কলকাতা: শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার জন্য হকারদের একমাস সময় দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দোকান সরিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে মঙ্গলবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বলেন, “হকারদের আমি এক মাস সময় দিচ্ছি। এর মধ্যে সব গোছাতে শুরু করুন। রাস্তা পরিষ্কার রাখতে হবে। আমাদের সার্ভে চালু থাকবে। আপনাদের কোথায় জায়গা দেওয়া যায়, তা সরকার দেখবে। গোডাউনের ব্যবস্থাও করবে। কিন্তু রাস্তা দখল করা যাবে না।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “কাউকে বেকার করার অধিকার আমাদের নেই। তবে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। আমি চাই না কারও ব্যবসা বন্ধ হোক। কিন্তু বেশি সময় দেওয়া যাবে না।”
মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করেন যে, হকারদের সমস্যার মূল কারণ প্রশাসনের পরিকল্পনার অভাব। তিনি বলেন, “হকারদের দোষ দিয়ে কী লাভ? দোষ তো আমাদেরই। আমরা নিউ মার্কেট এলাকায় একটা বিল্ডিং বানিয়ে দিচ্ছি না কেন? যেখানে ওঁরা বসবেন। এটা আমাদেরই করতে হবে। হকারেরা সেখানে থাকবেন।”
গ্র্যান্ড হোটেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গ্র্যান্ডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক কড়া। সেখানে দেশ-বিদেশের তারকা, অভিনেতারা এসে থাকেন। নিরাপত্তা রাখতে হয়। হঠাৎ করে সেখানে কিছু একটা গন্ডগোল হলে কী হবে? সঙ্গে সঙ্গে তো এনআইএ পাঠিয়ে দেবে। তাই সেই ঝুঁকি আমরা নেব না। আর যাঁরা বলছেন, গ্র্যান্ডের সামনেই বসতে দিতে হবে, তাঁদের বিষয়টা বুঝতে হবে।”
বৈঠকে পুলিশকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পুলিশের লোভ বেড়ে গিয়েছে আজকাল। তারা গরিব হকারদের থেকে চাঁদা নিচ্ছে। মনে রাখবেন, আমার দল টাকা চায় না। আমি আগেও বলেছি। এখনও বলছি। দরকার হলে মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষে করব। তাই যে পুলিশকে ইন্ধন দিতে দেখা যাবে, তাকে সঙ্গে সঙ্গে সরানো হবে। কাউকে ছাড়ব না।”
অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল করা নিয়ে তিনি সতর্ক করেন, “যে এলাকায় বেআইনি দখল হবে সেখানকার কাউন্সিলরদের গ্রেফতার করা হবে। যত বড়ই নেতা হন, তাঁকে ছাড়া হবে না।” তবে ভাল কাজ হলে পুরস্কৃতও করবেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে, রাজ্যের বড় বাজারগুলোতে প্ল্যান চেয়েছেন এবং অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা রাখতে বলেছেন। মমতা বলেন, “আমার লক্ষ্য হকার উচ্ছেদ নয়। পুরো ব্যাপারটার একটা সৌন্দর্য বজায় রাখতে হবে। আগুন লাগবে না এমন জিনিস দিয়ে স্টল বানাতে হবে। প্রতিটি স্টলের নম্বর থাকবে। এক এক জন হকার এক একটি স্টল পাবেন।”
গত সোমবার, বিভিন্ন পুরসভা ও পুরনিগমের চেয়ারম্যান এবং মেয়রদের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর, দখলমুক্ত করার অভিযান শুরু হয়েছে। সেই অভিযান নিয়ে নতুন করে বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী।