উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি: বনদফতরের গাফিলতিতে চিকিৎসাধীন এক বিরল প্রজাতির পেঁচা বনদফতরের অফিস থেকে আচমকা নিখোঁজ। তদন্তের দাবি জানালেন বন্যপ্রেমীরা।
গত ২৮ অক্টোবরের রাতে বকুলতলা থানার প্রিয়নাথের মোড় এলাকা থেকে একটি বিরল প্রজাতির অসুস্থ পেঁচাকে স্থানীয় মানুষজন উদ্ধার করে। আর তার পর দিন, ২৯ অক্টোবর মানবাধিকার সংগঠনের (এপিডিআর) কর্মী মিঠুন মণ্ডল ও এই প্রতিবেদক জয়নগর কুলতলি গ্রামীণ হাসপাতালের প্রাণী চিকিৎসক ডা. শোভন বিশ্বাসের কাছে নিয়ে গেলে চিকিৎসক অপারেশনের মাধ্যমে আহত পেঁচাটির ভেঙে যাওয়া ডানার তিন টুকরো হাড় স্টিক দিয়ে ব্যান্ডেজ করার পর চার রকমের ওষুধ দেন। এই ঘটনার ২১ দিন পর আবার পেঁচাটিকে তাঁর কাছে আনতে বলেন।
এরপর বন দফতরের বারুইপুর রেঞ্জের কুলতলি বনদফতরের পিয়ালির বিট অফিসে অসুস্থ পেঁচাটিকে তুলে দিয়ে আসা হয় প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র-সহ। চিকিৎসকের কথা মতো ১৯ নভেম্বর (মঙ্গলবার) আবার অসুস্থ পেঁচাটিকে ওই প্রাণী চিকিৎসকের কাছে আনতে গিয়ে দেখা যায়, পিয়ালি বিট অফিসে ওই পেঁচাটি নেই।
এ ব্যাপারে কুলতলি বন দফতরের পিয়ালি বিট অফিসার জাফর মোল্লা মঙ্গলবার বলেন, চিকিৎসা চলাকালীন পেঁচাটি উড়ে গেছে। এতে তাঁর কিছু করার নেই। কিন্তু তাঁদের পর্যবেক্ষণে থাকার পরেও কী করে অসুস্থ পেঁচাটি পালাল, তার উত্তর তিনি দিতে পারেননি।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, একটা আনফিট অসুস্থ পেঁচাকে এই ভাবে ছেড়ে দেওয়া যায় না। চিকিৎসক ডা. শোভন বিশ্বাসেরও একই মত। তিনি বলেন, “অসুস্থ পেঁচাটির ডানার তিনটি হাড় ভেঙেছিল, তাই ২১ দিন পর আনতে বলেছিলাম। যদি হাড় না জোড়া লাগে তা হলে জটিল অপারেশন করার কথা ছিল। কিন্তু আমার এ দিন কাছে আনা হয়নি। আর আমি না দেখে ফিট সার্টিফিকেট দেব কেন”।
এ ব্যাপারে জেলা বন আধিকারিক (ডিএফও) নিশা গোস্বামী বলেন, “অসুস্থ অবস্থায় কোনো ভাবেই কোনো প্রাণীকে ছাড়া যায় না। পুরো সময়ই পর্যবেক্ষণে রাখা উচিত। তবে এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে বিস্তারিত দেখছি”
এ বিষয়ে অসুস্থ পেঁচাটির উদ্ধারকারী মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার-সহ সম্পাদক মিঠুন মণ্ডল বলেন, এতে বনদফতরের ওই অফিসারের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় পাওয়া গেল। এ ব্যাপারে এপিডিআর-এর পক্ষ থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের কাছে অভিযোগ ও এফআইআর দায়ের করা হচ্ছে।