ওয়েবডেস্ক: ভিন ধর্মের মানুষের প্রতি বিরুদ্ধাচরণ যদি স্বাভাবিকত্বে উত্তীর্ণ হয়, তবে সভ্যতার সামনে তার থেকে বড়ো সংকট আর কিছুই হতে পারে না। যা প্রতিটা মুহূর্তে টের পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে বিতর্ক আছেই, সাম্প্রদায়িকতা কখনো খোলসে আবার কখনো প্রকাশ্যে। তা নিয়ে মলাটবন্দি সুনিপুণ তর্ক-বিতর্কের কথামালা।
সুমন কল্যাণ মৌলিকের সম্পাদনায় রূপালী প্রকাশনীর এই সংকলনও ‘বিতর্কে’র ঊর্ধ্বে নয়। বাস্তব ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে যাঁরা অভ্যস্ত নন, তাঁরা যে সত্যি কথা শুনতেও চাইবেন না, তা আর নতুন কী। কিন্তু সংকটের সব থেকে গভীরে নিমজ্জিত হওয়ার আগে জ্ঞানচক্ষু উন্মোচিত হলে মন্দ কী!
সংকলনটির সম্পাদকের কথায়, “আমরা এমন এক তমসাবৃত সময় বাস করছি যখন প্রতি মুহূর্তে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা উগ্র সাম্প্রদায়িকতা, অসহিষ্ণুতা ও নির্বোধ জাতীয়তাবাদের কারবারিদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছে মানবিকতা, যুক্তিবাদ ও মুক্তচিন্তা। সাম্প্রদায়িকতার ইতিহাস পুরানো কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তার যে রূপ দেখা যাচ্ছে তার সবচেয়ে বড়ো বৈশিষ্ট্য হল রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব প্রাপ্ত মানুষজন এই উগ্র ও অন্ধ মতাদর্শের সবচেয়ে বড়ো উৎসাহদাতা”।
মৌলবাদের বিস্তার লাভে শাসক কী ভাবে উল্লেখ্যনীয় ভূমিকা নিচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সম্পাদক বলেন, “নেহেরু যুগের সামাজিকতায় প্রকাশ্যে নিজের সাম্প্রদায়িক পরিচয় দেওয়ার মধ্যে যে লজ্জা ছিল, বর্তমান শাসকেরা সেটা মুছে দিতে পেরেছেন। খুল্লামখুল্লা হিন্দুত্ববাদ আজ গর্বের বিষয়। সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ আজ এতটাই ভয়ঙ্কর যে কে কী খাবে, কি পড়বে, কি লিখবে সবটাই নিয়ন্ত্রণ করবে ধর্মান্ধ মানুষ। বর্তমানে ধর্মীয় মৌলবাদ বিচিত্র আকারে তার ডালপালা গজিয়েছে”।
[ আরও পড়ুন: ব্যক্তি চৌহদ্দি ছাড়িয়ে যেখানে বিপন্ন গোটা দেশ! ]
কিন্তু সমালোচনা তো আছেই, সংকট নিরসনের কোনো দিশা রয়েছে কি এই সংকলনে। সম্পাদকের সাফ জবাব, “এই বইটি বর্তমানে ঘটে যাওয়া নৃশংস মৌলবাদ নির্দশন তুলে ধরেছে। বিজ্ঞানের আলোতে সবকিছু বিচার করে তার পরেই তা গ্রহণ করা আদর্শ পথ। সেই আলোর পথের দিশারি এই বইটি”।
সাম্প্রদায়িকতা তর্ক বিতর্ক/সম্পাদনা: সুমন কল্যাণ মৌলিক/ মূল্য: ২৮০ টাকা
রূপালী প্রকাশনীর একই প্রসঙ্গে আরও একটি বই
সাম্প্রদায়িকতা ও বর্তমান ভারত/ গৌতম রায়/ মূল্য: ২৫০ টাকা
কলকাতা বইমেলা ২০২০-তে রূপালীর স্টল নম্বর: ২৪৯