ভারত: ৪৭১ (শুভমন গিল ১৪৭, ঋষভ পন্থ ১৩৪, যশস্বী জয়সওয়াল ১০১, বেন স্টোক্স ৪-৬৬, জোশ টাং ৪-৮৬)
ইংল্যান্ড: ২০৯-৩ (ওলি পোপ ১০০ নট আউট, বেন ডাকেট ৬২, জসপ্রীত বুমরাহ ৩-৪৮)
লিড্স (ইংল্যান্ড): যা আশা করা হয়েছিল, তা হল না। বড়ো রানের ইনিংস গড়তে পারল না ভারত। হেডিংলে টেস্টের দ্বিতীয় দিনে শুভমন গিল প্যাভিলিয়নে ফিরে যাওয়ার পর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল ভারত। গত দিনের স্কোরের সঙ্গে ৭ উইকেটে যোগ করল মাত্র ১১২ রান। ভারত ইনিংস শেষ করল ৪৭১ রানে। বেন স্টোক্স এবং জোশ টাং-এর আক্রমণের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন ভারতীয় ব্যাটাররা।
সমানে সমানে লড়াই চালাচ্ছে বেন স্টোক্সের ইংল্যান্ড। এ দিন প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড করল ৩ উইকেটে ২০৯ রান। তাদের একজন ইতিমধ্যেই সেঞ্চুরি করে ফেলেছে। ওলি পোপ ১০০ রানে নট আউট আছেন। ইংল্যান্ডের ৩টি উইকেটই দখল করেছেন জসপ্রীত বুমরাহ।
চতুর্থ উইকেটের পর ধস নামল ভারতের ইনিংসে
প্রথম দিনে ভারত যে ভাবে খেলেছিল তাতে মনে হয়েছিল, বড়ো রানের ইনিংস গড়ে ফেলে ইংল্যান্ডকে বিপাকে ফেলবে ভারত। কিন্তু যতটা আশা করা গিয়েছিল ততটা হল না। হেডিংলে টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ভালোই শুরু করেছিলেন শুভমন গিল এবং ঋষভ পন্থ। তবে ঋষভ যতটা আক্রমণাত্মক ছিলেন, শুভমন ততটাই ধীরেসুস্থে খেলছিলেন। দলের ৪৩০ রানের মাথায় শোয়েব বশিরের বলে জোশ টাংকে ক্যাচ দিয়ে শুভমন যখন বিদায় নেন, তখন তাঁর ঝুলিতে ১৪৭ রান। শুক্রবার দিনের শেষে ভারতের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ৩৫৯ রান। শুভমন নট আউট ছিলেন ১২৭ রানে। অর্থাৎ শনিবার দলের স্কোরে ৭১ রান যোগ হওয়ার পর শুভমন যখন বিদায় নেন, তখন তাঁর স্কোরে যোগ হয়েছে ২০ রান। এর থেকেই বোঝা যায়, তাঁর সঙ্গী ঋষভ পন্থ কতটা আক্রমণাত্মক ছিলেন।
যশস্বী জয়সওয়াল এবং শুভমন গিলের সেঞ্চুরির পর একই ইনিংসে সেঞ্চুরি করলেন ঋষভ পন্থ। ১৭৮ বলে তিনি করলেন ১৩৪ রান। স্ট্রাইক রেট ৭৫.২৮। এতেই বোঝা যায়, টেস্টের নিরিখে কতটা বিধ্বংসী ছিলেন ঋষভ। কিন্তু দুর্ভাগ্য ভারতের, শুভমন আর ঋষভ ছাড়া আর কোনো ব্যাটারের হাত থেকে তেমন কোনো রান এল না। শুক্রবারের ৩৫৯ রানের পর ভারত শনিবার ৭ উইকেট হারিয়ে যোগ করল ১১২ রান। তা-ও দিনের প্রথম উইকেট পড়ল শুক্রবারের রানের সঙ্গে ৭১ রান যোগ হওয়ার পর। দলের ৪৩০ রানে চতুর্থ উইকেট পড়ার পর ধস নামল ভারতের ইনিংসে। বাকি ৬ উইকেটে যোগ করল মাত্র ৪১ রান। যাঁর উপর কিছু ভরসা ছিল, সেই করুণ নায়ার ফিরে গেলেন শূন্য রানে। শনিবার ইংল্যান্ডের পরিত্রাতা হিসাবে উদয় হলেন স্বয়ং অধিনায়ক বেন স্টোক্স এবং জোশ টাং। তাঁরা ৪টি করে উইকেট দখল করলেন।

৩টি উইকেটই নিলেন বুমরাহ। ছবি ‘X’ থেকে নেওয়া।
শুরুতে ধাক্কা খেলেও সামলে নিল ইংল্যান্ড
ইংল্যান্ড ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায়। বুমরাহের বলে করুণ নায়ারকে ক্যাচ দিয়ে মাত্র ৪ রান করে ফিরে যান জ্যাক ক্রলি। অপর ওপেনার বেন ডাকেটের সঙ্গী হন ওলি পোপ। ভারতের বোলাররা তাঁদের কোনো রকম বেগই দিতে পারেননি। দ্বিতীয় উইকেটে যোগ হয় ১২২ রান। ডাকেটকেও তুলে নেন বুমরাহ। ৬২ রান করে বুমরাহের বলে বোল্ড হন তিনি। এর পর পোপের সঙ্গী হন জো রুট। তাঁরা স্বচ্ছন্দে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন। তবে তুলনায় অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন পোপ। ইংল্যান্ডের ইনিংসের ৪৭তম ওভার করছিলেন বুমরাহ। সেই ওভারের দ্বিতীয় বলে ১ রান নিয়ে নিজের শতরান পূর্ণ করেন পোপ।
পরের বলেই জো রুটকে তুলে নেন বুমরাহ। এই নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে রুটকে দশ বার আউট করলেন বুমরাহ। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে ফিরে গেলেন ২৮ রান করে ফিরে গেলেন রুট। পোপের সঙ্গী হলেন হ্যারি ব্রুক। ব্রুক এখনও খাতা খোলেননি। দিনের শেষে সেই বুমরাহেরই দৌলতে ইংল্যান্ডের তৃতীয় উইকেট নিয়ে কিছুটা আশা জাগাল ভারত। আপাতত ইংল্যান্ডের ৩ উইকেটে ২০৯ রান। ৪৮ রান দিয়ে ৩ উইকেটই নিলেন জসপ্রীত বুমরাহ।
এখানে দুটো কথা বলা দরকার। এ দিন বুমরাহের বলে ভারতের ফিল্ডাররা ৩টে ক্যাচ মিস করেছেন। তা না হলে ভারত হয়তো আজ আরও ভালো জায়গা থাকত। আর দ্বিতীয় কথা, বুমরাহ ছাড়া ভারতের কোনো বোলাররই দাগ কাটতে পারেননি। তাঁরা বিন্দুমাত্র বেগ দিতে পারেননি ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের। এই বিষয়টি ভারতের টিম ম্যানেজমেন্টের মাথায় রাখা দরকার।