ক্রিকেট
রবিবারের পড়া ২ / রানআউটে শুরু, রানআউটেই শেষ…
ধোনি কিন্তু নিজের মর্জিমাফিক চলেন বোঝা যায়। টেস্ট থেকে যেমন আচমকা অবসর ঘোষণা করেছিলেন, তেমনই সীমিত ওভারের ক্রিকেট থেকে যখন অবসর ঘোষণা করলেন তখন তাঁর জন্য একটি বিদায় ম্যাচের আয়োজন করারও উপায় নেই।


১০ জুলাই ২০১৯। নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপ্টিলের দুরন্ত একটা থ্রো শেষ করে দিল ১৩০ কোটির স্বপ্ন। একটুর জন্য ক্রিজের ভেতরে ঢুকতে পারেনি তাঁর ব্যাট, আর তাতেই সব স্বপ্নের জলাঞ্জলি।
বরাবরের আবেগহীন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি সে দিন কিন্তু নিজের আবেগকে চেপে রাখতে পারেননি। প্যাভিলিয়নে ফেরার সময়ে তাঁর চোখে জল দেখা গিয়েছিল স্পষ্ট। ভারতকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে ধোনির ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসার ঘটনা ভারতীয় ক্রিকেটে খুব একটা ঘটেনি, কিন্তু সে দিন হয়েছিল।
গত দু’ বছর ধরেই ধোনির ফর্ম পড়ে গিয়েছিল। শেষের দিকে নেমে রান পেলেও আগের মতো সেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের ধোনি কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিলেন। তবুও একটা স্বপ্ন ছিল, ধোনির হাত ধরেই ভারত আরও একবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হবে।
কিন্তু সেই সব স্বপ্ন শেষ করে দিল সেই দুঃস্বপ্নের রানআউট। রানআউট হওয়ার আগে ওই ম্যাচটায় খারাপ খেলেননি ধোনি। অর্ধশতরান করেছিলেন। কিন্তু ভারতের ব্যর্থতায় সেই সব কিছুই চাপা পড়ে গেল।
ধোনি কিন্তু ভারতের হয়ে আর কোনো ম্যাচ খেলেননি। তাঁর অবসরের ঘোষণা ছিল শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। তবুও আশায় ছিলেন ক্রিকেটভক্তরা। যদি কোনো ভাবে নিজের মত বদল করেন তিনি।
সেই সেমিফাইনালে রানআউটের মধ্যে দিয়ে শেষ হওয়া কেরিয়ারের সুচনাও হয়েছিল রানআউট দিয়েই।
সেটা ২০০৪-এর ডিসেম্বর। ঘরোয়া ক্রিকেটে তখন ফুলিঝুরি ঝরাচ্ছেন বছর ২৩-এর ধোনি। রাহুল দ্রাবিড়ের ওপর থেকে ভার কিছুটা হালকা করার জন্য একদিনের ক্রিকেটে ভারতের দরকার ভালো নির্ভরযোগ্য উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের জোরাজুরির কারণে বাংলাদেশ সফররত ভারতের একদিনের দলে ধোনিকে জায়গা দিতে বাধ্য হলেন নির্বাচকরা।

কিন্তু শুরুটা যে ভালো হল না ধোনির। চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচে ব্যাট করতে নেমেই রানআউট। খাতা খোলার সুযোগই এল না তাঁর কাছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে মোটামুটি নাম করে ফেলা ধোনির এ হেন অভিশপ্ত অভিষেক কেউ কল্পনাই করতে পারেননি।
তবে ধোনিকে নিজের জাত চেনাতে লাগল মাত্র পাঁচটা ম্যাচ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একদিনের ম্যাচ ছিল সেটা। ফাটকা খেলে তিন নম্বরে ধোনিকে নামিয়েছিলেন সৌরভ। আর তাতেই বাজিমাত। ১২৩ বলে ১৪৮ রানের দুর্ধর্ষ একটি ইনিংস। ব্যাস, তার পর আর তাঁকে ফিরে তাকাতে হয়নি।

কয়েক মাসের মধ্যেই আবারও ধোনি-তাণ্ডব। এ বার জয়পুরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। তাঁর ব্যাট থেকে বেরোল অপরাজিত ১৮৩ রানের দুর্ধর্ষ একটা ইনিংস।
এর পর টেস্ট ক্রিকেটেও নিয়ে আসা হল ধোনিকে। আর সেখানেও কয়েক মাস পরেই বাজিমাত। ২০০৬-এর পাকিস্তান সফরে ফৈজলাবাদ টেস্টে শোয়েব আখতারদের ঠেঙিয়ে ১৪৮ রানের তুখোড় একটি ইনিংস। ঝাঁকড়া চুলের ধোনি তত দিনে গোটা বিশ্বে পরিচিত হয়ে গিয়েছেন। তাঁর চুলের জন্য ফ্যান হয়ে গিয়েছেন স্বয়ং পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পরভেজ মুশারফ। ধোনিকে চুল না কাটারও আবদার করেছিলেন মুশারফ। যদিও পরের বছরই সেই চুল ছেঁটে ফেলেন মাহি।

আসলে দায়িত্ব বাড়তেই এই বাড়তি বোঝা নিজের শরীরের ওপর থেকে ঝেড়ে ফেলেন ধোনি। ধোনি তত দিনে ভারতের অধিনায়ক হয়ে গিয়েছেন। অধিনায়কের কেরিয়ারের শুরুতেই বাজিমাত।
২০০৭-এ ৫০ ওভারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের গ্রুপ লিগেই বিদায়ের পর কেউ ভাবতেই পারেনি যে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে টি২০ বিশ্বকাপে ভারত আদৌ ভালো ফল করতে পারবে বলে।
সম্ভবত নির্বাচকদেরও বেশি আশা ছিল না। আর তাই সৌরভ-সচিন-দ্রাবিড়দের বাদ দিয়ে পুরোপুরি যুবদল ভারত পাঠায় দক্ষিণ আফ্রিকায় টি২০ বিশ্বকাপের জন্য। অধিনায়ক করা হয় ধোনিকে। ওই দলে বেশি অভিজ্ঞতার যুবরাজ থাকলেও নির্বাচকরা ভরসা করেন ধোনির ওপরেই। আর এটাই হয়ে যায় এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।

ধোনির নেতৃত্বে টি২০ বিশ্বকাপ ঘরে তোলে ভারত। টুর্নামেন্টের ফাইনালে পাকিস্তান, সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়া, তার আগে ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকে হারিয়ে নজির তৈরি করে ভারত। এই বিশ্বজয়ের পরেই ভারতের একদিনের আর টেস্ট দলের দায়িত্ব ছেড়ে দেন রাহুল দ্রাবিড়। একদিনের অধিনায়কের কুর্সিতেও বসে পড়েন ধোনি।
তার পরেই ভারতীয় ক্রিকেটের এক স্বর্ণযুগের শুরু। কার্যত ‘ম্যান উইথ দ্য মিডাস টাচ’ হয়ে যান ধোনি। ২০০৮-এ অনিল কুম্বলের অবসরের পরে টেস্ট দলের দায়িত্বও তাঁর হাতে চলে আসে।
একদিনের দলকে নিজের মতো করে তৈরি করতে গিয়ে বেশ কিছু অপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল তাঁকে। সৌরভ আর দ্রাবিড়ের মতো সিনিয়রদের একদিনের দল থেকে বাদ দিয়েছিলেন। প্রবল সমালোচিত হয়েছিলেন বিভিন্ন জায়গায়। কিন্তু তাঁর হাতে তৈরি ভারতীয় দল ফল দিয়েছিল।
ধোনি যে ভাবে একদিনের দল তৈরি করতে চেয়েছিলেন, সেটাই করেছিলেন। আর তার ফলস্বরূপ ২০১১-তে বিশ্বজয়।

নিঃসন্দেহে ধোনির কেরিয়ারে সব থেকে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে ভারতের এই বিশ্বজয়। এর ঠিক দু’ বছরের মাথায় আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও দখল নিল ভারত। ধোনিই প্রথম অধিনায়ক যিনি আইসিসির তিনটে টুর্নামেন্টেই নিজের দেশকে চ্যাম্পিয়ন করেন।
পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে ভারতের সব থেকে সফল অধিনায়ক হয়ে যান ধোনি। সৌরভের রেকর্ড ভেঙে টেস্টে সর্বাধিক জয়ের রেকর্ডেরও মালিক হন অধিনায়ক ধোনি, পরবর্তীকালে যে রেকর্ডের দখল নিয়েছেন বিরাট কোহলি।
কিন্তু এর মধ্যে একটি বিতর্কও থেকে যায়। পরিসংখ্যানের দিক থেকে সব থেকে সফল অধিনায়ক হলেই কি তাঁকে সফল বলা চলে?
বিদেশে টেস্ট জয়ের নিরিখে ধোনি কিন্তু সৌরভ আর বিরাট কোহলির থেকে পিছিয়েই শেষ করলেন। বিদেশের মাঠে ২৫টা টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে মাত্র ৬টায় ভারতকে জিতিয়েছেন ধোনি। ভারত হেরেছে ১১টি টেস্টে।
তবে ধোনির টেস্ট ক্রিকেট খুব একটা প্রিয় ছিল না, সেটা তিনি বুঝিয়ে দেন ২০১৪-এর ডিসেম্বরে। মাত্র ৩৩ বছর বয়সে সবাইকে চমকে দিয়ে টেস্ট থেকে নিজের অবসরের কথা ঘোষণা করেন মাহি। এর পর শুধুই সীমিত ওভারের ক্রিকেটে মনোনিবেশ করেন তিনি।
২০১৫-এর বিশ্বকাপে ধোনির নেতৃত্বে ভারত সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। গোটা টুর্নামেন্টে ভারত একটা মাত্র ম্যাচেই হেরেছিল। অস্ট্রেলিয়ার কাছে সেমিফাইনালে।
এর পরের বছরের এক্কেবারে শেষলগ্নে একদিনের ম্যাচের অধিনায়কত্বও ছেড়ে দেন মাহি। বিরাট কোহলির কাঁধে দায়িত্ব চলে আসে। তবে বকলমে ভারতের অধিনায়ক ধোনিই ছিলেন, সেটা পরতে পরতে বোঝা গিয়েছে। উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে ধোনিকে অনেক বার ফিল্ড সেট করতে দেখা গিয়েছে।
বিরাট কোহলিও ধোনিকে অসম্ভব ভরসা করতেন। আর সেই কারণেই শেষ দু’ বছর তাঁর ব্যাটিং ফর্ম পড়ে গেলেও ধোনি সম্পর্কে কোনো বিরূপ ধারণা তৈরি হয়নি কোহলির। অধিনায়কের ব্যাকিং সব সময়ে পেয়ে গিয়েছিলেন ধোনি। এমনকি ক্রিকেটবিশ্ব যখন ধোনির সমালোচনায় মুখর, তখন তার জবাব কোহলিই দিয়েছেন।
কিন্তু যতই অধিনায়কের সমর্থন থাকুক, ধোনির নিজের ফর্ম যে পড়তির দিকে সেটা তিনিও সম্ভবত বুঝতে পারছিলেন। তবুও তাঁর আশা ছিল ভারতকে আরও একবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেই ক্রিকেট মাঠকে বিদায় জানাবেন তিনি।
কিন্তু মার্টিন গাপ্টিলের একটা রানআউট তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ করতে দিল না। রানআউটে শুরু হওয়া একটি কেরিয়ার শেষ হল রানআউটের মধ্যে দিয়েই।

ধোনি কিন্তু নিজের মর্জিমাফিক চলেন বোঝা যায়। টেস্ট থেকে যেমন আচমকা অবসর ঘোষণা করেছিলেন, তেমনই সীমিত ওভারের ক্রিকেট থেকে যখন অবসর ঘোষণা করলেন তখন তাঁর জন্য একটি বিদায় ম্যাচের আয়োজন করারও উপায় নেই।
তবুও আমরা চাই, আপামর ক্রিকেটভক্ত চায়, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও চান, অন্তত একটা ফেয়ারওয়েল ম্যাচ খেলুন ধোনি। করোনার দাপট কমে গেলে সামনের বছর দর্শকভরতি কোনো স্টেডিয়ামেই হোক এই ম্যাচ।
আপাতত চেন্নাই সুপারকিংসের হলুদ জার্সিতে দেখা যাবে ধোনিকে। কিন্তু নীল জার্সির মাহাত্ম্য যে সব সময় আলাদা।
২০১১-এর বিশ্বকাপের ফাইনালে ছয় মেরে ভারতকে জেতানোর সময়ে রবি শাস্ত্রীর বিখ্যাত ধারাবিবরণীটা এখনও মনে পড়ে, “ধোনি ফিনিসেজ অফ ইন স্টাইল!”
সেটাই কিন্তু এ বারও হল। একবারে নিজস্ব ঢঙে, নিজস্ব কায়দায় কেরিয়ার শেষ করলেন মাহি।
ক্রিকেট
ইংল্যান্ডকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জিতল ভারত
আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল ভারত।

ভারত: ৩৬৫ (পন্থ ১০১, সুন্দর ৯৬* স্ট্রোকস ৪-৮৯, আন্ডারসন ৩-৪৪)
ইংল্যান্ড: ২০৫ (স্ট্রোকস ৫৫, লরেন্স ৪৬ অক্ষর ৪-৬৮, অশ্বিন ৩-৪৭) এবং ১৩৫ (লরেন্স ৫০, রুট ৩০ অশ্বিন ৫-৪৭ অক্ষর ৫-৪৮)
খবর অনলাইন ডেস্ক: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ ম্য়াচে এক ইনিংস এবং ২৫ রানে দুর্দান্ত জয়! ঘরের মাঠে ১৩তম টেস্ট সিরিজ জেতার রেকর্ড গড়ার পাশাপাশি আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল ভারত।
শনিবার অমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে চতুর্থ টেস্ট ম্যাচের তৃতীয় দিন বিপক্ষ ইংল্যান্ডকে অলআউট করে দিল ভারত।
রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও অক্ষর পটেলের দুর্দান্ত বোলিংই এ দিন ভারতের জয়ের পথ মসৃণ করে দেয়। দুই ভারতীয় বোলারই দ্বিতীয় ইনিংসে ৫টি করে উইকেট নেন। প্রথম ইনিংসে মাত্র ২০৫ রানে ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে দিতে অক্ষর ৪টি এবং অশ্বিন ৩টি উইকট তুলে নিয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডকে স্কোর বোর্ডে দেড়শোর উপরে উঠতে দিলেন না দুই দাপুটে বোলার।
ইংল্যান্ড এই টেস্টে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। প্রথম ইনিংসে তারা ২০৫ রান তুলতে সক্ষম হয়। তবে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ভারত প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রান করে ১৬০ রানের লিড নিয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ড ১৩৫ রানে অলআউট হয়ে গেল আজ। এই টেস্টে অক্ষর ৯ উইকেট এবং আশ্বিন ৮ উইকেট নিয়েছেন। ভারতের হয়ে সেঞ্চুরি করেছেন ঋষভ পন্থ।
প্রসঙ্গত, ইংল্যান্ড প্রথম টেস্ট ২২৭ রানে জিতে এই সিরিজে দুর্দান্ত সূচনা করেছিল। তবে দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডকে ৩১৭ রানে হারিয়ে ভারত আবারও ফিরে আসে। এর পরে, দ্বিতীয় টেস্টটি দু’দিনের মধ্যেই ১০ উইকেটে জিতে নেয় ভারত। ধারাবাহিকতা বজায় রেখে চতুর্থ টেস্টে এক ইনিংস ও ২৫ রানে জয়ী হল ভারত। সিরিজের ফল ৩-১।
আরও পড়তে পারেন: শতরানের খরা কাটিয়ে ‘সুন্দর’ ইনিংস ঋষভের, চালকের আসনে ভারত
ক্রিকেট
শতরানের খরা কাটিয়ে ‘সুন্দর’ ইনিংস ঋষভের, চালকের আসনে ভারত
রোহিত এই সিরিজে ভারতের হয়ে সব থেকে বেশি রান করেছেন। এটা রোহিতের পক্ষে যেমন ভালো বিজ্ঞাপন, তেমনই ভারতীয় ব্যাটিংয়ের খারাপ দশাটাও দেখিয়ে দিচ্ছে।

ইংল্যান্ড ২০৫
ভারত ২৯৪-৭ (ঋষভ ১০১, সুন্দর ৬০, অ্যান্ডারসন ৩-৪০)
খবরঅনলাইন ডেস্ক: জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ায় অভিষেকের পর থেকে বল হাতে যতটা কামাল তিনি করেছেন, তার থেকে অনেক বেশি প্রভাব ফেলেছেন ব্যাটে। এ হেন ওয়াশিংটন সুন্দর যদি ঋষভ পন্থের সঙ্গে ক্রিজে জমে না জেতেন, তা হলে ভারতের কপালে অবধারিত দুঃখ ছিল।
পন্থকে যত কৃতিত্ব দেওয়া যায়, কমই হবে। অত্যন্ত কঠিন পিচে যে ব্যাটিংটা তিনি করলেন তা এক কথায় দুর্দান্ত। টেস্টে পন্থের অনেক ভালো ভালো ইনিংস রয়েছে। কিন্তু তাঁর সেরা ইনিংসগুলোর তালিকা তৈরি করতে হলে, নিঃসন্দেহে এটা দু’নম্বরে আসবে, প্রথমে অবশ্যই আসবে ব্রিসবেনে ম্যাচ জেতানো সেই ইনিংসটা।
মধ্যাহ্নভোজনের আগেই ভারতের চতুর্থ উইকেট যখন পড়ল, দল তখনও ৯০ পেরোয়নি। রোহিত শর্মার সঙ্গে ক্রিজে জমে গিয়েও স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন অজিঙ্ক রাহানে। দু’জনের জুটিটা বেশ চলছিল। রাহানের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল বড়ো রানের দিকেই এগোচ্ছেন তিনি। কিন্তু সেই ইনিংসকে কাটছাঁট করে দেন জেমস অ্যান্ডারসন।
তার আগেই ভারত বড়ো চাপ খেয়ে গিয়েছে এ দিন। দিনের খেলা শুরু হওয়ার একটু পরেই পর পর ড্রেসিং রুমে ফিরে যান চেতেশ্বর পুজারা এবং বিরাট কোহলি। সিরিজে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ০ করলেন বিরাট, যা তাঁর কাছে অকল্পনীয়। দলের স্কোর তখন ৪১। এর পর চতুর্থ উইকেট যখন পড়ল ইংল্যান্ড তখন ম্যাচে ফিরে আসার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু খেলা ঘুরিয়ে দিলেন পন্থই।
রোহিত এই সিরিজে ভারতের হয়ে সব থেকে বেশি রান করেছেন। এটা রোহিতের পক্ষে যেমন ভালো বিজ্ঞাপন, তেমনই ভারতীয় ব্যাটিংয়ের খারাপ দশাটাও দেখিয়ে দিচ্ছে। সেই রোহিতকে সঙ্গে নিয়ে দলের স্কোরকে কিছুটা টেনে নিয়ে যান পন্থ। পঞ্চাশ থেকে মাত্র এক রান কমে আউট হয়ে যান রোহিত। কিছুক্ষণ পর যখন রবিচন্দ্রন অশ্বিনও আউট হন ভারত তখন ইংল্যান্ডের স্কোর থেকে ৫৯ রান দূরে।
এর পরের ঘণ্টা আড়াই আর উইকেট পড়েনি। ক্রিজে এসেই জমে যেতে শুরু করেন সুন্দর। অন্যদিকে নিজের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে শুরু করেন পন্থ। দু’জনের জুটি যখন একশো পেরিয়ে যায়, তখন পন্থের অবদান ছিল ৫৯ বলে ৬৩। জো রুটের বলে ছক্কা মেরে শতরান পূর্ণ করেন তিনি। এর মধ্যে দিয়েই শতরানের খরা কাটে পন্থের। ২০১৯-এর জানুয়ারিতে সিডনিতে শেষ বার শতরান করেছিলেন তিনি।
তবে এ দিন পন্থের ইনিংসে দু’রকম ধরন দেখা গিয়েছিল। প্রথম পঞ্চাশ তিনি করেছিলেন ঢিমেতালে খেলে। কিন্তু পরের পঞ্চাশ আসে পন্থের চিরাচরিত আগ্রাসী ঢঙেই। যদিও শতরানের পরেই পন্থ বুঝিয়ে দেন যে তিনি নিজের স্বভাব খুব একটা বদলাবেন না। কারণ শতরান থেকে এক রান বেশি করেই ড্রেসিং রুমে ফেরেন তিনি।
তবে পন্থ যখন আউট হলেন ভারত ততক্ষণে লিড নিয়ে বেশ সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। এখন থেকে যা রানই আসত, সবই বোনাস। এ বার অর্ধশতরান পেরিয়ে যান সুন্দর। দিনের খেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত আর কোনো উইকেট পড়েনি ভারতের। লিড ক্রমশ বাড়িয়ে তারা এখন যথেষ্ট সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে।
খবরঅনলাইনে আরও পড়তে পারেন
৬ ক্রিকেটার কোভিড পজিটিভ, স্থগিত হয়ে গেল পাকিস্তান সুপার লিগ
ক্রিকেট
৬ ক্রিকেটার কোভিড পজিটিভ, স্থগিত হয়ে গেল পাকিস্তান সুপার লিগ
অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার ফাওয়াদ আহমেদ এবং ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান টম ব্যান্টন ছাড়া কারও নাম জানা যায়নি।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকেই কোভিডে আক্রান্ত হয়ে গেলেন ৬ জন ক্রিকেটার-সহ সাত জন। এর ফলে কোনো রকম ঝুঁকি না নিয়ে স্থগিত করে দেওয়া হল পাকিস্তান সুপার লিগ। ক্রিকেটারদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের তরফে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, “টিম মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর অংশগ্রহণকারীদের স্বাস্থ্যকে আগ্রাধিকার দিয়েই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড পিএসএল-৬ স্থগিত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া টুর্নামেন্টে ৭ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের অজি লেগ-স্পিনার ফাওয়াদ আহমেদ ইতিমধ্যেই আইসোলেশনে রয়েছেন। তাঁর করোনা পজিটিভ চিহ্নিত হওয়ার কথা ইসলামাবাদ ফ্র্যাঞ্চাইজির তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়। কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের টম ব্যান্টনও আইসোলেশনে রয়েছেন বল নিজেই জানিয়েছেন।
একজন স্থানীয় সাপোর্ট স্টাফও কোভিড পজিটিভ চিহ্নিত হয়েছেন বলে খবর। তবে বাকিদের পরিচয় এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। উল্লেখ্য, করোনার দাপট কিছুটা কমায় স্টেডিয়ামে ২০ শতাংশ দর্শকের উপস্থিতিতে এই টুর্নামেন্ট চলছিল। সন্দেহ কোনো ভাবেই দর্শকদের সংস্পর্শে এসেছিলেন ক্রিকেটাররা, সেখান থেকেই ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস।
খবরঅনলাইনে আরও পড়তে পারেন
ইংল্যান্ডকে স্পিনের জালে জড়িয়েও শুভমনের উইকেটে অস্বস্তিতে ভারত
-
রাজ্য1 day ago
পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল তৃণমূল
-
গাড়ি ও বাইক2 days ago
আরটিও অফিসে আর যেতে হবে না! চালু হল আধার ভিত্তিক যোগাযোগহীন পরিষেবা
-
ভ্রমণের খবর3 days ago
ব্যাপক ক্ষতির মুখে পর্যটন, রাঢ়বঙ্গে ভোট পেছোনোর আর্জি নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠন
-
রাজ্য1 day ago
বিধান পরিষদ গঠন করে প্রবীণদের স্থান দেওয়া হবে, প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে বললেন মমতা