দঃ ২৪ পরগনা
স্বামীজির ১৫৮তম জন্মজয়ন্তীতে মহিলা ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপ জয়নগরে
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে একশো ছাত্রী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেন।

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: মহিলাদের আত্মরক্ষার প্রয়োজনে ক্যারাটে প্রশিক্ষণ শিবির অনেক বেড়ে গেছে আগের তুলনায়। জয়নগর এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার উদ্যোগে এখন ক্যারাটে প্রশিক্ষণ চলছে।
জয়নগর থানার আইসি অতনু সাঁতরার উদ্যোগে গত এক বছর ধরে প্রত্যয়ের মাধ্যমে ছাত্রীদের আত্মরক্ষার জন্য ক্যারাটে প্রশিক্ষণ শিবির চলছে জয়নগর থানার সরবেড়িয়া টি এস সনাতন হাইস্কুল ও জয়নগর গার্লস স্কুলে।
মঙ্গলবার স্বামী বিবেকানন্দের ১৫৮তম জন্মজয়ন্তীতে জয়নগর থানার উদ্যোগে সিট রায়ো ক্যারাটে দো সেনকাই ইন্ডিয়া এ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় জয়নগর শিবনাথ শাস্ত্রী সদনে জয়নগর মহিলা ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপ হয়ে গেল।
এ দিনের অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রমের সম্পাদক স্বামী সদানন্দজি মহারাজ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু, জয়নগরের বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস, জয়নগর মজিলপুর পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজিত সরখেল, জয়নগর থানার আইসি অতনু সাঁতরা, সিট রায়ো দো সেনকাই ইন্ডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কমল শিকদার, সম্পাদক শিহান দেবব্রত হালদার-সহ আরো অনেকে।

পাঁচটি গ্রুপে জয়নগর থানা এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে একশো জন ছাত্রী এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এ দিন এই শিবিরে কাতা ক্যারাটে-সহ আরো কয়েকটি ক্যারাটের কৌশল তুলে ধরা হল। প্রতিযোগিতায় সেরার সেরা হন রাহিদা মোল্লা (১৬)।
এ ব্যাপারে জয়নগর থানার আইসি অতনু সাঁতরা বলেন, নারীর আত্মপ্রত্যয় ও উৎকর্ষতা বাড়ানো-সহ আত্মনির্ভরশীলতা বাড়ানোর লক্ষে এই ক্যারাটে প্রতিযোগিতা শিবির অনুষ্ঠিত হয়। জয়নগর থানা এলাকায় এই ধরনের মহিলা ক্যারাটে প্রশিক্ষন শিবির এই প্রথম।
এই শিবিরে অংশ নিয়ে খুশি এলাকার মহিলা ক্যারাটে প্রতিযোগীরা।
আরও পড়তে পারেন: মনীষী-স্মরণ তৃণমূলের ‘হঠাৎ কর্মসূচি’ নয়

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবন: সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সম্পদ বাঁচানোর পাশাপাশি জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করা খুব প্রয়োজন। সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই বৃহস্পতিবার দুপুরে সুন্দরবনে ছাড়া হল ছ’টি কুমির।
সুন্দরবনের জীব পরিমণ্ডলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সুন্দরবনের নদীতে এই ছ’টি কুমির ছাড়ল বন দফতর। ১৯৭৬ সাল থেকে সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমার ভগবতপুরের কুমির প্রকল্পে কুমির প্রজননের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানেই জন্ম হয়েছে কুমিরগুলির। চার বছর বয়সের কুমিরদের নোনা জলে অর্থাৎ সুন্দরবনে ছেড়ে দেওয়া হয় এ দিন।

বন দফতর এ বারে মোট ৫৫টি কুমির ছাড়বে সুন্দরবনের বিভিন্ন কোর অংশে। যার মধ্যে ৪০টি পুরুষ ও ১৫টি স্ত্রী কুমির থাকবে। বৃহস্পতিবার প্রথম পর্যায়ে ছ’টি কুমির ছাড়া হল সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অন্তর্গত বিদ্যা রেঞ্জের স্টোরখালি এলাকায়। এগুলির মধ্যে পাঁচটি কুমির আনা হয়েছে ভগবতপুর কুমির প্রকল্প থেকে এবং একটি আনা হয়েছে সজনেখালি থেকে। ছ’টি কুমিরের মধ্যে একটি পুরুষ কুমির, আর বাকি পাঁচটি স্ত্রী কুমির। এদের প্রত্যেকের গড় ওজন ১৪.২৬ কেজি করে।
এ দিন নদীতে ছাড়া কুমিরগুলি সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাণী চিকিৎসক। কুমির ছাড়ার সময় স্টোরখালিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যর প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) বিনোদকুমার যাদব, সুন্দরবন জীব পরিমণ্ডলের অধিকর্তা পিয়ার চাঁদ, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধিকর্তা তাপস দাস, জেলার বন দফতরের ডিএফও মিলন মণ্ডল, সহকারী ডিএফও অনুরাগ চৌধুরী-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। আগামী দিনে বাকি কুমিরগুলোকেও সুন্দরবনে ছাড়া হবে বলে বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়তে পারেন: আরও এক দফায় ‘দুয়ারে সরকার’
দঃ ২৪ পরগনা
বিজেপির সভায় ভাঙচুর, সরগরম জয়নগর
বিজেপির অভিযোগ, পালটা অভিযোগ তৃণমূলের। দুই দলই প্রতিবাদ জানাতে করল মিছিল!

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: আর কিছু দিন পর বিধানসভার ভোট। আর এখন থেকেই বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিক সংঘর্ষ। মঙ্গলবার বিকালে জয়নগর থানার দক্ষিণ বারাশত মগরাহাট মোড়ে বিজেপির এক পথসভায় দুষ্কৃতীদের হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠল।
মঞ্চ, চেয়ার, মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। আর এই ঘটনার পরে দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে জয়নগর দক্ষিণ বারাশত রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি কর্মীরা। এই অবরোধ তুলতে গেলে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ল জয়নগর থানার পুলিশ।

বিজেপির অভিযোগ
বিজেপির বারুইপুর পূর্ব জেলার প্রাক্তন সভাপতি দেবতোষ আচার্য ও বর্তমান সভাপতি সুনীপ দাস বলেন, “পুলিশের অনুমতি নিয়ে আমাদের কর্মীরা এ দিন মঙ্গলবার দক্ষিণ বারাশতে একটি পথসভার আয়োজন করে। সভা শুরুর কিছু আগে তৃণমূল আশ্রিত একদল দুষ্কৃতীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমাদের সভা বানচাল করার জন্য ভাঙচুর চালাল। মঞ্চ ভাঙা, চেয়ার, মাইক ভাঙা থেকে শুরু করে মোবাইল কেড়ে নেয়”।
এ দিনের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাই, ধিক্কার জানাই। ওদের পায়ের তলায় মাটি হারিয়ে যাচ্ছে বলে ওরা এই ভাবে হামলা চালাল। তাই দোষীদের শাস্তির দাবিতে আমরা পথ অবরোধ করেছি”।
তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ
বিজেপির তোলা এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জয়নগর-১ নম্বর ব্লক তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি তুহিন বিশ্বাস। তিনি বলেন, “এই এলাকার বিজেপির ৮-৯ টা গোষ্ঠী আছে। নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দলে এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এর সঙ্গে তৃণমূলের কেউ জড়িত নেই। সরকারি প্রকল্পের কাজ নিয়ে আমরা এখন মানুষের পাশে থেকে পরিষেবা দিচ্ছি”।
তবে বিজেপির তোলা মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে তৃণমূলও সন্ধ্যায় দক্ষিণ বারাশতে একটি পথ মিছিল বার করে। অভিযোগ ও পালটা অভিযোগে এখন সরগরম তাই দক্ষিণ বারাশত এলাকা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
আরও পড়তে পারেন: বাংলাকে ধমকালে মুখে লিউকোপ্লাস্ট দিয়ে আটকে দেব: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
দঃ ২৪ পরগনা
করোনা, উম্পুন যাঁর ১২ বছরের দায়িত্বপালনে ছেদ ফেলতে পারেনি
কোভিডরোগীদের বাড়ি থেকে হাসপাতালে আনতে গিয়ে নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেরে উঠে ফের কাজে মনোনিবেশ করেছেন সুপর্ণা।

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, কুলতলি: মানুষের সেবায় সুন্দরবনে নিরলস সেবা করে চলেছেন একটি মেয়ে। করোনা সময়কাল হোক বা উম্পুন কবলিত এলাকা, সব কিছু ভুলে গিয়ে মানুষের পাশে থেকে সর্বক্ষণ স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে চলেছেন প্রথম সারির করোনাযোদ্ধা সুপর্ণা কন্ট।
কলকাতা থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টার পথে নিত্য যাতায়াত করে কুলতলি ব্লক জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতালে ১২ বছর ধরে কর্তব্য পালন করছেন বেহালার তরুণী সুপর্ণা। ১২ বছর ধরে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হেলথ কাউন্সেলর হিসেবে কাজ করছেন। লকডাউন ঘোষিত হওয়ার পর থেকে সুপর্ণা জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। এলাকার বাসিন্দারা তাঁকে খুব ভালোবাসেন। কারণ কাজের প্রতি ওঁর আছে দায়বদ্ধতা। কোভিডরোগীদের বাড়ি থেকে হাসপাতালে আনতে গিয়ে নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেরে উঠে ফের কাজে মনোনিবেশ করেছেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোসিওলজিতে স্নাতকোত্তর করার পর স্বাস্থ্য দফতরের এই চাকরিটা পেয়ে গিয়েছিলেন সুপর্ণা। কিন্তু গতানুগতিক চাকরি করার পথ থেকে গোড়াতেই সরে এসেছেন সুপর্ণা। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হয়ে নাবালক ও নাবালিকাদের জীবনের সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে দেওয়ার কাজটি করতে করতে সুপর্ণা দরিদ্র গ্রামীণ মানুষের জীবন কাছ থেকে দেখছেন। জানালেন, ২০১৯ ও ২০২০ সালে জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে বদলির আদেশ আটকে গিয়েছে মানুষের প্রতিবাদে। ছোটোরা প্ল্যাকার্ড হাতে বদলির প্রতিবাদ জানিয়েছিল।

কুলতলি ব্লকের জনসংখ্যা ২ লক্ষ ৫৭ হাজার। সুপর্ণা জানালেন, এর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ হাজার কিশোর-কিশোরী। এদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যাগুলো নিয়ে কাজ করার দায়িত্ব যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। নানা রকম সমস্যা আছে। যেমন নাবালিকা বিবাহ,নাবালিকা পাচার, কৈশোরেই নেশার ফাঁদে পড়া কিশোর,কিশোরী-সহ জীবনের রুক্ষতার জেরে বিভিন্ন ধরনের মানসিক ও শারীরিক সমস্যায় ভুগছে অনেকেই। এদের জীবনের মূল স্রোতে ফেরানোর কাজটা সুপর্ণার কাছে চ্যালেঞ্জের।
এই কাজে সহযোগী জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকরা। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্য গ্রুপ কাউন্সেলিং করেন সুপর্ণা। এ ছাড়া প্রতি সপ্তাহে দু’ দিন কুলতলি ব্লকের স্কুলগুলিতে যান। পড়ুয়াদের খবর নেন। সুপর্ণা ওদের সবার দিদি। মনের কথা ওরাও অসংকোচে খুলে বলে ‘দিদি’র কাছে।
আরও পড়তে পারেন: বার্ড ফ্লু: ভারতের ডিম, মুরগির বাচ্চা আমদানি নিষিদ্ধ করল বাংলাদেশ
-
রাজ্য3 days ago
বুধবার রাজ্যে আসছে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ
-
প্রবন্ধ3 days ago
শিল্পী – স্বপ্ন – শঙ্কা: সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে যেমন দেখেছি, ৮৭তম জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য
-
দেশ2 days ago
রবিবার পর্যন্ত করোনাহীন ছিল লাক্ষাদ্বীপ, পরের দু’ দিনে পজিটিভ ১৫
-
রাজ্য3 days ago
বিজেপি আসন বাড়ালেও রাজ্যে ক্ষমতায় থাকবে তৃণমূলই, ইঙ্গিত সি ভোটারের সমীক্ষায়