উঃ দিনাজপুর
চোপড়া-কাণ্ডে মেলেনি ধর্ষণের প্রমাণ, অশান্তির ঘটনায় গ্রেফতার ১৬

খবরঅনলাইন ডেস্ক: চোপড়া-কাণ্ডে কোনো ধর্ষণের প্রমাণ পায়নি পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ওই কিশোরীর বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে রবিবার দুপুরে অশান্তিতে জড়িত থাকার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগকে ঘিরে রবিবার উত্তাল হয়ে উঠেছিল উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া। পুলিশ ও জনতার খণ্ডযুদ্ধে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় চোপড়ার কালাগছ এলাকা।
তবে ময়নাতদন্তে বিষক্রিয়ার কথা বলা হলেও মৃত কিশোরীকে কেউ জোর করে বিষ খাইয়েছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদিও বিজেপি এখনও সেই দাবি মানতে নারাজ। তাঁদের অভিযোগ, ঘটনার পরপরই দেহ সৎকার করে দিতে চাইছিল পুলিশ।
তবে বিজেপি বিষয়টি নিয়ে রাজনীতির সুর কমাতে নারাজ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে চোপড়াকাণ্ড নিয়ে অভিযোগ জানাতে এ দিনই যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী ও দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু সিং বিস্ত।
রবিবার সকালে চোপড়া থানার সোনাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চতুরাগছে এক কিশোরীর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে উত্তেজনা ছড়ায় গ্রামবাসীদের মধ্যে। অজ্ঞান অবস্থায় তাঁকে প্রথমে চোপড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে চোপড়ার কালাগছ এলাকা।
ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ধর্ষণকারী ও খুনিকে গ্রেফতারের দাবিতে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় লোকজন। হাতে লাঠিসোটা নিয়ে রাস্তায় নামেন পুরুষ ও মহিলারা। সেই বিক্ষোভে শামিল হয় বিজেপিও। ওই কিশোরী বিজেপি নেতার বোন বলেও দাবি করা হয়।
দীর্ঘক্ষণ টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক বন্ধ রেখেই চলতে থাকে বিক্ষোভ। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আন্দোলনকারীরা। মুহূর্তে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে জাতীয় সড়ক। পোড়ানো হয় একাধিক বাস। পুলিশের গাড়িও জ্বালানো হয়।
তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বিজেপির দাবি ধোপে না টিকলেও তারা যে ব্যাপারটিকে হালকা ভাবে নিচ্ছে না, সেটা বিজেপির এ দিনের পদক্ষেপ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
উঃ দিনাজপুর
রাজ্যের দুটি জেলায় সক্রিয় কোভিডরোগীর থেকে বেশি কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা
গোটা রাজ্যে বর্তমানে কনটেনমেন্ট জোন ৩,২৩৬।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: রাজ্যের দু’টি জেলায় যত জন সক্রিয় কোভিডরোগী রয়েছেন, তার থেকে বেশি সংখ্যায় কনটেনমেন্ট জোন রয়েছে। অদ্ভুত এই ব্যাপার ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর আর পূর্ব বর্ধমানের ক্ষেত্রে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী পূর্ব বর্ধমানে এই মুহূর্তে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৫৪৮। অথচ এই জেলায় কনটেনমেন্ট জোন রয়েছে ৫৬৩টি। অন্য দিকে উত্তর দিনাজপুরে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৩০৮ হলেও সেখানে কনটেনমেন্ট জোন ৫০২টি।
মনে করা হচ্ছে, গত কয়েক দিনে এই দুই জেলায় সুস্থতার সংখ্যায় বৃদ্ধি আসা এর পেছনে অন্যতম কারণ। বর্তমানে পূর্ব বর্ধমানে মোট ৫,৮০৮ জন রোগীর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪,৮০১ জন। সুস্থতার হার ৮২.৬২ শতাংশ।
গত সোমবার পূর্ব বর্ধমানে সক্রিয় রোগী ছিলেন ৬২৮ জন। অর্থাৎ চার দিনে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা এই জেলায় কমেছে ৭৬। অথচ, গত কয়েক দিনে কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা এই জেলায় কমেনি। কিন্তু নতুন কিছু জায়গা এই তালিকায় যোগ হয়েছে। সাধারণত একটা অঞ্চলকে কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হলে ১৪ দিন কড়াকড়ি আরোপিত থাকে। সে কারণেই কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা সক্রিয় রোগীর থেকে বেশি।
একই কথা উত্তর দিনাজপুরের ক্ষেত্রেও। সপ্তাহখানেক আগেই এই জেলায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা পাঁচশোর বেশি ছিল। সেটা এখন ক্রমে কমে তিনশোতে এসে ঠেকেছে। যে দ্রুততায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমছে, কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা কমার ক্ষেত্রে কিন্তু সেই দ্রুততা দেখা যাচ্ছে না।
বর্তমানে, রাজ্যে মোট কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা ৩,২৩৬। কলকাতায় কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা ১ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩।
খবরঅনলাইনে আরও পড়তে পারেন
ফ্যাশন ডিজাইনার শর্বরী দত্ত প্রয়াত
উঃ দিনাজপুর
যোগেন্দ্র যাদবের ‘স্বরাজ ইন্ডিয়া’র নেতৃত্বে উত্তরবঙ্গে দানা বাঁধছে ভুট্টা চাষিদের আন্দোলন
মঙ্গলবার অঞ্চলের একাংশের কৃষক একত্রিত হয়ে একটি মিছিলে অংশ নেন। মিছিলটি করণদিঘির বিডিও পর্যন্ত যায়…

করণদিঘি, উত্তর দিনাজপুর: ভুট্টার ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের (MSP) দাবিতে যোগেন্দ্র যাদবের দল স্বরাজ ইন্ডিয়ার কৃষক সংগঠন ‘জয় কিষাণ আন্দোলন’-এর নেতৃত্বে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ভুট্টা কৃষকরা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে নেমেছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার অঞ্চলের একাংশের কৃষক একত্রিত হয়ে একটি মিছিলে অংশ নেন। মিছিলটি করণদিঘির বিডিও পর্যন্ত যায় এবং সেখানে স্মারকলিপি জমা দেয়। বিডিও-র সঙ্গে বৈঠকে নেতৃত্ব নিজেদের দাবিগুলির অবিলম্বে সমাধানের উপর জোর দেন।
সংগঠন দাবি করেছে, কয়েক হাজার কৃষক ইতিমধ্যেই পত্র মারফত কেন্দ্রীয়স্তরে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী ও কৃষি সচিব এবং রাজ্যস্তরে রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী, রাজ্যের কৃষি সচিব, সংশ্লিষ্ট সাংসদ, বিধায়ক, জেলা শাসক ও বিডিও-দের সমস্যার কথা জানিয়ে প্রতিকার দাবি করেছিল। সাড়া না পেয়ে এখন কৃষকরা পথে নেমে আন্দোলন শুরু করেছে।
সেই আন্দোলনের অংশ হয়ে এ দিন করণদিঘি ব্লক ও আশপাশের কৃষকরা বিডিও-র দফতরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন। দলীয় নেতৃত্ব জানান, স্বরাজ ইন্ডিয়ার (Swaraj India) সর্ব-ভারতীয় সভাপতি যোগেন্দ্র যাদব (Yogendra Yadav) ও স্বরাজ ইন্ডিয়ার সর্ব-ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও অখিল ভারতীয় কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় সমিতির আহ্বায়ক অভীক সাহা এই আন্দোলনকে সমর্থন করে কৃষকদের অভিদন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন। সমাবেশে তা শোনানো হয়।
যোগেন্দ্র যাদব বলেন, “ভুট্টার ন্যূনতম সমর্থন মূল্য আদায়ের দাবিতে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকেরা যে আন্দোলন করছে, আমি তাকে পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। ন্যায্য অধিকার আদায়ের এই আন্দোলনের জন্য পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের অভিনন্দন জানাই ও আন্দোলনের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি”।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দীনেশ সিংহ, শম্ভুলাল রায়, ইমদাদুল হক, আব্দুল হালিম, তুফান সিংহ, ফণীভূষণ সিংহ প্রমুখ স্থানীয় কৃষক নেতৃত্ব।

যে দাবিগুলো উঠে আসছে:
(১) ভুট্টা উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোতে সুবিধাজনক জায়গায় সরাসরি কৃষকদের থেকে ভুট্টা কেনার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক রাজ্য সরকারের ক্রয় কেন্দ্র খুলতে হবে
(২) ওই ক্রয় কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত কর্মচারী এবং অর্থের জোগান নিশ্চিত করতে হবে, যাতে বিনা বাধায় সমস্ত কৃষকরা ভুট্টা বিক্রি করতে পারেন।
(৩) কম দামে বিক্রি করে ফেলতে বাধ্য হওয়া কৃষকদের লোকসান পূরণের জন্য পঞ্চায়েতস্তরে ব্যবস্থা করতে হবে।

(৪) রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ভুট্টার জন্য কার্যকরী মুল্য সহায়তা প্রকল্প ঘোষণা ও তার রূপায়ণ করতে হবে।
(৫) রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ভুট্টার জন্য কার্যকরী মুল্য ঘাটতি পূরণ প্রকল্প ঘোষণা ও তার রূপায়ণ করতে হবে।
উঃ দিনাজপুর
চোপড়া ‘ধর্ষণ-খুনে’র ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন বিজেপি সাংসদ
ঘটনার পর দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

ওয়েবডেস্ক: উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur) এক মাধ্যমিক পাশ ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার উত্তাল হয়ে ওঠে চোপড়া। একই সঙ্গে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপের দাবি তুলে রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন স্থানীয় বিজেপি সাংসদ।
কলকাতার সঙ্গে শিলিগুড়ির সংযোগরক্ষাকারী ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে এ দিন বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মানুষ। চোপড়া (Chopra) থানার আইসি এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাঁদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
তবে প্রায় ঘণ্টাদুয়েক ধরে বিক্ষোভের জেরে রীতিমতো রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক। টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি চললে, পুলিশও বিক্ষোভকারীদের পাল্টা তাড়া করে। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। এরই মধ্যে জাতীয় সড়কে কয়েকটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
কলকাতা থেকে প্রায় ৫০০ কিমি দূরে চোপড়ার এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে। উত্তেজিত জনতা দাবি করেন, দোষীদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত জাতীয় সড়ক অবরোধ চলবে।

ঘটনায় প্রকাশ, বিকেল ৫টা নাগাদ পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে জাতীয় সড়ক থেকে সরিয়ে দিলেও পাশের একটি রাস্তায় ফের বিক্ষোভ শুরু হয়। এমনকী সূত্রের দাবি, সেখান থেকে পুলিশের উদ্দেশে তীর-ধনুক নিয়ে আক্রমণ চালানো হয়।
নিহত মাধ্যমিক পাশ স্কুলছাত্রীর দিদি জানিয়েছেন, ভোররাতে বোনকে খুঁজে না পেয়ে তার খোঁজ শুরু করা হয়। এর পর একটি গাছের নীচে তাঁর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
আরও পড়তে পারেন: বিজেপি নেত্রীর বোনকে ‘ধর্ষণ-খুনে’র প্রতিবাদে রণক্ষেত্র চোপড়া
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, গণধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে ছাত্রীকে। ঘটনাস্থলে দু’টি সাইকেল এবং কয়েকটি মোবাইল পাওয়া যায়। যেগুলি পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

কিশোরীর দেহ উদ্ধারের পরই বিক্ষোভের সূত্রপাত। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ জানায়, মৃত্যু রহস্যের তদন্ত চলছে।
আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ঘটনার পর দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা (Raju Bista) রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি অবিলম্বে বিষয়টিতে তাঁদের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। শাসক দলের ছত্রছায়াতেই দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত বলে তিনি অভিযোগ তুলেছেন।