Home নাটক থিয়েটার জেগে থাক ২৪ ঘণ্টা, ‘মিউনাস’ আয়োজিত অভিনব নাট্যোৎসব

থিয়েটার জেগে থাক ২৪ ঘণ্টা, ‘মিউনাস’ আয়োজিত অভিনব নাট্যোৎসব

অজন্তা চৌধুরী

এ বছর ‘মিউনাস’-এর রজত জয়ন্তী বর্ষ। সেই উপলক্ষ্যে অভিনব নাট্যোৎসব আয়োজিত হল ‘মিউনাস’-এর উদ্যোগে। তপন থিয়েটারে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল টানা ২৪ ঘণ্টা নাট্যোৎসব – ২৫ জানুয়ারি থেকে ২৬ জানুয়ারি। উৎসবে মঞ্চস্থ হল ২৫টি নাটক। এতে যোগ দিয়েছিল কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার নাট্যদল।

নাট্যদলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের মেলবন্ধনের উদ্দেশ্য নিয়ে শুরু হয়েছিল এই অভিনব নাট্যোৎসব। মিউনাস নাট্যদলের কর্ণধার উৎসব দাসের কথায়, “আমাদের নাট্যদলের এ বার ২৫ বছর। যাত্রা শুরু  হয়েছিল ২০০০ সালে। টানা ২৪ ঘন্টা নাট্যোৎসব এ বার নবম বর্ষে। গত বছর ২৫ জন মহিলা পরিচালক তাঁদের নাটক মঞ্চস্থ করেছিলেন। এ বছরও ছিল নতুনত্ব। যেটা আগে কোথাও কখনও হয়নি বলেই আমার মনে হয়। টানা ২৪ ঘন্টায় যে ২৫টি নতুন নাটক মঞ্চস্থ হয়ে গেল সেগুলো একেবারেই নতুন লেখা নাটক, যার প্রথম প্রিমিয়ার হল এই নাট্যোৎসবে।”

munus adda 14.02

২৫ জানুয়ারি বিকেল ৪টেয় উৎসবের উদ্বোধন হয়। এ দিন দুপুর ১.৩০টায় অনুষ্ঠিত হয় ‘নাটককারদের আড্ডা’। মূল বিষয় হিসেবে উঠে আসে নাট্যকার ও পরিচালক সত্তার দ্বন্দ্ব। অর্থাৎ নাট্যকার এবং পরিচালক যদি একই ব্যক্তি হন, সে ক্ষেত্রে কি তাঁর নাট্যকার ও পরিচালক সত্তার মধ্যে কোনও সংঘাত তৈরি হয়? এর পক্ষে ও বিপক্ষে বক্তারা তাঁদের সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেন।

‘নাটককারদের আড্ডা’য় যোগ দিয়েছিলেন সেই সব নাট্যকার, যাঁদের নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে এই নাট্যোৎসবে। তাঁদের হাতে এ দিন সংস্থার পক্ষ থেকে তুলে দেওয়া হয় উপহার ও সাম্মানিক। এই নাট্যকার-আড্ডার যৌথ সঞ্চালনায় ছিলেন সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় ও সুচরিতা বড়ুয়া চট্টোপাধ্যায়।

উৎসবে প্রথম নাটক হিসেবে মঞ্চস্থ হয়েছে ‘বঙ্গ পুতুল নাট্যদলের’ পুতুল-নাট্য, ‘নারদ নারদ’। নাটকের গান পরিবেশন করেন অরিন্দম রায়। পথনাটিকা ‘দুর্নীতি দর্পণ’ পরিবেশনে ছিল ‘যাদবপুর ব্যতিক্রম’। এই নাট্যোৎসবে মঞ্চস্থ হয় আয়োজক সংস্থা ‘মিউনাস’ নাট্যদলের নতুন প্রযোজনা ‘আপনাকে বলছি’। বর্তমান পরিস্থিতিতে অধিকাংশ মানুষ সত্যি কথা বলতে ভয় পায়, প্রতিবাদ করতে ভয় পায়। এই বিষয়টি উঠে এসেছে নাটকে।

এ ছাড়াও নাট্য উৎসবে মঞ্চস্থ হয়েছে – ‘বেহালা কাব্য তীর্থ’-এর ‘আগুন থেকে জানি’, ‘কালিন্দী নাট্য সৃজন’-এর ‘কাগজের নৌকা’, ‘জলপাইগুড়ি উজান’-এর ‘মনে পড়ে’, ‘বজবজ অঙ্গন নাট্য সংস্থা’র ‘স্বচ্ছতোয়া’, ‘এবং আমরা’ নাট্যদলের ‘সংঘাত’, ‘কসবা উত্তরণ’-এর ‘যে যুদ্ধ হয়নি এখনও’, ‘খিদিরপুর রং-বে-রং’-এর ‘সংখ্যা’, ‘ভাঁটা থিয়েটার লেবার’-এর ‘সিটি’, ‘রাসবিহারী সাংকেতিক থিয়েটার গ্রুপ’-এর ‘লেডি ম্যাকবেথ উবাচ’।

এই নাট্য উৎসবে আরও পরিবেশিত নাটক – ‘করঞ্জি কলকাতা সৃজন’-এর ‘দায়’, ‘নাট্যার্ঘ্য’-এর ‘ম্যাজিসিয়ান’, ‘জয়নগর এসনা’-র ‘পাওনাদার ও সাজাহান’, ‘ইছাপুর সন্ধিক্ষণ’-এর ‘মাতৃভূমি’, ‘সাউথ কলকাতা স্নাইন’-এর ‘অবিনশ্বর’, ‘মানিকতলা মিলন মন্দির’-এর ‘বন্দী’, ‘সরস্বতী নাট্যশালা’র ‘মনোপ্যাথ’, ‘সোমা মাইম থিয়েটার’-এর ‘নাক ডুমা ডুম Doom’ (নির্বাক নাটক), ‘নবাঙ্কুর’-এর ‘ডিরেক্টরস গাট’, ‘অনীক’-এর ‘ডার্লিং’, ‘চণ্ডীতলা প্রম্পটার’-এর ‘ধোঁয়াশা’, ‘পূর্ব সিঁথি নাট্য সৃজনী’র ‘কলকাতার সক্রেটিস’ এবং ‘গড়িয়া একত্র’-এর ‘চ ক র ব র তী’।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version