প্রকৃতি যেখানে পুণ্যভূমের ছদ্মবেশে

0

সুশোভন গুপ্ত

পাহাড়ে পাথরের খাঁজে জল। সেই জলে ডুবে রয়েছে পাঁচটা পাথর। একটু ব্যালান্স করে হাত ডুবিয়ে সেই পাঁচটা পাথরের মাথা ছুঁতে পারলেই নাকি পুণ্য। ইচ্ছেপূরণ।

ব্যস। আর কিছুই না। এই কনসেপ্টের উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে একটা পর্যটনকেন্দ্র। পঞ্চলিঙ্গেশ্বর। আশেপাশের প্রকৃতি নিশ্চয়ই অপূর্ব। কিন্তু এ রকম তো আরও হাজার-একটা জায়গা রয়েছে। পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরা যাচ্ছে কি ? জানি না, আমাদের দেশে হয়তো ভালো কিছু করতে গেলে কিছু ‘কথন’ সঙ্গে জুড়ে দিতে হয়। তবে আপনার বিশ্বাস-অবিশ্বাস যা-ই হোক না কেন, একটা উইকেন্ডে দু’দিনের জন্য ওড়িশার এই জায়গাটায় ঘুরে আসতেই পারেন। এখান থেকে ঘণ্টা দুই-তিনের দূরত্বেই অবশ্য আরও বেশ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। আরেকটু বেশি সময় নিয়ে গেলে চাঁদিপুর-সহ আরও বেশ কয়েকটা জায়গা ছুঁয়ে আসতে পারেন।

panchalingeswar 2 (1)

কী ভাবে যাবেন ?

হাওড়া থেকে গেলে সেরা উপায় ধৌলি এক্সপ্রেসে যাওয়া। সকাল ছ’টায় যাত্রা শুরু। সাড়ে ন’টার মধ্যে পৌঁছে যাবেন বালেশ্বর তথা বালাসোর স্টেশনে। সেখান থেকে একটা গাড়ি ভাড়া করে নেওয়াই ভালো। পঞ্চলিঙ্গেশ্বরে পৌঁছতে ঘণ্টাখানেক লাগবে।

মাথা গুঁজবেন কোথায় ?

সেটাও খুবই সহজ। ওয়েলিংটন স্কোয়ারে ওড়িশা ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের অফিস রয়েছে। সেখান থেকেই পান্থনিবাস বুক করে নিন। নীলগিরি পাহাড়ের দিকে মুখ করা ঘরেই থাকার চেষ্টা করুন। সেই ঘরগুলোতে অবশ্য টিভি নেই। তবে সেটাই বাঁচোয়া।

panchlingeswar 1

পৌঁছনোর দিনই পঞ্চলিঙ্গেশ্বর দেখে নিতে পারেন। পান্থনিবাস ছাড়িয়ে একটু এগোলেই পাহাড়ের উপর সিঁড়ি উঠে গিয়েছে। প্রায় আড়াইশো ধাপ উঠলে দেবতার স্থানে পৌঁছে যাবেন। যাঁদের শ্বাসকষ্ট আছে তাঁরা সময় নিয়ে উঠুন। পথের ধারে ধারে বসার জায়গাও করে দেওয়া রয়েছে। পায়ে হেঁটে আশেপাশের অনেকটা জায়গা ঘুরে দেখতে পারেন। পরিবেশ খুবই ভালো লাগবে। একটু সাবধানে। কারণ জঙ্গলে সজারু রয়েছে।

একটা গোটা দিন হাতে নিয়ে গাড়ি ভাড়া করে দেবকুণ্ডে ঘুরে আসা দরকার। অসাধারণ পরিবেশ। দেবকুণ্ড মানে দেবতার স্নানের জায়গা। এ ক্ষেত্রেও নেচার ট্যুরিজমকে চ্যাম্পিয়ন করতে দেবতারই আশ্রয় নিতে হয়েছে। যেখানে গাড়ি আপনাদের নামাবে তার সামনেই দেখবেন বিরাট জলাশয়ের উপর জলপ্রপাত নেমেছে। মন্দির উপরে। প্রায় আধ কিলোমিটার উঠে। চার দিক গভীর জঙ্গলে ঘেরা। পায়ে হেঁটে উপরে উঠে আরেক অভিনব দৃশ্য। যে জায়গা থেকে নীচের দিকে জলের ধারা নেমে আসছে, সেখানেও রয়েছে একটি জলাশয়। মূল জলের ধারা আসছে আরও ওপর থেকে। পিকনিক করে দিনটা কাটানোর পক্ষে আদর্শ জায়গা।

পর দিন বিকাল চারটে কুড়িতে ফেরার ধৌলি এক্সপ্রেস। খেয়েদেয়ে বেরোনোর আগে অবশ্য ঘণ্টাখানেক সময় হাতে রাখবেন। স্থানীয় কোনও লোককে নিয়ে পায়ে হেঁটে বা সাইকেলে চড়ে দেখে নিন খুমকুট ড্যাম। আশেপাশের আদিবাসী গ্রামের ধান দিয়ে তৈরি হাতের কাজ বিখ্যাত। কিনুন ঘর সাজানোর জন্য।

ছবি-লেখক

 


dailyhunt

খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল

বিজ্ঞাপন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.