শম্ভু সেন
নজরমিনারের ছায়ায় বসে একটু জিরিয়ে নিচ্ছিলাম। প্রথম দু’ দফায় ৫২টা সিঁড়ি, তার পর লোহার প্যাঁচানো সিঁড়ির ১২টা ধাপ ভেঙে আমরা আপাতত নজরমিনারের চুড়োয়।
গড় বিষ্ণুপুর বা বন বিষ্ণুপুরের আদত চেহারাটা কেমন ছিল, তার কিছুটা নমুনা মেলে শহরের এই নিরিবিলি প্রান্তে এলে। বসতি শেষ, লাল মাটি, ঢেউখেলানো রুখাশুখা কাঁকুড়ে জমি, গেরুয়া নদীখাত, ছোটনাগপুরের চড়াই-উতরাইয়ের শুরু এখানে। যাই যাই করেও এখনও কিছুটা রয়ে গিয়েছে শালের জঙ্গল। বহু দূরে পাহাড়ের ধূসর রেখা। নজরমিনার থেকে হঠাৎ চোখ চলে যায় লালবাঁধের জলে। এই গনগনে গ্রীষ্মেও তার গায়ে তেমন আঁচ পড়েনি।
গাইয়ে, বাজিয়ে, সুর/তিনে বিষ্ণুপুর। কিন্তু শুধু কি গান-বাজনা নিয়েই বিষ্ণুপুর ? তার আসল খ্যাতি তো টেরাকোটা মন্দিরের জন্য। এ ছাড়াও আছে বালুচরী, দশাবতার তাস, শাঁখ, লণ্ঠন আর মতিচুর। তাই অনেক কিছু নিয়ে বিষ্ণুপুর। কিন্তু রাজা রঘুনাথ সিংহ আর লালবাঈয়ের প্রেমকাহিনিকে কি উপেক্ষা করা যায় ? বিশেষত, রঘুনাথ-লালবাঈয়ের সময় থেকেই জমজমাট হয়ে উঠেছিল বিষ্ণুপুর রাজদরবার। বিষ্ণুপুর তখন দেশ-বিদেশের গাইয়ে-বাজিয়েদের এক নিশ্চিন্ত আশ্রয়। আর তাঁদের হাত ধরেই বিষ্ণুপুর ঘরানার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল। অদূরের লালবাঁধ আরেক বার মনে করিয়ে দিল সেই প্রেমকাহিনি, যে কাহিনি নিয়ে আজও যাত্রাপালা চলে বিষ্ণুপুরে, যে কাহিনিকে অমর করে রেখেছেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক রমাপদ চৌধুরী তাঁর উপন্যাসে।

টেরাকোটার শহরে আমরা ভ্রমণ শুরু করেছিলাম একেবারে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের লালগড় প্রকৃতি উদ্যান থেকে। এই উদ্যানের নজরমিনার থেকেই এক নজর দেখছিলাম বিষ্ণুপুরকে। লালগড় ১৭ শতকে মল্লরাজাদের তৈরি করা গড়। গড়কে ঘিরে যে পরিখা ছিল, তার খাতটি পরিষ্কার বোঝা যায়। এখানে ছিল পাথরের জলাধার। আর এই জলাধারের মাছে ৪০ ফুট গভীর একটি কুয়ো আছে। বাঁকুড়া জেলা পরিষদ এই লালগড়কে ঘিরে প্রকৃতি উদ্যান গড়ে তুলেছে।
আর্দ্রতায় হিমসিম আমরা। তাই নজরমিনারের ছায়ার লোভ কাটাতে পারছিলাম না। আলসেমি ভাব আসছিল। কিন্তু যার জন্য বিষ্ণুপুর আসা, সেটাই তো শুরু হয়নি এখনও। তাই গরম আমাদের যতই জ্বালাক, গা ঝাড়া দিয়ে শুরু হল মন্দির-দর্শন। সামান্য দূরেই রাধামাধব মন্দির। ১৭৩৭-এ রানি চূড়ামণি দেবী এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মাকড়া পাথরের এই একরত্ন মন্দিরের গায়ে কৃষ্ণলীলা, পুরাণ-কথা ও সমসাময়িক জীবনযাত্রা বর্ণিত। রাধামাধব মন্দিরের সুচর্চিত অঙ্গনের মধ্য দিয়ে পূর্ত দফতরের কর্মী আবাস বাঁয়ে রেখে পৌঁছে গেলাম কালাচাঁদ মন্দিরে। দুই মন্দিরের চেহারায় খুব একটা তফাত নেই। এটিও মাকড়া পাথরের একরত্ন, মন্দিরের সামনের দিকে পঙ্খের অলঙ্করণে কৃষ্ণলীলা, পুরাণ-কথা ইত্যাদি বিধৃত। রয়েছে বাংলার দোচালা ধাঁচের তিন খিলানের প্রবেশদ্বার। ১৬৫৬ সালে রঘুনাথ সিংহের আমলে নির্মিত এই মন্দির বিষ্ণুপুরের একরত্ন মন্দিরগুলির মধ্যে সব চেয়ে পুরনো।
এলাম রাধাগোবিন্দ মন্দিরে, রাধামাধবের বিপরীতে। ঝামা পাথরে তৈরি এই একরত্ন মন্দিরের চত্বরে রয়েছে ছোট পাথরের রথ। রাজা গোপাল সিংহের পুত্র কৃষ্ণ সিংহের প্রতিষ্ঠা করা এই মন্দিরের কাজ অনেক নষ্ট হয়ে গেলেও এর পরিবেশটি ভারী সুন্দর। রাধাগোবিন্দ মন্দির দেখে বেরিয়ে আসার পথে ডান দিকে পড়ল নন্দলাল মন্দির। মাকড়া পাথরের একরত্ন মন্দিরের গায়ে রয়েছে পঙ্খের কাজ। এই পথেরই বাঁ দিকে একটু ভিতরে দু’টি বড় মন্দির ও একটি ছোট মন্দির নিয়ে জোড় মন্দির শ্রেণি। তিনটিই একরত্ন মন্দির। জোড় মন্দির চত্বরে পর্যটকের পা পড়ে কম।

লালমাটির রাস্তাটি এসে মিলেছে পিচের রাস্তায়, দলমাদল রোডে। এখানেই প্রথমে দর্শন হল ছিন্নমস্তা, তার পর দলমাদল। ছিন্নমস্তা মন্দির আধুনিক। দলমাদলের পরিবেশ নষ্ট করেছে আধুনিক বিষ্ণুপুর। কয়েক বছর আগেও দলমাদল কামান দেখতে এলে মনে হত শহরের বাইরে চলে এসেছি। এর ইতিহাসের সঙ্গে মিশে যেত এর পরিবেশ। সব মিলিয়ে মনের মধ্যে কেমন একটা অনুভূতির সৃষ্টি করত। দল তথা শত্রু মর্দন তথা দমন করেছিল, তাই এই কামানের নাম দলমর্দন, সেখান থেকেই লোকমুখে দলমাদল।
এ বার টিকিট কেটে দ্রষ্টব্য দেখার পালা। বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত তিনটি স্থাপত্য দেখতে হয় টিকিট কেটে — রাসমঞ্চ, শ্যামরায় আর জোড়বাংলো তথা কৃষ্ণরায় মন্দির। ৫ টাকার টিকিট কেটে প্রথমে রাসমঞ্চে প্রবেশ। এক অভিনব স্থাপত্য, পুরাতত্ত্ব বিভাগ এটিকে অদ্বিতীয় আখ্যা দিয়েছে। বিষ্ণুপুরের ‘আইকন’ রাসমঞ্চ। মাকড়া পাথরের বেদী, তার ওপর সারি সারি ইটের থাম ও খিলান। মূল গর্ভগৃহকে ঘিরে রেখেছে তিনটি খিলানাবৃত্ত প্রদক্ষিণ-পথ। সৌধটির উপরের দিকটি পিরামিড আকৃতির, মাঝের দিক বাংলা চালের মতো এবং নীচের খিলানগুলো ইসলামিক স্থাপত্যের অনুসারী। রাসমঞ্চ আদতে মঞ্চই, মন্দির নয়। মল্লরাজ বীর হাম্বির আনুমানিক ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে এই মঞ্চটি নির্মাণ করান। মল্লরাজাদের আমলে রাস উৎসবের সময় বিষ্ণুপুরের সমস্ত রাধাকৃষ্ণ বিগ্রহ এখানে আনা হত সাধারণ মানুষের দর্শনের জন্য।
রাসমঞ্চ থেকে জোড়বাংলো যাওয়ার পথে পড়ল গুমঘর, জানলা-দরজাবিহীন প্রায় চার তলা সমান উঁচু ইটের চৌকোণা স্থাপত্য। কী ছিল এটি ? নানা মুনির নানা মত। কেউ বলেন, অপরাধীদের এখানে ফেলে দেওয়া হত, কারও মতে এটি ছিল শস্যাগার, আর সংখ্যাগরিষ্ঠ পণ্ডিতের মতে এটি ছিল রাজবাড়ির জলের ট্যাঙ্ক। যে হেতু এর কাছাকাছি পোড়ামাটির তৈরি কিছু জলের পাইপ পাওয়া গেছে, তাই শেষোক্ত মতটি সঠিক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

চলে এলাম জোড়বাংলোয়। আর এক অভিনব স্থাপত্য। দু’টি দোচালা মন্দিরকে পাশাপাশি রেখে, দু’টি চালার সংযোগস্থলের মাঝখানে একটি চারকোনা চারচালা শিখর বসানো হয়েছে। আনুমানিক ১৬৫৫ খ্রিস্টাব্দে মল্লরাজ প্রথম রঘুনাথ সিংহের প্রতিষ্ঠিত এই কৃষ্ণরায়ের মন্দির তার অভিনব গঠনরীতির জন্যই জোড়বাংলো নামে পরিচিত। কিন্তু শুধু স্থাপত্যরীতির অভিনবত্বের জন্যই নয়, মন্দিরগাত্রের অনন্যসুন্দর অলঙ্করণের জন্যও এই মন্দির দেশের পোড়ামাটি স্থাপত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিদর্শন হিসাবে বিখ্যাত। পোড়ামাটির প্যানেলগুলি রীতিমতো নজর কাড়ে — ভীষ্মের শরশয্যা-সহ রামায়ণ-মহাভারতের নানা কাহিনি, তৎকালীন সামাজিক জীবনযাত্রার বিভিন্ন ছবি ফুটি উঠেছে পোড়ামাটিতে।
আবার গুমঘর। তার পশ্চিম দিকের সরু কাঁচা রাস্তা দিয়ে চলে এলাম বিষ্ণুপুরের আরেক অতুলনীয় নিদর্শন শ্যামরায় মন্দির অঙ্গনে। ১৬৪৩ সালে রাজা রঘুনাথ সিংহ প্রতিষ্ঠিত এই মন্দির পাঁচ চুড়োর, দক্ষিণমুখী। পোড়ামাটির অলঙ্করণের প্রাচুর্যে ইটের এই মন্দিরটি সর্বশ্রেষ্ঠ। টেরাকোটার কয়েক হাজার অলঙ্করণ রয়েছে এই মন্দিরের বাইরের ও ভিতরের দেওয়ালে। পাঁচ চূড়ার মধ্যের চূড়াটি আট কোণ বিশিষ্ট। মন্দিরের তিনটি খিলানওয়ালা প্রবেশপথের দু’ পাশে দু’টি বড়সড় ফলকে শ্রীকৃষ্ণের রাসলীলা নিপুণ হাতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। প্রায় পৌনে চারশো বছর আগেকার এই অনবদ্য শিল্প আজও অমলিন।
একটু পিছিয়ে ফের গুমঘরের কাছাকাছি এসে বাঁ দিকে ঘুরতেই রাস্তার দু’ পাশে রাধাশ্যাম ও মৃন্ময়ী মন্দির। মাকড়া পাথরের রাধাশ্যাম মন্দির তুলনায় নবীন, ১৭৫৮-য় রাজা চৈতন্য সিংহের প্রতিষ্ঠা করা। এর শিখর গম্বুজাকৃতি। এই মন্দিরের বিশেষত্ব ইন্দো-ইসলামিক স্থাপত্যরীতিতে তৈরি প্রবেশদ্বার, সেখানে ইটের তৈরি নহবতখানা। মন্দিরে রাধাশ্যাম, গৌর-নিতাই ও জগন্নাথ পূজিত হন। মন্দিরের পুব দিকে ওড়িয়া স্থাপত্যরীতিতে তৈরি তুলসীমঞ্চ এবং দক্ষিণ দিকের সামনে নাটমঞ্চ মন্দিরের আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বিষ্ণুপুরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মৃন্ময়ী। দালান মন্দিরে তাঁর অবস্থান। মন্দিরটি তৈরি করিয়েছিলেন রাজা জগৎমল্ল, ৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে। মৃন্ময়ী বিগ্রহ গঙ্গামাটি দিয়ে তৈরি, বিসর্জন হয় না, নিত্যপূজিতা। দুর্গাপুজোর সময় ১৫ দিন ধরে পটে পুজো হয়। মন্দিরের পিছনেই রয়েছে রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ।

মশলা চায়ে দু’ চুমুক দিয়ে একটু এনার্জি ভরে নিলাম। চোখ চলে গেল মৃন্ময়ী মন্দিরের উত্তর-পূর্ব দিকে মাঠে। সেখানে তখন বসেছে ক্রিকেটের আসর। সেই আসর ভেদ করেই পৌঁছে গেলাম রাধালালজিউ মন্দিরে। শ্রীরাধিকা ও কৃষ্ণের আনন্দের জন্য মল্লরাজ বীরসিংহ এই একরত্ন মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের ভিতরে রয়েছে বাংলা ইটের তৈরি এক অদ্ভুত স্থাপত্যরীতির ভোগমণ্ডপ।
রাধালালজিউ মন্দির দেখে দু’টি পাথর দরজার তলা দিয়ে চলে এলাম শহরের আরেক প্রান্তে মদনমোহন মন্দিরে। কামান দেগে দস্যু তাড়ানো ছাড়াও মদনমোহনকে নিয়ে কাহিনি অনেক। মদনমোহন বিষ্ণুপুর রাজপরিবারের কুলদেবতা। মদনমোহন বিগ্রহ বাগবাজারের গোকুল মিত্রের কাছে বন্ধক রেখে ১ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন মল্লরাজ চৈতন্য সিংহ। মদনমোহনকে ঘরে রেখে প্রচুর অর্থ উপার্জন করলেন গোকুল। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার অজুহাতে তাই মদনমোহনকে বিষ্ণুপুরে ফেরত পাঠালেন না। মল্লরাজ বৃন্দাবন থেকে নতুন বিগ্রহ এনে প্রতিষ্ঠা করলেন। কিন্তু সেই বিগ্রহও পরে চুরি হয়ে যায়। ফের নতুন বিগ্রহ এসেছেন মন্দিরে। পুজো হয় নিয়মিত। মন্দিরের পোড়ামাটির অলঙ্করণ চোখ টানে। প্রধান প্রবেশদ্বারে কৃষ্ণলীলা থেকে শুরু করে নৃত্যরত নরনারী ভাস্কর্যে রূপায়িত হয়েছে। উপর দিকে রয়েছে যুদ্ধদৃশ্য, নীচে পশুপাখি, দশাবতার তাস ও অন্যান্য পৌরাণিক কাহিনি। মন্দিরের ভিতরে রয়েছে ড্রাগনের মতো ভাস্কর্য।
এর পরেও বিষ্ণুপুরে দেখার মতো থেকে যায় আরও অনেক মন্দির, আরও অনেক কিছু। আচার্য যোগেশচন্দ্র পুরাকৃতি ভবনে রয়েছে বাঁকুড়া জেলার শিল্প ও পুরাকীর্তির প্রচুর সংগ্রহ। সোমবার বাদে রোজ ১০টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত খোলা। শাঁখারিপাড়ায় গেলে শঙ্খ শিল্পের নমুনা দেখতে পাওয়া যায়। দশাবতার তাস তৈরি করেন মনসাতলার ফৌজদার পরিবার। বালুচরী শাড়ির জন্য বিষ্ণুপুরের কদর আজ সারা ভারতে।
চাইলে কয়েক ঘণ্টায় সাঙ্গ করা যায় বিষ্ণুপুর দর্শন। কিন্তু তাতে চোখের দেখা হয়, মনের খিদে মেটে না। বিষ্ণুপুরে থাকুন, তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করুন, সঙ্গে গাইড নিলে আরও ভালো, আর ঘরপানে ফেরার সময় সঙ্গে করে নিয়ে চলুন বিষ্ণুপুরের মিঠাই মতিচুর। কারণ ‘গান বাজনা মতিচুর/তবে জানবি বিষ্ণুপুর’।
কী ভাবে যাবেন
হাওড়া থেকে ট্রেনে খড়গপুর হয়ে বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার পথে বিষ্ণুপুর ঘণ্টা তিনেকের জার্নি। মুম্বই-দিল্লি থেকেও ট্রেনে আসা যায় বিষ্ণুপুরে। সে ক্ষেত্রে নামতে হবে বাঁকুড়ায়। এখান থেকে গাড়িতে বিষ্ণুপুর ঘণ্টা খানেকের জার্নি। বাসে বা গাড়িতে কলকাতা থেকে আসা যায় ডানকুনি-চাঁপাডাঙা-আরামবাগ-কোতুলপুর-জয়পুর হয়ে। আরামবাগ, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন শহরের সঙ্গে বাস সংযোগ রয়েছে বিষ্ণুপুরের।
কোথায় থাকবেন
থাকার সব চেয়ে ভালো বন্দোবস্ত পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের টুরিস্ট লজে। অনলাইন বুকিং-এর জন্য যোগাযোগ www.wbtdc.gov.in
এ ছাড়া বেশ কিছু বেসরকারি লজ ও হোটেল আছে।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।