উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, মথুরাপুর: এ বার সুন্দরবনের মথুরাপুরে শুরু হল বিনা কর্ষণে সূর্যমুখী ফলনের পরীক্ষামূলক চাষ। এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হচ্ছে ‘ড্রিপ ইরিগেশন অ্যান্ড নো টিলেজ সিস্টেম’। আশা করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে সুন্দরবনের কৃষকেরা লাভের মুখ দেখতে পাবেন।
সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় গরমে জলের সংকট চরম আকার নেয়। চাষের জন্য জল পাওয়া যায় না বহু জায়গায়। আর সেই সমস্যার সমাধান করতে এ বারে এগিয়ে এসেছে মথুরাপুর-১ ব্লকের কৃষি দফতর। এই সমস্যার সমাধান করতে কৃষকদের দেওয়া হয়েছে ড্রিপ মেশিন। যার সাহায্যে ফোঁটা-ফোঁটা করে জল ফেলা হচ্ছে নির্দিষ্ট জায়গায়। ফলে জলের অপচয়ও কম হচ্ছে।
তা ছাড়া জমিতে বিনা কর্ষণে কী ভাবে চাষ করা যায় সেই বিষয়েও হাতে-কলমে প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে চাষীদের। শীতের শুরুতেই জয়নগর, কুলতলি, রায়দীঘি, মথুরাপুর এলাকায় শুরু হয়েছে সূর্যমুখীর চাষ।
মূলত বর্ষার সময় নীচু জমিতে জল জমে থাকে। সেই জল শুকিয়ে জমি তৈরি করতে অনেকটাই সময় লেগে যেত কৃষকদের। তবে এ বার এই পদ্ধতিতে কৃষকদের জমিতে আর কোনো কর্ষণ করতে হবে না। তাঁরা সরাসরি জমিতে বীজ বপন করছেন। জমির কোনো বাহ্যিক পরিবর্তন না করে এ ক্ষেত্রে জমির নরম মাটিতে নির্দিষ্ট দূরত্বে দু’টি করে দানা বপন করা হচ্ছে।
এই চাষের মাধ্যমে কৃষকরা এক বিঘা জমিতে প্রায় ৩ কুইন্টাল সূর্যমুখীর দানা তুলতে পারবেন। এর ফলে কৃষকদের অনেকটাই কম খরচ হবে। কিন্তু অধিক পরিমাণে লাভ হবে। মূলত এই লক্ষ্যেই মথুরাপুর-১ ব্লক কৃষি দফতর থেকে এই প্রকল্পের চাষ হচ্ছে। আর এই প্রক্রিয়া সফল হলে মথুরাপুর-১ ব্লক তৈলবীজ উৎপাদনেও এগিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মথুরাপুর-১ ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তা ইন্দিরা মণ্ডল বলেন, “সুন্দরবনে সূর্যমুখীর ভালো ফলন হয়। কিন্তু জলের সমস্যায় এই চাষ করে চাষিরা লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। তাই এই নতুন উপায়ে চাষ করে দেখা হচ্ছে পাইলট হিসাবে। আপাতত এই ব্লকের উত্তর লক্ষ্মীনারায়ণপুরে এই পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে। আগামী দিনে ব্লকের সব জায়গায় করা হবে। এই চাষ করে চাষিরা লাভের মুখ দেখতে পাবেন বলে আমরা আশাবাদী”।