ওয়াশিংটন: ক্ষমতায় আসার এক দিনের মধ্যেই সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র মঞ্চে এই ঘোষণা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে নির্বাচনী প্রচারে কখনো নারী-বিদ্বেষী, কখনো বর্ণ-বিদ্বেষী মন্তব্য করে প্রচারের আলোয় এসেছেন ট্রাম্প। এ বারের বিষয়টিও বেশ অভিনব। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে জমায়েত হওয়া ট্রাম্প-অনুরাগীদের ভিড়ের ‘আয়তন’ নিয়ে মতোনৈক্যের সূত্রপাত।
মার্কিন মুলুকের একাধিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, ২০০৯ সালের বারাক ওবামার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের চেয়ে ট্রাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা মানুষের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই কম। আর এই রকম মন্তব্যেই ভয়ানক খেপেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ”প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষের সমাগম হওয়া সত্ত্বেও ওরা বলছে সংখ্যাটা খুবই নগন্য”, প্রেসিডেন্টের মতে সাংবাদিকরাই নাকি পৃথিবীর সব চেয়ে অসৎ মানুষ। সিআইএ-র ভাষণে ওই সব সংবাদমাধ্যমকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দেন ট্রাম্প।
How does a vantage point matter? These photos were both taken at about noon. One is what Sean Spicer now has on display in WH briefing room. pic.twitter.com/5MYIClNhp8
— Matt Viser (@mviser) January 21, 2017
রিপাব্লিকান প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা প্রমাণে মরিয়া মার্কিন প্রসাশন একাধিকবার নানা তথ্য দিতে থাকেন বিতর্ক তৈরি হওয়ার পর থেকেই। প্রথমে প্রেস সেক্রেটারি সিন স্পাইসার বলেন, “সংবাদমাধ্যম এত নিশ্চিত ভাবে দু’টি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জমায়েত হওয়া মানুষের সংখ্যার তুলনা করছে কী ভাবে? ন্যাশনাল পার্ক কর্তৃপক্ষ সরকারি ভাবে কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি”। পরে স্পাইসারকে আবার বলতে শোনা যায়, ”নিঃসন্দেহে এটি বিশ্বের সব চেয়ে বড়ো জমায়েত”।
ট্রাম্প-বিরোধী মার্কিন সাংবাদিকদের দাবি, প্রেসিডেন্ট আসলে প্রচারের আলোয় থাকতে ভালোবাসেন, তাই ট্রাম্পের ঘোষিত যুদ্ধ কোনো সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে নয়, বরং তাদের উদ্ঘাটিত সত্যের বিরুদ্ধে। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, ভোটে জিতে ক্ষমতায় এলেও ডোনাল্ডের জনপ্রিয়তা ক্রমশই কমছে। ভিড়ের ‘আয়তন’-এর মতো তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিতর্ক তৈরি করা যে নিতান্তই হাস্যকর, তা স্বীকার করেছেন এই সাংবাদিকরা। তবে এঁদের মধ্যে কেউ কেউ ঘটনাটিকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁদের মত, ট্রাম্পের সমালোচনায় মুখর গণমাধ্যমগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা মার্কিন নাগরিকদের কাছে নষ্ট করার চেষ্টায় প্রথম দিন থেকেই তৎপর হয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শনিবার থেকেই সারা পৃথিবী জুড়ে মহিলারা ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়ার বিরোধিতায় মুখর হয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক অঞ্চল ছাড়াও বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে লন্ডন, প্যারিস, সিডনির প্রতিবাদী মানুষ।