খবর অনলাইন ডেস্ক: মহিলাদের টেনিসে নতুন চ্যাম্পিয়ন পেল উইম্বলডন। তিনি চেকিয়ার (পূর্বতন চেক রিপাবলিক) বারবোরা ক্রেচিকোভা। শনিবার অল ইংল্যান্ড লন টেনিস ক্লাবের সেন্টার কোর্টে আয়োজিত মহিলাদের সিঙ্গলস ফাইনালে চলল এক হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। শেষ পর্যন্ত ইতালির জ্যাসমিন পাওলিনিকে ৬-২, ২-৬, ৬-৪ ফলাফলে হারিয়ে প্রথমবার উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হলেন ক্রেচিকোভা। টেনিসের সিঙ্গলসে এই নিয়ে দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্লাম খেতাব জিতলেন ক্রেচিকোভা। এর আগে ২০২১-এ ফরাসি ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম খেতাব জেতেন।
তবে সিঙ্গলসে দু’বার গ্র্যান্ড স্লাম জিতলেও এই গ্র্যান্ড স্লাম খেতাব ক্রেচিকোভা আগেই পেয়েছেন ডাবলসে। তাঁর প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম এসেছে ডাবলসেই। ২০১৮ সালে ফরাসি ওপেনে ডাবলসে এবং উইম্বলডনে ডাবলসে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন তিনি।
২০২৪-এর প্রথম অর্ধ খুব একটা ভালো কাটেনি ক্রেচিকোভার। চোট নিয়ে অসুস্থ ছিলেন। চোট সারিয়ে লন্ডনে আসেন উইম্বলডন খেলতেন। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে পৌঁছে গেলেন ফাইনালে। তবে একবার ফাইনালে পৌঁছোলে তিনি জয়ী হনই। তাঁর অতীতের রেকর্ড সে কথাই বলে।
১৩টি প্রধান প্রধান টেনিস টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলেছেন বারবোরা ক্রেচিকোভা। তার মধ্যে ১২টা ফাইনালে জয় এসেছে। দু’বার সিঙ্গলস ফাইনাল খেলেছেন, দু’ বারই জিতেছেন (২০২১ ফরাসি ওপেন, ২০২৪ উইম্বলডন)। ৩টি মিক্সড্ ডাবলসের ফাইনালে খেলে ৩টিতেই জিতেছেন। আর ৮টি ডাবলসের ফাইনালে খেলেছেন। জিতেছেন ৭টি ফাইনালে। উইম্বলডন খেলে এবার প্যারিসে যাবেন, ফরাসি ওপেনের বর্তমান ডাবলস চ্যাম্পিয়ন হয়ে।
পূর্ব ইউরোপের ছোট দেশ চেক প্রজাতন্ত্র, যার এখনকার নাম হয়েছে চেকিয়া। চেকিয়া থেকে বারবোরা ক্রেচিকোভা হলেন চতুর্থ মহিলা টেনিস খেলোয়াড় যিনি উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হলেন। এর আগে জানা নোভোতনা ১৯৯৮-তে, পেত্রা কেভিতোভা ২০১১ ও ২০১৪-য় এবং মারকেতা ভন্দ্রৌসোভা ২০২৩-এ উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন হন।
মরশুমের শুরুটা যাঁর ভালো হয়নি, তাঁর পক্ষে কী ভাবে সম্ভব হল উইম্বলডনে চ্যাম্পিয়ন হওয়া? ট্রফি হাতে পাওয়ার পরে ক্রেচিকোভা বললেন, “আমার মনে হয় দেশের কেউ ট্রফি জয়ের কথা বিশ্বাসই করবে না। আমি নিজেই তো বিশ্বাস করতে পারছি না। দু’ সপ্তাহ আগে একটা কঠিন ম্যাচ খেলেছি। তিন ঘণ্টার কাছাকাছি লড়াই হয়েছিল। চোট পেয়ে অসুস্থ ছিলাম। মরসুমের শুরুটা ভালোই হয়নি। তার পরেও যে উইম্বলডনের ট্রফি হাতে সেন্টার কোর্টে দাঁড়িয়ে আছি, এই ঘটনাই তো অবিশ্বাস্য লাগছে।”
খেলা শেষে জ্যাসমিন পাওলিনি ও বারবোরা ক্রেচিকোভা। ছবি Wimbledon ‘X’ থেকে নেওয়া।
জয়যাত্রায় ক্রেচিকোভা
এবারের উইম্বল্ডনে সপ্তম বাছাই জ্যাসমিন পাওলিনি এবং ৩১তম বাছাই বারবোরা ক্রেচিকোভা ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিলেন খেতাবের লড়াইয়ে। প্রথম সেটে পাওলিনিকে কার্যত দাঁড়াতেই দেননি ক্রেচিকোভা। ইতালির খেলোয়াড়ের দু’টি সার্ভিস ভাঙেন তিনি। ৬-২ ব্যবধানে জিতে নেন প্রথম সেট।
প্রথম সেটে হেরে গিয়ে পিছিয়ে পড়লেও হাল ছাড়েননি পাওলিনি। দ্বিতীয় সেটে তিনি তাঁর পুরোনো ফর্মে ফিরে আসেন। এবার তিনি ক্রেচিকোভার সার্ভিস দু’বার ভেঙে ৬-২ ব্যবধানে জিতে যান। ফল দাঁড়ায় ১-১।
তৃতীয় সেট হয়ে দাঁড়ায় নির্ণায়ক। পর পর ছ’টি গেমে যে যাঁর সার্ভিস ধরে রাখেন। সপ্তম গেমে পাওলিনির সার্ভিস ভেঙে ৪-৩ ব্যবধানে এগিয়ে যান ক্রেচিকোভা। তার পরের গেমে নিজের সার্ভিস ধরে রেখে ফল করেন ৫-৩। এর পর পাওলিনি তাঁর সার্ভিস ধরে রেখে ফল ৫-৪ নিয়ে গিয়েও লাভ হয়নি। শেষ গেমে নিজের সার্ভিস ধরে রেখে ক্রেচিকোভা ফল করেন ৬-৪। জিতে নিলেন উইম্বলডন খেতাব। এই নিয়ে পর পর দু’টি গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনালে উঠেও খেতাব জিততে পারলেন না পাওলিনি। ইতালির প্রথম মহিলা খেলোয়াড় হিসাবে উইম্বলডন ফাইনালেও উঠেও শেষ রক্ষা করতে পারলেন না তিনি।
আরও পড়ুন
ভারত-জিম্বাবোয়ে টি২০: সেঞ্চুরি থেকে ৭ রান দূরে থাকলেন যশস্বী, সঙ্গী শুবমন, জয় ১০ উইকেটে