আফগানিস্তান: ১১৫-৫ (রহমানুল্লাহ গুরবাজ ৪৩, রশিদ খান ১৯ নট আউট, রিশাদ হোসেন ৩-২৬)
বাংলাদেশ: ১০৫ (১৭.৫ ওভার) (লিটন দাস ৫৪, রশিদ খান ৪-২৩, নবীন-উল-হক ৪-২৬)
খবর অনলাইন ডেস্ক: এ যেন রূপকথা রচনা করল আফগানিস্তান। টি২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল তারা। এই প্রথম তারা সেমিফাইনালে। আর আফগানদের এই জয়ের সঙ্গেই ঘটে গেল ক্রিকেটের ইতিহাসে এক প্রায় বিরল এক ঘটনা। বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল অস্ট্রেলিয়া।
গ্রুপ ‘১’ থেকে সেমিফাইনালে আগেই পৌঁছে গিয়েছে ভারত। আর অস্ট্রেলিয়ার যাওয়া নির্ভর করছিল আফগানিস্তান বনাম বাংলাদেশের ম্যাচের ফলের উপরে। বাংলাদেশ যদি এই ম্যাচে জিতত তা হলে অস্ট্রেলিয়া চলে যেত সেমিফাইনালে। আর বাংলাদেশকে সেমিফাইনালে যেতে হলে এমন রানরেটে জিততে হত যা কার্যত ছিল অসম্ভব। কিন্তু জেতা তো দূরের কথা, আফগানিস্তানের কাছে বাংলাদেশ হেরে গেল ৮ রানে। বৃষ্টি মাঝে মাঝেই বিঘ্ন সৃষ্টি করছিল। তার জন্য ডিএলএস পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।
সেমিফাইনালে লড়াই কাদের, কবে
এবারের টি২০ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ভারত মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ডের আর আফগানিস্তান খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় সকাল ৬টায় আফগানিস্তানের ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। ওই দিনই রাত ৮টায় ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ। ফাইনাল খেলা হবে ভারতীয় সময় শনিবার রাত ৮টায়।
শুরুটা ভালোই হয়েছিল আফগানদের
ভারতীয় সময় মঙ্গলবার সকালে সেন্ট ভিনসেন্টের কিংসটাউনে আর্নোস ভেল গ্রাউন্ডে আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করতে যায় আফগানিস্তান। কিন্তু নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১১৫ রান করে তাদের ইনিংস থেমে যায়। কিংসটাউনের এই মাঠে রান খুব বেশি ওঠে না।
প্রথম উইকেটের জুটিতে আফগানরা ৫৯ রান তোলে। অন্যতম ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ খুব ভালো শুরু করেন। তাঁকে যথাযথ ভাবে সঙ্গ দেন ইব্রাহিম জাদরান। জাদরান ২৯ বলে ১৮ রান করে রিশাদ হোসেনের বলে তানজিম হাসান সাকিবকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিলে গুরবাজের সঙ্গী হন আজমাতুল্লাহ ওমরজাই। রান করা চালিয়ে যেতে থাকেন গুরবাজ। দলের ৮৪ রানের মাথায় আউট হন ওমরজাই (১২ বলে ১০ রান)। তিনি মুস্তাফিজুর রহমানের বলে লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান।
দলের রানের সঙ্গে আর মাত্র ৪ রান যোগ হতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন গুরবাজ। তিনি ৫৫ বলে ৪৩ রান করে রিশাদ হোসেনের বলে সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। মাত্র ১ রান যোগ হতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন গুলাবদিন নাইব। তিনিও রিশাদ হোসেনের শিকার, ক্যাচ ধরেন সেই সৌম্য। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ১১৫ রানে ইনিংস শেষ করে আফগানিস্তান। মহম্মদ নবি আউট হন দলের ৯৩ রানে। অধিনায়ক রশিদ খান ১০ বলে ১৯ রান করে নট আউট থাকেন।
৮ রানে জয় আফগানিস্তানের
টার্গেট খুব বড়ো নয় – ১১৬। কিন্তু ২৩ রানের মধ্যেই বাংলাদেশ ৩টি উইকেট হারায়। নবীন-উল-হক আর ফজলহক ফারুকির বল মোকাবিলা করতে না পেরে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তানজিদ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত এবং শাকিব আল হাসান। তবে রানরেট খারাপ ছিল না। চতুর্থ ওভারের তৃতীয় বল হওয়ার পরেই বৃষ্টি নামে। আধ ঘণ্টাখানেক খেলা বন্ধ থাকার পর আবার শুরু হয় ম্যাচ। ব্যাট করছিলেন ওপেনার লিটন দাস এবং সৌম্য সরকার। সপ্তম ওভারে রশিদ খানের বলে বোল্ড হন সৌম্য (১০ বলে ১০ রান)। দলের রান ৪ উইকেটে ৪৮। এর পর লিটনের সঙ্গী হন তাওহিদ হৃদয়। তার পর একে একে বিদায় নেন তাওহিদ হৃদয় (৯ বলে ১৪ রান), মাহমুদুল্লাহ (৯ বলে ৬ রান) এবং রিশাদ হোসেন (১ বলে ০ রান)। একাদশ ওভারের পঞ্চম বলে মাহমুদুল্লাহকে এবং শেষ বলে রিশাদ হোসেনকে আউট করে হ্যাটট্রিকের মুখে ছিলেন রশিদ খান।
দ্বাদশ ওভারের চতুর্থ বলের পর বৃষ্টির জন্য আবার খেলায় বিঘ্ন ঘটে। খেলা ফের যখন শুরু হয় তখন প্রয়োগ করা হয় ডিএলএস পদ্ধতি। এক ওভার নষ্ট হওয়ায় বাংলাদেশের টার্গেট দাঁড়ায় ১৯ ওভারে ১১৪ রান। রশিদ বল শুরু করে আর হ্যাটট্রিক করতে পারেননি। কিন্তু বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণ হল না। শেষকালে নবিন-উল-হকের বলের সামনে আত্মসমর্পণ করল বাংলাদেশ। ইনিংস শেষ হয়ে গেল ১০৫ রানে। লিটন দাস নট আউট থাকলেন ৪৯ বলে ৫৪ রান করে। ৮ রানে জিতে গেল আফগানিস্তান। বল নিয়ে ভেলকি দেখালেন রশিদ খান (২৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট) এবং নবীন-উল-হক (২৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট)। বাংলাদেশকে শেষ কামড়টা দেওয়ার জন্য ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন নবীন-উল-হক।
আরও পড়ুন
আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ ২০২৪: রোহিতের রুদ্র মূর্তি, অস্ট্রেলিয়াকে ২৪ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালে ভারত