উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: পুতুলের সঙ্গে কমবেশি সম্পর্ক তৈরি হয় সবারই ছোট বেলা থেকে। পুতুল খেলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের ছোটবেলার নানান স্মৃতি। নানান রকমের মাটির পুতুল নিয়ে আমাদের অনেকেরই ছোটবেলা কেটেছে বেশ স্মৃতি মধুর ভাবেই।কখনও “মাটির পুতুলের সংসার” আবার কখনও কাঠের পুতুলের “পুতুল নাচ”বা “হাস্য কৌতুক” । তবে এটা একটু অন্য ধরনের পুতুল।
পুজো আসলেই ডাক পরে এই শিল্পীর। তবে চাহিদা থাকলেও পুজোর সময় ছাড়া তাকে আর ডাকে না কেউ। কোনভাবেই পূর্বপুরুষের স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর থানার রামবাটি গোপালনগর এলাকার বাসিন্দা মঙ্গল নস্কর।
নিজের হাতে বিভিন্ন প্রতিমা তৈরি করে সেই সেগুলিকে হাত-পা নেড়ে কথা বলিয়ে জীবন্ত করে তোলেন তিনি। উৎসব অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের পুতুল নাচের অনুষ্ঠান হয়।
কোথাও পুতুল নিজে কথা বলছে আবার কোথাও নাচ গান করে আনন্দ দেয়। তবে এখানে কোনো পুতুল নয়, রাধাকৃষ্ণ, চৈতন্য মহাপ্রভু-সহ নানান মহাপুরুষদের মুর্তি পুতুলের মতই হাত-পা নেড়ে কথা বলে। এ এক হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন বাংলার শিল্পকলা, তাকে আঁকড়েই বেঁচে আছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই শিল্পী।
এই প্রাচীন শিল্পকলার শো-এর দুর্গাপুজোতে চাহিদা থাকলেও শ্যামাপুজোতে চাহিদা অনেক গুণ বেশি থাকে। নিজের হাতে তৈরি করে প্রতিমার বিভিন্ন রূপ ফুটিয়ে তোলেন শিল্পী। যেমন সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষকে উন্নততর করতে এই প্রতিমার মাধ্যম দিয়ে দর্শকদের সামনে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিমাতে সচেতনতার বার্তাও তুলে ধরা হয়। তার পাশাপাশি বিভিন্ন দেব-দেবীর পৌরাণিক কাহিনির তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেন তিনি।
এই কর্মকাণ্ড থেকে অনেক বেশি অর্থ উপার্জন না হলেও তার পূর্বপুরুষের মহৎ এই শিল্পটাকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং মানুষের মধ্যে শিক্ষা এবং সচেতনতার বার্তা বহন করাই তাঁর মুখ্য উদ্দেশ্য বলে তিনি জানালেন।