উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি: সুন্দরবনের কুলতলিতে ভাসমান সবজি ক্ষেতে চাষ চলছে। বিকল্প কর্মসংস্থান গড়ে উঠছে কুলতলিতে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বর্জিত এই ভাসমান সবজিক্ষেত।
সুন্দরবনের একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত জলে কিংবা রোদ-জল-বৃষ্টিতে ক্ষতি না হওয়ার সম্ভাবনা এই ভাসমান সবজিক্ষেতে। সাউথ এশিয়ান ফোরাম ফর এনভায়রনমেন্ট নামে এক সংস্থার উদ্যোগে কুলতলি ব্লক প্রশাসনের সহয়তায় কুলতলির দেউলবাড়ি দেবীপুর, গোপালগঞ্জ, কুন্দখালী গোদাবর, মৈপিঠ বৈকুণ্ঠপুর-সহ একাধিক পঞ্চায়েত এলাকায় ভাসমান সবজিক্ষেত তৈরি করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: সুন্দরবনের কুলতলিতে এই প্রথম নতুন পদ্ধতিতে মাচায় মরশুমি সবজির চাষ]
আগামী দিনগুলিতে রোদ-জল-বৃষ্টি-সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই ক্ষেতে কোনো রকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। কৃষি বিজ্ঞানীদের অভিপ্রায়, যে ভাবে একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রতিবছরে নেমে আসছে সুন্দরবন এলাকায়, এই বিপর্যয় চাষের ক্ষেত ক্ষতি না করতে পারে তার জন্য সাউথ এশিয়ান ফোরাম ফর এনভায়রনমেন্টের উদ্যোগে এই ভাসমান সমস্ত সবজিক্ষেতগুলি খুব একটা ক্ষতির সম্মুখীন হবে না।
প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক বিপর্যয় লেগেই রয়েছে সুন্দরবনে। আর এই সুন্দরবন এলাকায় বাঘ ও কুমিরের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকা যে সমস্ত মৎস্যজীবী, যাঁদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় সেই সব পরিবারগুলির কমর্সংস্থান সৃষ্টি করতে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে কর্ম দিবস সৃষ্টি তথা স্বয়ংসম্পন্ন করতেই এমন উদ্যোগ। প্রতিনিয়ত মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয় যাঁদের, তাঁদের আবাদযোগ্য জমিতে এমন উদ্যেগ গ্রহণ করল এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। বাঘে আক্রান্ত পরিবারের সদস্যের মুখে অন্ন তুলে দিতে সাউথ এশিয়ান ফোরাম ফর এনভারমেন্টের সহায়তায় তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে ভাসমান সবজিক্ষেত।

সারা বছরে মরশুম অনুযায়ী এখান থেকে সবজি পাওয়া যাবে। নিজেদের পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়ে বাজারজাত করে অর্থ উপার্জন করার এক সুবর্ণ সুযোগ এই প্রকল্পের মাধ্যমে। পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে এই সবজি বিক্রি করার মাধ্যমে মুনাফা লাভের মাধ্যমে পরিবার সচ্ছল হবে। বিশেষত পিছিয়ে পড়া এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি দলে ভাগ করে এক একটা দলকে এমনই ভাবে বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই ক্ষেতে তৈরি টমাটো, ঢেঁড়স, লাল শাক, উচ্ছে, ঝিঙে,পালং শাক , ধনিয়া পাতা, নোটে, লঙ্কা-সহ একাধিক সবজি চাষ করানো হচ্ছে। যেখানে রাসায়নিক বর্জিত জৈব পদ্ধতিতে এই চাষ করে লাভের অঙ্ক দেখছেন চাষিরা।
সাউথ এশিয়ান ফোরাম ফর এনভায়রনমেন্ট সূত্রে জানা গেল, বিশেষত প্রতিবছরের প্রাকৃতিক বিপর্যয় কিম্বা নদীর বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হচ্ছে বিঘার পর বিঘা জমি, নদীর নোনা জলে প্লাবিত হয়ে যাওয়ার পর সেখানে হচ্ছে না সবজি কিংবা ধান চাষ। আর সেই সমস্ত এলাকাকে চিহ্নিত করে এলাকার বিশেষ করে বাঘে-কুমিরে আক্রান্ত পরিবারের আর্থসামাজিক উন্নতি সাধনে এবং তাঁরা যাতে জঙ্গলমুখী না হন, তার জন্য এমনই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে সংস্থার পক্ষে ড. দীপায়ন দে জানান, “বিশেষত কুলতলি-সহ একাধিক ব্লককে আমরা বেছে নিয়েছি। বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে কুলতলি ব্লকে তাদের এই মুহূর্তে চলছে ভাসমান সবজিক্ষেতের প্রকল্প। এর পর কাঁকড়া, মাছ, মৌমাছিপালন-সহ একাধিক কাজ হবে”।
আরও পড়তে পারেন:
ই-নাগেট মোবাইল গেমিং অ্যাপ, গার্ডেনরিচের আমির খানের কোটি কোটি টাকার উৎস
ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডি-র হানা, খাটের তলা থেকে ১৪ কোটি টাকা উদ্ধার গার্ডেনরিচে
রাহুলের টি-শার্ট, মহুয়ার ব্যাগ! বিরোধীদের সাজপোশাক নিয়ে কেন আক্রমণ শানাচ্ছে বিজেপি
অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে জ্বালানির দাম কম বেড়েছে, দাবি কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রীর
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।