কলকাতা: একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের অধীনে ট্যাব কেনার টাকা নিয়ে ব্যাপক জালিয়াতি! পড়ুয়া পিছু বরাদ্দ ১০ হাজার টাকা অনেকেরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছায়নি। বিভিন্ন জেলা থেকে এই টাকা গায়েব হওয়ার খবর উঠে আসার পর এ বার কলকাতার বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। ইতিমধ্যেই শুধু কলকাতার বিভিন্ন থানাতেই ১০০ জনের বেশি পড়ুয়ার টাকা গায়েব হওয়ার অভিযোগ জমা পড়েছে। এইসব অভিযোগের তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করল কলকাতা পুলিশ।
পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে প্রথম এই টাকা গায়েব হওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ, ট্যাবের জন্য বরাদ্দ টাকা বহু পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি এবং অনেক ক্ষেত্রেই অন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। এরপর ধীরে ধীরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে একের পর এক এমন অভিযোগ আসতে থাকে।
কলকাতার বিভিন্ন থানায় যেমন যাদবপুর, কসবা, বেনিয়াপুকুর, মানিকতলা, ওয়াটগঞ্জ, সরশুনা, জোড়াসাঁকো, গল্ফগ্রিন এবং ভবানীপুরে পড়ুয়াদের অভিযোগ জমা পড়েছে। যাদবপুরের একটি স্কুলে ১২ জন এবং ঠাকুরপুকুরের আরেকটি স্কুলের ৩১ জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা না পৌঁছানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। কসবায় ১০ জন, জোড়াসাঁকোয় ৪০ জন এবং বেনিয়াপুকুরে পাঁচ জন পড়ুয়ার টাকা না আসার বিষয়টি পুলিশের নজরে এসেছে।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই সিট গঠন করেছে এবং কিছু গ্রেফতারিও হয়েছে। সরশুনার পড়ুয়াদের টাকা গায়েবের ঘটনায় উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থেকে দুই অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ বর্মণ এবং সরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, এই দুই অভিযুক্তের সাইবার ক্যাফের সঙ্গে যোগ রয়েছে, যেখানে থেকে এই ধরনের অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এবার কলকাতা পুলিশও সিট গঠন করে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তারা খতিয়ে দেখবে, কলকাতার স্কুলগুলির পড়ুয়াদের টাকা কোথায় যাচ্ছে এবং এই চক্রের সঙ্গে কারা জড়িত রয়েছে।
আরও পড়ুন: এ বার সাগরের ৩১ জন পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা উধাও