আফগানিস্তান: ১৪৮-৬ (রহমতুল্লাহ গুরবাজ ৬০, ইব্রাহিম জাদরান ৫১, প্যাট কামিন্স ৩-২৮, অ্যাডাম জাম্পা ২-২৮)
অস্ট্রেলিয়া: ১২৭ (১৯.২ ওভার) (গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৫৯, গুলবাদিন নাইব ৪-২০, নবীন-উল-হক ৩-২০)
খবর অনলাইন ডেস্ক: টি২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ঐতিহাসিক অঘটন। গ্রুপ ‘১’-এর খেলায় আফগানিস্তান ২১ রানে হারিয়ে দিল অস্ট্রেলিয়াকে। প্রথমে ব্যাট করে আফগানিস্তান করে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান। এই স্বল্প পুঁজি নিয়ে যে অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে নেবে আফগানরা, তা কল্পনাও করা যায়নি। কিন্তু ক্রিকেটে সবই সম্ভব। জয়ের জন্য রান তাড়া করতে গিয়ে ৪ বল বাকি থাকতেই ১২৭ রানে মুখ থুবড়ে পড়ল অস্ট্রেলিয়া। দুর্দান্ত বল করে ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন আফগানিস্তানের গুলবাদিন নাইব।
সুপার ৮-এ গ্রুপ ‘১’-র অবস্থা
আফগানিস্তানের কাছে অস্ট্রেলিয়ার হারের পর গ্রুপ ‘১’ থেকে কারা সেমিফাইনালে যাবে, সেই ছবি স্পষ্ট হল না। এই গ্রুপে ২টি ম্যাচ থেকে ৪ পয়েন্ট পেয়ে ভারত শীর্ষস্থানে রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তান, ২টি দলই ২টি ম্যাচ থেকে ২টি করে পয়েন্ট পেয়েছে। কিন্তু নেট রানরেটে অস্ট্রেলিয়া এগিয়ে। আর বাংলাদেশ ২টি ম্যাচ থেকে কোনো পয়েন্টই সংগ্রহ করতে পারেনি। খেলা বাকি ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া এবং আফগানিস্তান বনাম বাংলাদেশ। ভারত যদি অস্ট্রেলিয়াকে হারায় আর আফগানিস্তান যদি বাংলাদেশকে হারায় তা হলে ভারত আর আফগানিস্তান সেমিফাইনালে চলে যাবে। আর ভারত যদি অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায় এবং আফগানিস্তান যদি বাংলাদেশকে হারায় তা হলে নেট রানরেটে বিচার হবে ওই তিন দেশের মধ্যে কোন দুটো দেশ সেমিফাইনালে যাবে। এবং খাতায়কলমে বাংলাদেশেরও সেমিফাইনালে যাওয়ার সুযোগ আছে। ভারত যদি অস্ট্রেলিয়াকে হারায় এবং বাংলাদেশ যদি বিশাল ব্যবধানে আফগানিস্তানকে হারায় তা হলে ভারত আর বাংলাদেশ সেমিফাইনালে চলে যাবে। মোদ্দা কথা, এই গ্রুপে সব সম্ভাবনার দরজাই খোলা।
আবার হ্যাটট্রিক প্যাট কামিন্সের
ভারতীয় সময় রবিবার সকালে সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে আর্নোস ভেল স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠায় অস্ট্রেলিয়া। দুর্দান্ত শুরু করে আফগানিস্তান। প্রথম উইকেটে ১১৮ রান করে তারা। ৪৯ বলে ৬০ রান করে মার্কাস স্টয়নিসের বলে ডেভিড ওয়ার্নারকে ক্যাচ দিয়ে রহমতুল্লাহ গুরবাজ প্যাভিলিয়নে ফিরে যেতেই পতন শুরু হয়ে যায় আফগানদের। বাকি ২৫ বলে তারা যোগ করে ৩০ রান, হারায় ৫ উইকেট। গুরবাজের ৬০ রানে ছিল ৪টি ছয়, ৪টি চার।
ওপর ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান করেন ৪৮ বলে ৫১ রান। গুরবাজ আউট হয়ে যাওয়ার ৩ রানের মধ্যেই আউট হয়ে যান আজমাতুল্লাহ ওমরজাই। তার পর ১ রান যোগ হতেই ফিরে যান জাদরান। আফগানিস্তানের শেষ ৩টি উইকেট তুলে নেন প্যাট কামিন্স। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেছিলেন কামিন্স। এ দিনও করলেন। তাঁর তৃতীয় ওভারের শেষ বলে আউট করেন রশিদ খানকে। আর চতুর্থ ওভারের প্রথম দুটি বলে কামিন্স তুলে নিলেন করিম জনত এবং গুলাবদিন নাইবকে। আফগানিস্তান করল ৬ উইকেটে ১৪৮ রান। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে লড়াই করার পক্ষে যথেষ্ট নয়।
ম্যাক্সওয়েলের জ্বলে ওঠা কাজে এল না
কিন্তু আফগানিস্তানের দেওয়া চ্যালেঞ্জের কাছে মুখ থুবড়ে পড়ল অস্ট্রেলিয়া। একেবারে শুরু থেকেই বিপর্যয়। স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই বিদায় নিলেন ট্র্যাভিস হেড। ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গী হলেন অধিনায়ক মিশেল মার্শ। দলের ১৬ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন মার্শ (৯ বলে ১২ রান)। তার পর ৩২ রানের মাথায় বিদায় নিলেন ওয়ার্নার (৮ বলে ৩ রান)। ৩ জনকেই তুকে নিলেন নবীন-উল-হক।
দলের হাল ধরলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। একদিকে সতীর্থদের চলে যাওয়া, অন্য দিকে তাঁর প্রাচীর হয়ে আক্রমণ আটকানো এবং একই সঙ্গে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ইতিমধ্যে প্যাভিলিয়নে চলে গেলেন মার্কাস স্টয়নিস আর টিম ডেভিড। দলের রান ৫ উইকেটে ৮৫। জয়ের জন্য বাকি ৬৪ রান, বল রয়েছে ৪৬। ম্যাথু ওয়েডকে সঙ্গী করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ম্যাক্সওয়েল। আশায় ভর করে আছেন অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকরা। ম্যাক্সওয়েল যতক্ষণ ক্রিজে আছেন ততক্ষণ অস্ট্রেলিয়ার জয় আশাই করা যায়।
অবশেষে দলের ১০৬ রানের মাথায় বিদায় নিলেন ম্যাক্সওয়েল। তাঁকে তুলে নিলেন গুলবাদিন নাইব। ৩টে ছয় আর ৬টা চারের মাধ্যমে ৪১ বলে ৫৯ রান করে নুর মহম্মদকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন ম্যাক্সওয়েল। বাকি ৪ উইকেটে মাত্র ২১ রান যোগ করতে পারল অস্ট্রেলিয়া। বিধ্বংসী মেজাজে ২০ রান দিয়ে ৪টি উইকেট তুলে নিয়ে ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন গুলবাদিন নাইব।
আরও পড়ুন
আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ ২০২৪: বাংলাদেশকে হারিয়ে সুপার ৮-এ দ্বিতীয় জয়, সেমিফাইনালের পথে ভারত