চাঁদের মাটিতে মানুষের পা আগেই পড়েছে। কিন্তু শুধু চন্দ্রাভিযানে যাওয়াই নয় চাঁদে দীর্ঘ সময় ধরে থাকার বিষয় নিয়েও চিন্তিত বিজ্ঞানীরা। তবে চাঁদের বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর চেয়ে আলাদা। তাই সেখানে দীর্ঘ মেয়াদে থাকার জন্য বিশেষ রকম ব্যবস্থা থাকতে হবে। কিন্তু সাম্প্রতিক আবিষ্কারে জানা গেছে চাঁদের মাটিতে থাকার ব্যবস্থা চাঁদ নিজেই করে রেখেছে।
আদিম মানুষ গুহায় থাকত। বিজ্ঞানীরা চাঁদেও সেরকম গুহার খোঁজ পেয়েছেন চাঁদের মাটিতে। তবে এই গুহা পাহাড়ের খাঁজে নয় চাঁদের মাটিতে কিছুটা তলায় রয়েছে। ৫৫ বছর আগে অ্যাপলো ১১ চেপে চাঁদের মাটিতে যেখানে আমেরিকার মহাকাশচারী নিল আর্মস্ট্রং ও বাজ অলড্রিন নেমেছিলেন সেখানে থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে প্রায় ১০০ মিটার মাটির তলায় বিস্তৃত এলাকা জুড়ে গুহার খোঁজ মিলেছে। ইতালির ট্রেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ গবেষক চাঁদের ‘Mare Tranquillitatis (Sea of Tranquility)’ নামক জায়গায় মাটির তলায় গুহার খোঁজ পান। নাসার Lunar Reconnaissance Orbiter এর র্যাডারের সাহায্যে মাপজোক করেন গবেষকরা। তাঁদের গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে Nature Astronomy নামক জার্নালে।
এই প্রথম চাঁদের মাটিতে গুহার খোঁজ মিলল। বিজ্ঞানীদের অনুমান, এমন একটা নয় শতাধিক গুহা রয়েছে চাঁদের মাটিতে। বহু কোটি বছর আগে চাঁদের মাটিতে এমন গুহা তৈরি হয়। তখন চাঁদে অগ্নুৎপাত হত। সে সময় গলিত লাভাস্রোত জমাট বেঁধে এই গুহা তৈরি হয়। গুহায় যে গর্ত বা খোলা মুখ ধরে পৌঁছতে হবে সেটি সোজা নেমে গেছে। লিফট বা দড়ি বেয়ে নীচে নামতে হবে।
নাসা চাঁদের মাটিতে দীর্ঘ সময় মানুষের বসবাসের জন্য লুনার বেস তৈরির পরিকল্পনা করেছে। রাশিয়া, চিনের মতো মহাকাশ বিজ্ঞানে এগিয়ে থাকা অনেক দেশই চাঁদের মাটিতে স্থায়ী বসবাসের ব্যবস্থা পাকা করতে চাইছে। এই পরিস্থিতিতে গুহার খোঁজ নিঃসন্দেহে বিজ্ঞানীদের নতুন দিশা দেখাবে বলে মনে করা হচ্ছে।