আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর থেকে কলকাতায় চলছে উত্তাল পরিস্থিতি। এই ঘটনার প্রতিবাদে জুনিয়র ডাক্তারদের লাগাতার কর্মবিরতি এবং তাদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল, কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীতকুমার গোয়েলকে অপসারণ করা। রাজ্য সরকার সেই দাবিকে মেনে নিয়ে বিনীতকুমার গোয়েলকে সরিয়ে দিল।
শনিবার বিনীতকুমার গোয়েলকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদ থেকে সরিয়ে পশ্চিমবঙ্গ স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএএফ)-এর এডিজি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। তার সঙ্গে রাজ্য সরকারের তরফে আরও কিছু পুলিশ শীর্ষপদে রদবদল করা হয়েছে।
মনোজ বর্মাকে কলকাতার নতুন পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে, যিনি এর আগে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) পদে ছিলেন। এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) হিসেবে নতুন পদে আসছেন জাভেদ শামিম।
জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল গত ৯ অগস্ট, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর। ওই চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ ওঠে, যার পর থেকে শুরু হয় ডাক্তারদের কর্মবিরতি। তাদের দাবি ছিল, কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত এবং ডিসি সেন্ট্রাল অভিষেক গুপ্তকে সরিয়ে দিতে হবে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে লালবাজার অভিযানের সময় বিনীতকে প্রতীকি মেরুদণ্ডও উপহার দিয়েছিলেন ডাক্তাররা, যাতে প্রমাণ হয় তারা তার সিদ্ধান্তে কতটা বিরক্ত।
শেষ পর্যন্ত, রাজ্য সরকার ডাক্তারদের এই দাবিগুলি মেনে নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই পদক্ষেপের কথা জানান। তিনি বলেন, “সিপি বিনীত বারবার পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তবে সরকার সেই সময় তাকে পদত্যাগ করতে দেয়নি। এখন সমস্ত পরিস্থিতি বিবেচনা করে তার পরিবর্তন করা হয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রী সোমবার জানিয়েছিলেন, যেহেতু শীর্ষ আদালতে শুনানি রয়েছে., তাই এদিন বিকেল ৪টের পর অপসারণ করা হবে। সেইমতো আদালতের শুনানি শেষ হওয়ার পরই অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কলকাতার ডিসি (উত্তর) অভিষেক গুপ্তকেও সরিয়ে ইএফআর-এর সেকেন্ড ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। তার জায়গায় ডিসি (উত্তর) পদে এসেছেন দীপক সরকার, যিনি এর আগে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) ছিলেন।