উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি : বারবার জায়গা বদল সুন্দরবনের দক্ষিণরায়ের। আর তাতেই নাজেহাল বনকর্মীরা।
মঙ্গলবার সকালে প্রথমে বাঘের অবস্থান ছিল মৈপীঠের কিশোরী মোহনপুর সংলগ্ন উত্তর বৈকুন্ঠপুর এলাকার মাকড়ি নদী তীরবর্তী ৬ নম্বর ঘেরি এলাকায়। আর তারপর বনকর্মীদের তৎপরতায় ওই এলাকাটি ইতিমধ্যেই জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেন বন দফতরের কর্মীরা।
এ দিন সকালে নদীর ঘেরির জালের কাছে দেখা যায় বাঘের পায়ের টাটকা ছাপ। বন দফতর সূত্রের খবর, সেখান থেকে আরও খানিকটা পুর্ব দিকে এগিয়ে সংলগ্ন জঙ্গলে রয়েছে বাঘটি। এরপরেই নতুন করে ১ কিলোমিটার জঙ্গল ঘেরার কাজ করছেন বনকর্মীরা। শুধুমাত্র জঙ্গলের দিক খুলে রেখে বাকি তিন দিক জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে।
এভাবে বাঘটিকে গভীর জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।এ দিন সকালেই ঘটনাস্থলে চলে আসেন এডিএফও অনুরাগ চৌধুরী, দুপুরে চলে আসেন ডিএফও নিশা গোস্বামী। বাঘটিকে জঙ্গলে ফেরানোর তদারকি করছেন তাঁরা।
আর লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় বাঘ চলে আসায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। জঙ্গলের পাশেই একাধিক গ্রাম রয়েছে। বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য রুজি-রুটির প্রয়োজনে গ্রামবাসীদের জঙ্গলে যেতে হয়। আপাতত তাঁদের জঙ্গলে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। এলাকার বাসিন্দারা লোকালয় সংলগ্ন জঙ্গল নেট দিয়ে ঘিরে ফেলার দাবি তোলেন।
এ ছাড়া রাস্তায় যাতে পর্যাপ্ত আলো লাগানো হয় সেই দাবিও তুলেছেন তাঁরা। ওই জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে রয়েছে মৈপীঠ উপকূল থানার পুলিশ। সাধারণ মানুষ যাতে সচেতন থাকেন সেই জন্য মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে।তবে গ্রামের কৌতুহলী মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবারই সুন্দরবনের কুলতলির মৈপীঠের লোকালয়ে দেখা গিয়েছিল দক্ষিণরায়কে। স্থানীয়রা দাবি করছিলেন, মাকড়ি নদী পার করে লোকালয়ে চলে এসেছিল বাঘটি। ওই একই পথে বাঘটিকে ফিরিয়ে দেয় বন দপ্তরের কর্মীরা।আর তাঁরপরই সোমবার সকালে আবার মৈপীঠের দক্ষিন বৈকুন্ঠপুরের ড্রোনের মুখ এলাকায় বাঘের দর্শন পায় এক মৎস্যজীবী।
খবর পেয়ে চলে আসে মৈপীঠে উপকূল থানার পুলিশ সহ বন দফতরের রায়দীঘি রেঞ্জ ও নলগোড়া বিট অফিসের বন কর্নীরা। তাঁদের সঙ্গে গ্রামবাসীরা ও টাইগার টিমের কর্মীরা মিলে সোমবার রাতে আগুন জ্বালিয়ে গ্রামে পাহারা দেয়।আর মঙ্গলবার সকালেই দক্ষিণরায় সেই এলাকা থেকে দুকিমি দূরে উওর বৈকুন্ঠপুর এলাকায় চলে যায়। আপাতত মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত বাঘ এলাকায় আছে বলে খবর। তবে সবকিছুর ওপর নজরদারি রেখেছে বন দফতর।তবে আতঙ্কিত হয়ে রয়েছে মৈপীঠ গ্রামের মানুষজন।