খেলাধুলো
শাস্ত্রীর পছন্দের ভরত অরুণকেই বোলিং কোচ করল বিসিসিআই, সহকারী কোচ বাঙ্গার
মুম্বই: কোচ-রঙ্গের যবনিকা পতন হল। সৌরভদের কমিটির সুপারিশ করা জাহির নয়, শাস্ত্রীর পছন্দে ভরত অরুণকেই বোলিং কোচ হিসেবে নিযুক্ত করল বিসিসিআই। ২০১৯-এর বিশ্বকাপ পর্যন্ত অরুণকে বোলিং কোচ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি বর্তমান ব্যাটিং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গারকে সহকারী কোচের পদে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিসিআই। ফিল্ডিং কোচ হিসেবে নিজের জায়গা ধরে রেখেছেন আর শ্রীধর। মঙ্গলবার […]
মুম্বই: কোচ-রঙ্গের যবনিকা পতন হল। সৌরভদের কমিটির সুপারিশ করা জাহির নয়, শাস্ত্রীর পছন্দে ভরত অরুণকেই বোলিং কোচ হিসেবে নিযুক্ত করল বিসিসিআই।
২০১৯-এর বিশ্বকাপ পর্যন্ত অরুণকে বোলিং কোচ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি বর্তমান ব্যাটিং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গারকে সহকারী কোচের পদে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিসিআই। ফিল্ডিং কোচ হিসেবে নিজের জায়গা ধরে রেখেছেন আর শ্রীধর। মঙ্গলবার বিসিসিআইয়ের চার সদস্যের কমিটির সঙ্গে শাস্ত্রীর বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে শাস্ত্রীকে কোচ হিসেবে নিযুক্ত করার পাশাপাশি দ্রাবিড় এবং জাহিরকে যথাক্রমে বিদেশে ব্যাটিং কনসালটান্ট এবং বোলিং কোচ হিসেবে সুপারিশ করে সৌরভদের ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটি। কিন্তু এই ব্যাপারটা ভালো ভাবে নেননি শাস্ত্রী। বোলিং কোচ হিসেবে ভরত অরুণকেই পছন্দ ছিল তাঁর।
মঙ্গলবার অবশ্য বৈঠকের পর শাস্ত্রী জানিয়ে দেন, দলের প্রয়োজনে দরকার হলে দ্রাবিড় এবং জাহিরের থেকেও পরামর্শ নেওয়া হবে। তাঁর কথায়, “গত তিন চার দিন ধরে আমি ওদের সঙ্গে কথা বলেছি। কোনো সন্দেহ নেই ওরা দুর্দান্ত ক্রিকেটার। দরকার পড়লেই ওদের থেকে পরামর্শ নেবে টিম।”
তবে সৌরভদের কমিটির সুপারিশ যখন গ্রহণই করা হল না তখন এই কমিটির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এখন দেখার, সৌরভরা এই কমিটিতে থাকবেন নাকি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেবেন।
ক্রিকেট
IPL 2021: নীতীশ-রাহুলের ব্যাটে ভর করে হায়দরাবাদকে হারাল কেকেআর
হায়দরাবাদের ওপরে দাপট বজায় রাখল কেকেআর

কেকেআর: ১৮৭-৬ (নীতীশ ৮০, রাহুল ৫৩, রশিদ ২-২৪)
হায়দরাবাদ: ১৭৭-৫ (মনীশ ৬১ অপরাজিত, বেয়ারস্টো ৫৫, প্রসীদ ২-৩৫)
খবরঅনলাইন ডেস্ক: ফের একবার কলকাতা নাইটরাইডার্সের কাছে হেরে গেল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ওইন মর্গ্যানের দলের এই জয়ের পেছনে মুখ্য ভূমিকা রেখে গেলেন দুই ব্যাটসম্যান নীতীশ রানা এবং রাহুল ত্রিপাঠি।
গত মরশুমের আইপিএলে মাত্র এক বার ওপেনিং জুটি পঞ্চাশ পেরিয়েছিল। তবে সে বার ওপেনিং নিয়ে নানা রকম পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছিল কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট। শুধুমাত্র শুভমন গিলের জায়গাই পাকা ছিল। তাঁর বিপরীতের ব্যাটসম্যানদের মাঝেমধ্যেই বদলে ফেলা হত। তবে এই মরশুমের প্রথম ম্যাচেই মনে হল পরিকল্পনা একদম ঠিকঠাক ভাবেই নিয়েছে কেকেআর। তাই গিলের সঙ্গী করা করা হল নীতীশ রানাকে। আর সেই সিদ্ধান্ত শুরুতেই লেগে গেল।
অস্ট্রেলিয়া সফরের সুবাদে টি নটরাজন এখন ঘরে ঘরে পরিচিত নাম। সেই নটরাজন এবং ভুবনেশ্বর কুমার-সন্দীপ শর্মা সম্বিলিত পেস আক্রমণের বিরুদ্ধে কেকেআরের হয়ে দুরন্ত শুরু করেন শুভমন এবং নীতীশ। অস্ট্রেলিয়ায় দুরন্ত পারফর্ম করলেও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ফর্ম খুইয়েছিলেন শুভমন। এই ম্যাচের মধ্যে দিয়ে তিনি ফর্মে ফেরার চেষ্টা করলেন। অন্য দিকে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন নীতীশ।
কোনো উইকেট না হারিয়ে ষষ্ঠ ওভারেই পঞ্চাশ পেরিয়ে যায় কেকেআর। তবে এর ঠিক পরেই ড্রেসিং রুমে ফেরেন শুভমন। যদিও এতে বিচলিত হননি নীতীশ। বরং তিন নম্বরে নামা রাহুল ত্রিপাঠীকে সঙ্গে নিয়ে দলের স্কোরকে আরও এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি। হায়দরাবাদের প্রধান তুরুপের তাস রশিদ খানকেও দুর্দান্ত ভাবে সামলে দেন রাহুল-নীতীশ। একটা সময় মনে হচ্ছিল অবলীলায় দু’শো পেরিয়ে যাবে কেকেআর। শতরানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন নীতীশ।
ঝোড়ো ইনিংসের মধ্যে দিয়ে পঞ্চাশ পেরিয়ে যান রাহুল। কিন্তু এর পরেই তিনি আউট হয়ে যান। ১৬তম ওভারে নটরাজনের বলে রাহুল ফিরতেই ভেঙে পড়ে কেকেআরের ইনিংস। পরের ওভারেই রশিদের বলে শিকার হন আন্দ্রে রাসে। ১৮তম ওভারে পর পর দু’বলে নীতীশ এবং অধিনায়ক ওইন মর্গ্যানকে ফিরিয়ে কেকেআরকে মোক্ষম ধাক্কা দেন আফগানিস্তানের মহম্মদ নবী।
শেষের কয়েকটি ওভারে হায়দরাবাদের চাপা বোলিংয়ের জেরে কেকেআরের ইনিংসে অনেকটাই ধাক্কা খেয়ে যায়। তবে শেষ ওভারে প্রাক্তন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিকের সংক্ষিপ্ত ঝোড়ো ইনিংসের জেরে ১৯০-এর কাছাকাছি পৌঁছে যায় কেকেআর।
ভারতীয় দলে জায়গা খোয়ানোর পর ঋদ্ধিমান সাহা কেমন খেলেন, সেই দিকে নজর ছিল সবার। গত আইপিএলে একদম শেষ মুহূর্তে মাত্র চারটে ম্যাচ খেললেও দুরন্ত খেলেছিলেন ঋদ্ধি। সে কারণে এ বার প্রথম ম্যাচ থেকেই দলে রয়েছেন তিনি। প্রথম ওভারের হরভজন সিংহের বলকে তুলে গ্যালারিতেও ফেলে দেন ঋদ্ধি। কিন্তু তার পরেই ব্রেক লেগে যায় তাঁর ইনিংসে। শাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ততক্ষণে ড্রেসিং রুমে ফিরে গিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নারও।
এগারো রানের মাথায় দু’টো উইকেট খুইয়ে আচমকা বিপদে পড়ে যায় হায়দরাবাদ। সেই বিপদ থেকে দলকে রক্ষা করার দায়িত্ব এসে পড়ে মনীশ পাণ্ডে এবং জনি বেয়ারস্টোর ওপরে। ভারতের বিরুদ্ধে সীমিত ওভারের দু’টি সিরিজে দুরন্ত ফর্মে ছিলেন বেয়ারস্টো। সেই ফর্ম এই ম্যাচেও নিয়ে আসেন তিনি। ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়তে শুরু করে।
সিভি বরুণকে খেলানোর জন্য এ দিন সুনীল নারিনকে নামায়নি কেকেআর। সম্ভবত সেই কারণে বাড়তি একটা সুবিধা পেয়ে গিয়েছিলেন বেয়ারস্টো এবং মনীশ পাণ্ডে। কেকেআর বোলারদের বিরুদ্ধে দাপট বাড়াতে থাকেন দু’জন। বরুণের বিরুদ্ধেও দুরন্ত গতিতে রান করতে শুরু করেন। ক্রমশ নিজেদের নাগালের মধ্যে আস্কিং রেটকে নিয়ে আসেন দু’জন। দুরন্ত একটি অর্ধশতরান পেরিয়ে যান বেয়ারস্টো।
তবে খুব বাজে সময়ে আউট হয়ে যান বেয়ারস্টো, ১৩তম ওভারের শেষ বলে। তাঁর উইকেট তোলেন প্যাট কামিন্স। ততক্ষণে সবে ১০০ পেরিয়েছে হায়দরাবাদ।
বেয়ারস্টো আউট হয়ে যাওয়ার পর লড়াইয়ে বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়তে থাকে হায়দরাবাদ। আস্কিং রেটি ক্রমশ চড়তে থাকে। বরুণ, হরভজন, প্রসীদ কৃষ্ণ, কামিন্সদের চাপা বোলিংয়ের জেরে প্রবল চাপে পড়তে শুরু করে দক্ষিণের এই দলটা। কিন্তু যতক্ষণ মনীশ ছিলেন, ততক্ষণ ভরসা ছিল হায়দরাবাদের।
কিন্তু মনীশ সঙ্গী পাননি। মহম্মদ নবী বোলিংয়ে বেশি দক্ষ হলেও ব্যাটিংয়ে এখনও উল্লেখযোগ্য কোনো ইনিংসে হায়দরাবাদের হয়ে খেলতে পারেননি। এ দিনও ব্যর্থ হলেন তিনি। নবীর পর বিজয় শঙ্কর নামেন। মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে বেশ নামডাক রয়েছে তাঁর। তিনিও ব্যর্থ হন। শেষ দুই ওভারে হায়দরাবাদের আস্কিং রেট উঠে যায় ১৯-এ। ম্যাচের ফলাফল কার্যত নিশ্চিতই ছিল।
তবে শেষ মুহূর্তে কাশ্মীরের তরুণ ক্রিকেটার আব্দুল সামাদ কিছুটা চেষ্টা করছিলেন জয়ের কাছাকাছি দলকে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তাঁর সংক্ষিপ্ত মারকাটারি ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল নবীরও আগে তাঁকে নামালে অন্য রকম ফলাফল হয়ে পারত হায়দরাবাদের জন্য।
যাই হোক, আইপিএলে এমনিতেই হায়দরাবাদের ওপরে বরাবরই দাপট থাকে কেকেআরের। সেটা এই ম্যাচেও বজায় থাকল।
আরও পড়ুন: IPL 2021: পৃথ্বী-ধাওয়ানের দাপটে খড়কুটোর মতো উড়ে গেল চেন্নাই

চেন্নাই ১৮৮-৭ (রায়না ৫৪, মঈন ৩৬, ওক্স ২-১৮)
দিল্লি ১৯০-৩ (ধাওয়ান ৮৫, পৃথ্বী ৭২, শার্দূল ২-৫৩)
খবরঅনলাইন ডেস্ক: দুশোর কাছাকাছি রান তুলেও পার পেল না চেন্নাই। পৃথ্বী শ এবং শিখর ধাওয়ানের ব্যাটিং দাপটের কাছে খড়কুটোর মতো উড়ে গেল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই। গত আইপিএলের হতশ্রী পারফরম্যান্সের পর চলতি আইপিএলও খুব খারাপ ভাবে শুরু করল তারা। এ দিকে গুরু ধোনির বিরুদ্ধে নেমে অধিনায়কত্বের অভিষেকটি দারুণ হল শিষ্য ঋষভ পন্থের।
তবে এ দিন প্রথম ইনিংসে চেন্নাইয়ের ব্যাটিং দেখে আদৌ মনে হয়নি যে তাদের বোলিং এ ভাবে অসহায় আত্মসমর্পণ করে ফেলবে। কারণ প্রত্যাবর্তনেই ব্যাট চলচিল সুরাশ রায়নার।
সুরেশ রায়না থাকা আর না-থাকার মধ্যে কতটা ফারাক তৈরি হতে পারে, চোখে আঙুল দিয়ে তা দেখিয়ে দিল এ দিনের চেন্নাইয়ের ইনিংস। গত বারের আইপিএলে চেন্নাইয়ের খারাপ অবস্থার অন্যতম কারণ ছিল রায়নার অনুপস্থিতি। সেই রায়না ফিরতেই পুরো ঘুরে গেল চেন্নাইয়ের ব্যাটিং।
আর রায়নার কারণেই প্রথম তিন ওভারের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারালেও বিশেষ চাপে পড়তে হয়নি চেন্নাইয়ে। চেন্নাইয়ের ব্যাটিং শুরু হতেই এ দিন ড্রেসিং রুমের পথ দেখেন দুই ওপেনার ফাফ দু’প্লসি এবং ঋতুরাজ গায়েকওয়াড়। কিন্তু মঈন আলিকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে দুরন্ত জুটি তৈরি করে চেন্নাইয়ের হাল ধরেন রায়না।
আইপিএলের নিলামে মঈনকে চেন্নাই যখন তুলেছিল, তখন বলা হচ্ছিল চেন্নাইয়ের ঘূর্ণি পিচে তাঁর স্পিন খুব কাজে দেবে। কিন্তু এ বারের আইপিএলে ঘরের মাঠে খেলার সুযোগই হল না তাঁর। সেই মঈন কিন্তু ব্যাট হাতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেলেন। ৩৪ রান করে দেড়শোর স্ট্রাইক রেটে। মারলেন দুটো ছয়।
তবে এ দিন সব নজর একাই কেড়ে নিলেন রায়না। প্রায় দু’বছর পর আইপিএলের কামব্যাক ইনিংসে জ্বলে উঠল তাঁর ব্যাট। তাঁর ইনিংসে সাজানো ছিল চারটে ছক্কাই। দিল্লির বোলারদের কার্যত নাকানিচোবানি খাইয়ে দেন তিনি। এ ভাবেই একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্ধশতরান করে ফেলেন তিনি।
তবে দুর্ভাগ্যের রান আউট হয়ে যান রায়না। কোনো রান না করে ভক্তদের হতাশ করে বোল্ড হয়ে ফিরে যান ধোনি। তবে তার পর দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নেন স্যাম কারান এবং রবীন্দ্র জাদেজা। দু’জনের মধ্যে সপ্তম উইকেটে ৫১ রানের জুটি তৈরি হয়। এতেই দুশোর কাছাকাছি চলে যায় চেন্নাই।
বড়ো রানই তুলেছিল চেন্নাই। কিন্তু সেটা দিল্লির দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান এবং পৃথ্বী শ এত ছোটো করে দেবেন সেটা কার্যত কল্পনা করা যায়নি। মনে পরে গত বছরের শেষ দিকের কথা? অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়ে কী পরিমাণ ট্রোল্ড হয়েছিলেন শ। এর পরেই স্বপ্নের ফর্মে ফিরে আসেন তিনি। কয়েক মাস আগে বিজয় হাজারে ট্রফিতে মুম্বইয়ের হয়ে দুর্দান্ত খেলেছিলেন তিনি। ভেঙে দিয়েছিলেন একের পর এক সব রেকর্ড।
সেই ফর্মটাই এ দিন ধরে রেখেছিলেন শ। চেন্নাইয়ের বোলিং আক্রমণ শুরু হতেই তিনিও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। স্যাম কারান এবং দীপক চাহরের ওপরে দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করেন তিনি। কী অসাধারণ অবলীলায় চার এবং ছয়গুলো তিনি মারছিলেন, সেটা না দেখলে বিশ্বাসই করা যায় না। পিছিয়ে ছিলেন না ধাওয়ানও। এই দুই ক্রিকেটারের দাপটে প্রথম পাওয়ারপ্লে অর্থাৎ প্রথম ছয় ওভারের মধ্যে ৬৫ রান তুলে ফেলে দিল্লি।
এ দিকে শিখর ধাওয়ানের প্রমাণ করার তাগিদটা আরও বেশি ছিল। অক্টোবরে আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপে ভারতের ওপেনিংয়ের স্থানটা পাকা করার ব্যাপারে তিনি বদ্ধপরিকর। সেই কারণেই পাখির চোখ করেছেন আইপিএলকে। তার প্রথম ম্যাচেই ব্যাট চলল ধাওয়ানের।
এ দিকে, ইনিংস যত এগিয়ে যাচ্ছিল ততই দাপট বাড়ছিল ধাওয়ান আর পৃথ্বীর। নিমেষের মধ্যে একশো রান পেরিয়ে গেলেন দু’জনে। রানরেট তখনও দশের ওপরে। প্রয়োজনীয় রানের ব্যাপারটি তখন অনেক সহজ হয়ে আসছে। তবে যেই মনে হচ্ছিল দশ উইকেটেই ম্যাচটা পকেটে পুড়বে দিল্লি, তখনই আঘাত হানলেন ডোয়েন ব্রাভো, পৃথ্বী শ’কে ফিরিয়ে।
তিন নম্বরে নামা পন্থকে নিয়ে দলকে জয়ের আরও কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছিলেন ধাওয়ান। গত বছর আইপিএলে তিনটে শতরান করেছিলেন তিনি। এ বার আইপিএলের শুরুতেই একটা ছক্কা হাঁকাতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লাভ হল না। জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ার পরেই ধাওয়ানের পা কে উইকেটের সামনে পেয়ে যান শার্দূল ঠাকুর। আঙুল তুলনে বিন্দুমাত্র বিড়ম্বনায় পড়েননি আম্পায়ার।
তবে ধাওয়ান আউট হলেও নতুন করে কোনো বিপদে পড়েনি দিল্লি। খুব সহজেই দলকে জয়ে পৌঁছে দেন পন্থ এবং শিমরন হেটমেয়ার।
ক্রিকেট
IPL 2021: বলে ভেলকি হর্শল পটেলের, ব্যাটে জ্বলে উঠলেন ডেভিলিয়ার্স, বেঙ্গালুরুর কষ্টার্জিত জয়
দুরন্ত ভাবে ফর্মে ফিরলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।

মুম্বই: ১৫৯-৯ (লিন ৪৯, সূর্যকুমার ৩১, পটেল ৫-২৭)
আরসিবি: ১৬০-৮ (ডেভিলিয়ার্স ৪৮, ম্যাক্সওয়েল ৩৯, বুমরাহ ২-২৬)
খবরঅনলাইন ডেস্ক: দুর্দান্ত বল করে পাঁচ উইকেট নিলেন হর্শল পটেল। ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন এবি ডেভিলিয়ার্স। ভালো ফর্মের ঝলক দেখালেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং বিরাট কোহলিও। এর ওপরে ভিত্তি করেই আইপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে জয় পেল বেঙ্গালুরু। তবে খুব সহজে এই জয় আসেনি।
চলতি আইপিএলের প্রথম টসটি জিতে নিয়ে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আরসিবি অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এবি ডেভিলিয়ার্স ছাড়া বাকি তিন জন বিদেশিই নতুন মুখ। এই প্রথম বার আরসিবির জার্সি পরে মাঠে নামলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এ ছাড়া ড্যান ক্রিশ্চিয়ান এবং কাইল জেমিসনকে মাঠে নামায় বেঙ্গালুরু।
কিছুটা সাবধানী ভাবে শুরু করেছিল মুম্বই। কুইন্টন ডে কক কোয়ারান্টাইনে থাকায় রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন ক্রিস লিন। তৃতীয় ওভারে ক্যাচে তুলে দিয়েছিলেন রোহিত। সেটা ফসকান ৬ ফুট ৮ ইঞ্চির জেমিসন। যদিও এ দিন একদমই ছন্দে ছিলেন না রোহিত। চতুর্থ ওভারের শেষ বলে ক্রিস লিনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির জন্য রান আউট হয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরে যান রোহিত।
সূর্যকুমার যাদবকে সঙ্গে নিয়ে রানের গতি বাড়াতে শুরু করেন লিন। ৭ ওভারের মধ্যেই স্কোরবোর্ডে ৫৫ উঠে যায়। সেই রানের গতি অবশ্য যজুবেন্দ্র চাহল আক্রমণে আসতে কিছুটা কমতে শুরু করে। তাও ১০ ওভার পর্যন্ত রান রেট ৮-এর ওপরে রেখেছিল মুম্বই।
দ্বাদশ ওভারে সূর্যকুমারকে ৩১ রানে আউট করে আরসিবিকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন জেমিসন। কিছুক্ষণের মধ্যে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে আউট হয়ে যান লিন। অর্ধশতরানের দোরগোড়ায় গিয়েও ড্রেসিং রুমে ফিরে যেতে হয় তাঁকে। এর পর হার্দিক পাণ্ড্যর উপস্থিতিতে কিছুটা রানের গতি বাড়াতে সক্ষম হয় মুম্বই। ১৫তম ওভারে রান রেট পৌঁছে যায় ৯-এর কাছাকাছি।
কিন্তু এর পর থেকেই আরসিবি চাপা বোলিং করতে শুরু করে। এতেই আটকে যায় মুম্বই। আচমকা জ্বলে ওঠেন হর্শল পটেল। পুঁজিতে দু’টো উইকেট নিয়েই শেষ ওভারটি বল করতে আসেন তিনি। ওই ওভারে দুরন্ত বোলিং করেন তিনি।
প্রথম বলে ক্রুণালকে আউট করার পর দ্বিতীয় বলেই পোলার্ডকে আউট করলেন গুজরাতের এই জোরে বোলার। তবে তাঁর হ্যাটট্রিক হল না। তৃতীয় বলে মার্কো জ্যানসেন বেঁচে গেলেও চতুর্থ বলেই ফেরালেন জ্যানসেনকে। ফলে আইপিএলে প্রথম বার পাঁচ উইকেট নিলেন এই ডানহাতি। ১৬০-এর নীচেই আটকে যায় মুম্বই।
রান তাড়া করতে নেমে ওয়াশিংটন সুন্দরকে ওপেনিংয়ে এনে চমক দেয় বেঙ্গালুরু। কোভিডের কারণে দেবদত্ত পাড়িক্কাল এই ম্যাচে নেই, সে কারণেই ওপেনিংয়ে এই বদল আনে আরসিবি।
শুরুটা ভালোই করেছিল আরসিবি। তিনি যে ব্যাটেও খুব দক্ষ, সেটা অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে বুঝিয়ে দিয়েছেন সুন্দর। এ দিন বিরাটের ছত্রছায়ায় খারাপ খেলছিলেন না তিনি। তাঁর মূল দায়িত্ব ছিল বিরাটকে যত বেশি সম্ভব স্ট্রাইক দিয়ে যাওয়া। দু’জনের জুটিতে প্রথম চার ওভারে ৩৬ উঠে গিয়েছিল। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ড্রেসিং রুমের পথ দেখেন সুন্দর।
তিন নম্বরে নামার সুযোগ হয় আইপিএলে অভিষেক করা ক্রিকেটার রজত পতিদারের। ভীষণ সংক্ষিপ্ত ইনিংস তাঁর। তার মধ্যেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তাঁর যোগ্যতা রয়েছে বড়ো কিছু করার।
ষষ্ট ওভারের শেষে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে বেঙ্গালুরু। রান রেটও কিছুটা কমে যায়। এর মধ্যেই বিরাটের সঙ্গে ক্রিজে আসেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ক্রিকেট ফ্যানদের নজর ম্যাক্সওয়েলের দিকেই ছিল। গত বছর পঞ্জাবের হয়ে চূড়ান্ত ভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি। এই ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া মানে চূড়ান্ত ট্রোল হবে তাঁকে ঘিরে।
কিন্তু সেটা হল না। কারণ এই ম্যাচে মূল তফাত গড়ে দেওয়ার ভূমিকাতেই উত্তীর্ণ হলেন তিনি। ধুমধাড়াক্কা যে ক্রিকেটের জন্য এত দিন ম্যাক্সওয়েল পরিচিত ছিলেন, সেটাই ফিরে এল এ দিন তাঁর ব্যাটে। কখনও ছক্কা হাঁকিয়ে সোজা স্টেডিয়ামের বাইরে বলকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন তিনি, তো কখনও অবলীলায় রিভার্স সুইপ করে ছয় মেরে দিচ্ছেন তিনি। সব মিলিয়ে নতুন ম্যাক্সওয়েল এ দিন উত্তীর্ণ হলেন ক্রিকেট মাঠে।
বড়ো ইনিংসের ঝলক দিয়েও অবশ্য বেশিক্ষণ থাকতে পারলেন না ম্যাক্সওয়েল। দলের স্কোর একশো পেরোনোর সঙ্গে সঙ্গেই ড্রেসিংরুমমুখী হন ম্যাক্সওয়েল। তবে ততক্ষণে আউট হয়ে গিয়েছেন বিরাট কোহলিও। যদিও আস্কিং রেট বেঙ্গালুরুর পক্ষেই ছিল তখন।
ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নামা বাংলার শাহবাজ আহমেদ খুব একটা কিছু করতে পারেননি। ১৫ ওভারের শেষ বলে তিনি যখন আউট হলেন তখন বেঙ্গালুরুর দরকার ছিল শেষ পাঁচ ওভারে ৫৪। কিছুটা চাপে পড়তে শুরু করেছিল আরসিবি। তবে ডেভিলিয়ার্স ক্রিজে থাকায় তখনও আরসিবি শিবিরে অস্বস্তি আসেনি।
আরসিবির বৈতরণী পার করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব ডেভিলিয়ার্সই পুরোপুরি নিয়ে নেন। আস্কিং রেট দশের ওপরে উঠে যাওয়া এবং হাতে মাত্র চার উইকেট থাকা অবস্থাতেও বিশেষ চাপে পড়তে হয়নি বেঙ্গালুরুকে, কারণ ডেভিলিয়ার্স। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রায় তিন বছর অবসর নিলেও ডেভিলিয়ার্সের ডিকশনারিতে এখনও সেই পুরোনো শটগুলোই রয়েছে। সেটাই দেখিয়ে দিলেন তিনি। নিমেষের মধ্যে তাঁর স্ট্রাইক রেটও উঠে গেল দুশোর কাছাকাছি।
এ দিকে নাটক আরও কিছুটা বাকি ছিল শেষ দিকে। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রান আউট হয়ে যান ডেভিলিয়ার্স। তখন আরসিবিকে জিততে হলে ২ বলে ২ রান করতে হত। যা-ই হোক, আর নতুন করে কোনো নাটক হয়নি। ম্যাচের শেষ বলে এক রান নিয়ে দলকে জিতিয়ে দেন সেই হর্শল পটেল।
-
রাজ্য2 days ago
Bengal Polls Live: সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ভোট পড়ল ৭৫ শতাংশের বেশি
-
দেশ2 days ago
Corona Update: রেকর্ড তৈরি করে দেড় লক্ষের দিকে এগিয়ে গেল দৈনিক সংক্রমণ, তবুও কম মৃত্যুহারে কিছুটা স্বস্তি
-
বিদেশ2 days ago
Coronavirus Infection: কোনো বস্তু থেকে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা ১০ হাজারে মাত্র ১, জানাল মার্কিন সিডিসি
-
রাজ্য2 days ago
Bengal Polls 2021: বাহিনীর গুলিতে হত ৪, শীতলকুচি যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়