপূরণ পেয়ে যাচ্ছেন।
এক বিক্ষোভকারী বলেন, “উম্পুনে আমাদের ঘর ভেঙে গিয়েছে। কিন্তু সরকারি ঘোষণা মতো ২০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ পাইনি। প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে। পাওয়া যাবে। কিন্তু কবে”?
উম্পুন ক্ষতিপূরণ
ঘূর্ণিঝড় উম্পুনে যাঁরা চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের জন্য ২০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে কমপক্ষে ১০ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সেই ক্ষতিপূরণ পাওয়া নিয়ে অসংখ্য অভিযোগ উঠে আসে। ‘ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য অন্যকে টাকার ভাগ দিতে হচ্ছে’ বলেও মারাত্মক অভিযোগ উঠে আসে।
জুন মাসের মাঝামাঝি মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য ফর্ম কেনার দরকার নেই। টাকা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “অভিযোগ সত্য হিসাবে প্রমাণ হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন”।
দঃ ২৪ পরগনা
বিজেপির সভায় ভাঙচুর, সরগরম জয়নগর
বিজেপির অভিযোগ, পালটা অভিযোগ তৃণমূলের। দুই দলই প্রতিবাদ জানাতে করল মিছিল!

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: আর কিছু দিন পর বিধানসভার ভোট। আর এখন থেকেই বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক সংঘর্ষ। মঙ্গলবার বিকালে জয়নগর থানার দক্ষিণ বারাশত মগরাহাট মোড়ে বিজেপির এক পথসভায় দুষ্কৃতীদের হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠল।
মঞ্চ, চেয়ার, মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। আর এই ঘটনার পরে দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে জয়নগর দক্ষিণ বারাশত রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি কর্মীরা। এই অবরোধ তুলতে গেলে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ল জয়নগর থানার পুলিশ।

বিজেপির অভিযোগ
বিজেপির বারুইপুর পূর্ব জেলার প্রাক্তন সভাপতি দেবতোষ আচার্য ও বর্তমান সভাপতি সুনীপ দাস বলেন, “পুলিশের অনুমতি নিয়ে আমাদের কর্মীরা এ দিন মঙ্গলবার দক্ষিণ বারাশতে একটি পথসভার আয়োজন করে। সভা শুরুর কিছু আগে তৃণমূল আশ্রিত একদল দুষ্কৃতীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমাদের সভা বানচাল করার জন্য ভাঙচুর চালাল। মঞ্চ ভাঙা, চেয়ার, মাইক ভাঙা থেকে শুরু করে মোবাইল কেড়ে নেয়”।
এ দিনের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাই, ধিক্কার জানাই। ওদের পায়ের তলায় মাটি হারিয়ে যাচ্ছে বলে ওরা এই ভাবে হামলা চালাল। তাই দোষীদের শাস্তির দাবিতে আমরা পথ অবরোধ করেছি”।
তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ
বিজেপির তোলা এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জয়নগর-১ নম্বর ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি তুহিন বিশ্বাস। তিনি বলেন, “এই এলাকার বিজেপির ৮-৯ টা গোষ্ঠী আছে। নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দলে এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের কেউ জড়িত নেই। সরকারি প্রকল্পের কাজ নিয়ে আমরা এখন মানুষের পাশে থেকে পরিষেবা দিচ্ছি”।
তবে বিজেপির তোলা মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে তৃণমূলও সন্ধ্যায় দক্ষিণ বারাশতে একটি পথ মিছিল বার করে। অভিযোগ ও পালটা অভিযোগে এখন সরগরম তাই দক্ষিণ বারাশত এলাকা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
আরও পড়তে পারেন: বাংলাকে ধমকালে মুখে লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে আটকে দেব: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
দঃ ২৪ পরগনা
করোনা, উম্পুন যাঁর ১২ বছরের দায়িত্বপালনে ছেদ ফেলতে পারেনি
কোভিডরোগীদের বাড়ি থেকে হাসপাতালে আনতে গিয়ে নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেরে উঠে ফের কাজে মনোনিবেশ করেছেন সুপর্ণা।

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি: মানুষের সেবায় সুন্দরবনে নিরলস সেবা করে চলেছেন একটি মেয়ে। করোনা সময়কাল হোক বা উম্পুন কবলিত এলাকা, সব কিছু ভুলে গিয়ে মানুষের পাশে থেকে সর্বক্ষণ স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে চলেছেন প্রথম সারির করোনাযোদ্ধা সুপর্ণা কন্ট।
কলকাতা থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার পথে নিত্য যাতায়াত করে কুলতলি ব্লক জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতালে ১২ বছর ধরে কর্তব্য পালন করছেন বেহালার তরুণী সুপর্ণা। ১২ বছর ধরে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হেলথ কাউন্সেলর হিসেবে কাজ করছেন। লকডাউন ঘোষিত হওয়ার পর থেকে সুপর্ণা জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে খুব ভালোবাসেন। কারণ কাজের প্রতি ওঁর আছে দায়বদ্ধতা। কোভিডরোগীদের বাড়ি থেকে হাসপাতালে আনতে গিয়ে নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেরে উঠে ফের কাজে মনোনিবেশ করেছেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোসিওলজিতে স্নাতকোত্তর করার পর স্বাস্থ্য দফতরের এই চাকরিটা পেয়ে গিয়েছিলেন সুপর্ণা। কিন্তু গতানুগতিক চাকরি করার পথ থেকে গোড়াতেই সরে এসেছেন সুপর্ণা। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হয়ে নাবালক ও নাবালিকাদের জীবনের সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে দেওয়ার কাজটি করতে করতে সুপর্ণা দরিদ্র গ্রামীণ মানুষের জীবন কাছ থেকে দেখছেন। জানালেন, ২০১৯ ও ২০২০ সালে জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে বদলির আদেশ আটকে গিয়েছে মানুষের প্রতিবাদে। ছোটোরা প্ল্যাকার্ড হাতে বদলির প্রতিবাদ জানিয়েছিল।

কুলতলি ব্লকের জনসংখ্যা ২ লক্ষ ৫৭ হাজার। সুপর্ণা জানালেন, এর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ হাজার কিশোর-কিশোরী। এদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যাগুলো নিয়ে কাজ করার দায়িত্ব যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। নানা রকম সমস্যা আছে। যেমন নাবালিকা বিবাহ,নাবালিকা পাচার, কৈশোরেই নেশার ফাঁদে পড়া কিশোর,কিশোরী-সহ জীবনের রুক্ষতার জেরে বিভিন্ন ধরনের মানসিক ও শারীরিক সমস্যায় ভুগছে অনেকেই। এদের জীবনের মূল স্রোতে ফেরানোর কাজটা সুপর্ণার কাছে চ্যালেঞ্জের।
এই কাজে সহযোগী জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য গ্রুপ কাউন্সেলিং করেন সুপর্ণা। এ ছাড়া প্রতি সপ্তাহে দু’ দিন কুলতলি ব্লকের স্কুলগুলিতে যান। পড়ুয়াদের খবর নেন। সুপর্ণা ওদের সবার দিদি। মনের কথা ওরাও অসংকোচে খুলে বলে ‘দিদি’র কাছে।
আরও পড়তে পারেন: বার্ড ফ্লু: ভারতের ডিম, মুরগির বাচ্চা আমদানি নিষিদ্ধ করল বাংলাদেশ
দঃ ২৪ পরগনা
টিকা নিয়ে খুশি চিকিৎসক, নার্স-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রথম সারির করোনাযোদ্ধারা
জেলার পাঁচটি মহকুমায় জেলার স্বাস্থ্যকর্মী এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রথম সারির করোনাযোদ্ধারা টিকা পেলেন এ দিন।

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান। করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় শনিবার দেশ জুড়ে শুরু হল করোনা টিকাকরণ কর্মসূচি। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পাঁচটি মহকুমায় জেলার স্বাস্থ্যকর্মী এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রথম সারির করোনাযোদ্ধারা টিকা পেলেন এ দিন।
এ দিন সকালে জেলার ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল, বারুইপুর মহকুমা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, বাসন্তী ১১ নম্বর সাব-সেন্টার, জয়নগর রুরাল হাসপাতাল, জয়নগর নিমপীঠ রামকৃষ্ণ গ্রামীণ হাসপাতাল, সোনারপুর কমিউনিটি হেলথ সেন্টার, মহেশতলা পুরসভার মোল্লারগেট প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, সরিষা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ফলতা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বানেশ্বরপুর রুরাল হাসপাতাল, মগরাহাট রুরাল হাসপাতাল, মথুরাপুর রুরাল হাসপাতাল, সাগর রুরাল হাসপাতাল ও ডায়মন্ড হারবার গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে এই কর্মসূচি পালন করা হল।
স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানালেন, টিকার দু’টি ডোজ নিতে হবে, প্রথম ডোজের ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে সকলকে। এ দিন টিকাকরনের মুহূর্তে সাগর রুরাল হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক পি উলগানাথন, সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা, ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. দেবাশিস রায়-সহ আরও অনেকে।
নিমপীঠ রামকৃষ্ণ গ্রামীণ হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন জয়নগরের বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস। জেলাশাসক পি উলগানাথন এ দিন বলেন, প্রথম সারিতে থাকা ১০০ জনকে এ দিন করোনা টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হল। ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ও শেষ ডোজ দেওয়া হবে। প্রথমে ডাক্তার,নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া হল। পরবর্তীতে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে দেওয়া হবে। এ দিন এই টিকা নিয়ে খুশি চিকিৎসক,নার্স-সহ প্রথম সারিতে থাকা করোনাযোদ্ধারা।
আরও পড়তে পারেন: প্রয়োজনে সংস্থার কাছ থেকে কিনে প্রত্যেককে বিনামূল্যে টিকার আশ্বাস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
-
রাজ্য2 days ago
বুধবার রাজ্যে আসছে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ
-
রাজ্য3 days ago
দক্ষিণবঙ্গে দু’ দিনের জন্য তাপমাত্রা বাড়লেও ফের ফিরবে শীত, উত্তরের পাহাড়ে তুষারপাতের সম্ভাবনা
-
দেশ3 days ago
মহারাষ্ট্র-কেরলে সংক্রমিত ৮০৮৬ বাকি দেশে মাত্র ৫০৭২, ২৩ মে’র পর সব থেকে কম দৈনিক মৃত্যু ভারতে
-
দেশ3 days ago
মাত্র ১৮ শতাংশ ভারতীয় হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারেন, ৩৬ শতাংশ কমিয়ে দেবেন ব্যবহার: সমীক্ষা