মহাকাশ বিজ্ঞান চর্চায় একের পর এক সাফল্যের জেরে এর মধ্যেই বিশ্বের প্রথম কয়েকটি দেশের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে ভারত। এ বার ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানীদের সাফল্যের মুকুটে যোগ হল নয়া পালক। মহাকাশ অভিযান নিয়ে ইসরো বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
ভারতের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো প্রথম অ্যানালগ স্পেস মিশনের কথা ঘোষণা করেছে। মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে কোন কোন প্রতিকূলতা আসতে পারে? কী ভাবে সে সব সমস্যার সঙ্গে যুঝতে হবে? কী ভাবে সমস্যার মোকাবিলা করা যাবে? এ সব প্রশ্নের উত্তর পেতে ইসরো লাদাখের লেহ-তে একটি জায়গায় অ্যানালগ স্পেস মিশন শুরু করেছে। এমন মহাকাশ অভিযান ভারতে প্রথম। ইসরোর বিজ্ঞানীদের আশা ‘হ্যাব-১’ (Hab-1) নামে ওই মিশন অনেক প্রশ্নের উত্তর দেবে।
‘হ্যাব-১’ মিশন হিউম্যান স্পেসফ্লাইট সেন্টার, ইসরো, এএকেএ স্পেস স্টুডিও, লাদাখ বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি বোম্বে ও লাদাখ স্বশাসিত পার্বত্য উন্নয়ন পরিষদ যৌথ ভাবে তৈরি করেছে। এতে আছে নিজস্ব হাইড্রোপনিক্স ফার্ম, রান্নাঘর ও শৌচাগারের ব্যবস্থা।
কী কাজ করবে ‘হ্যাব-১’ মিশন?
লেহ-তে এক প্রত্যন্ত জনমানবহীন এলাকায় অ্যানালগ স্পেস মিশন শুরু করেছে ইসরো। লেহ-র এই বিশেষ এলাকায় গ্রহান্তরের বা মহাকাশের মতো পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। ইসরোর বিজ্ঞানীদের মতে, এই বিশেষ পরিবেশ মহাকাশচারীদের মহাকাশে খাপ খাওয়ানো, সমস্যার মোকাবিলা করা ও প্রতিকূল মুহূর্তেও লড়াই করা শেখাবে। এই অ্যানালগ স্পেস মিশন মহাকাশচারীদের জানাবে কত রকম ভাবে সমস্যা আসতে পারে।
আগামী দিনে ভারতীয় মহাকাশচারীদের জন্যও এই পরীক্ষা অনেক কাজে আসবে বলে মনে করছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। গগনযান অভিযানের মাধ্যমে ভারতীয় মহাকাশচারীদের মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে ইসরো। অ্যানালগ স্পেস মিশন ‘হ্যাব-১’-এর মাধ্যমে জানা যাবে ভারতীয় মহাকাশচারীরা কত রকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারেন।
কোন কোন পরীক্ষা হবে লেহ-তে?
নতুন প্রযুক্তি কেমন ভাবে কাজ করছে, এ সবের পরীক্ষা হবে। রোবোটিক যন্ত্রপাতি কেমন কাজ করছে? মানুষের বসবাসের পক্ষে তা কতটা যোগ্য? কী রকমের যান সেখানে ব্যবহার করা হবে? মহাকাশে যোগাযোগ ব্যবস্থা কী ভাবে উন্নত করা যায়? এ সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন বিজ্ঞানীরা।
আগামী দিনে চাঁদ, মঙ্গল, শুক্র ও পরে গ্রহান্তরে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করেছে ভারত। ইসরো ২০৩৫ সালের মধ্যে ভারতের মহাকাশ কেন্দ্র ‘ভারতীয় অন্তরীক্ষ কেন্দ্র’ ও ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। সে ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা সে সব মহাকাশ অভিযানের পথকে আরও বেশি সহজ করে দেবে।