কলকাতা: রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলির ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে বিক্রি হওয়া জীবনদায়ী ওষুধের গুণমান যাচাই করতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ড্রাগ কন্ট্রোল। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশে প্রতিটি জেলায় ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে নজরদারি চালাবে ড্রাগ কন্ট্রোল ও স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকরা।
সোমবার স্বাস্থ্য ভবনে প্রতিটি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মেদিনীপুর ও বারুইপুর কাণ্ডের পরই কড়া ব্যবস্থা
সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সন্তান প্রসবের পর পাঁচ প্রসূতি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তদন্তে দেখা যায়, তাঁদের দেওয়া স্যালাইনে গুণগত ত্রুটি ছিল। দ্রুত নিষিদ্ধ করা হয় সেই স্যালাইন।
এরপর বারুইপুরের একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার কারখানায় ড্রাগ কন্ট্রোলের অভিযান চালিয়ে দেখা যায়, নিয়ম না মেনেই তৈরি হচ্ছে ওষুধ। ফলে ওই সংস্থার ১৭টি ওষুধ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
এই ঘটনার পরই রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর নড়েচড়ে বসে। ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানগুলিতে বিক্রি হওয়া ওষুধের গুণমান কেমন, তা খতিয়ে দেখতে মাঠে নামছে ড্রাগ কন্ট্রোল।
প্রতি সপ্তাহে নজরদারি, ব্যাচ নম্বর ও ল্যাব চেক
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, এবার থেকে রাজ্যের ১১৮টি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে নিয়মিত ওষুধের ব্যাচ নম্বর মিলিয়ে পরীক্ষা করা হবে। প্রয়োজনে ওষুধ প্রস্তুতকারী ল্যাবগুলিতেও অভিযান চালানো হবে।
বিশেষত, শিশু ও প্রসূতিদের জন্য বিক্রি হওয়া ওষুধগুলোর গুণমান কঠোরভাবে খতিয়ে দেখবে ড্রাগ কন্ট্রোল। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হচ্ছে কিনা, তা-ও তদারকি করা হবে।
এক স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিক জানান, “প্রতি সপ্তাহে রাজ্যের সমস্ত ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকানে ‘সারপ্রাইজ ভিজিট’ করা হবে।”
ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান: কীভাবে কাজ করে?
২০১২ সালের শেষ দিকে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। বর্তমানে রাজ্যে ১১৮টি দোকানে ৬৭ শতাংশ ছাড়ে ১৪২ ধরনের ওষুধ বিক্রি হয়।
এই উদ্যোগে অসংখ্য দরিদ্র মানুষ কম খরচে প্রয়োজনীয় ওষুধ পাচ্ছেন। তবে, সম্প্রতি একের পর এক গুণগত ত্রুটির ঘটনা সামনে আসায় এখন থেকে আরও কঠোর নজরদারি চালাবে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর ও ড্রাগ কন্ট্রোল।