ইংল্যান্ড: ২৪৮ (৪৭.৪ ওভার) (জোস বাটলার ৫২, জ্যাকব বেথেল ৫১, রবীন্দ্র জাদেজা ৩-২৬, হর্ষিত রানা ৩-৫৬)
ভারত: ২৫১-৬ (৩৮.৪ ওভার) (শুবমন গিল ৮৭, শ্রেয়স আইয়ার ৫২, শাকিব মাহমুদ ২-৪৭, আদিল রশিদ ২-৪৯)
নাগপুর: বেশ কিছু দিন পর মাঠে নামলেন রোহিত শর্মা। অনেক প্রত্যাশা ছিল ভারতের সমর্থকদের। কিন্তু তিনি ফের হতাশ করলেন। কিন্তু তাতে ভারতের জয় আটকাল না। প্রথমে রবীন্দ্র জাদেজা আর হর্ষিত রানার বোলিংয়ের জোরে এবং পরে শুবমন গিল, শ্রেয়স আঈয়ার ও অক্ষর পটেলের ব্যাটের গুণে তিন ম্যাচের এক দিনের সিরিজের প্রথম ম্যাচে ভারতের ঘরে জয় এল সহজেই। ১১.২ ওভার বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেটে জয় তুলে নিল ভারত। ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হলেন শুবমন গিল।
বৃহস্পতিবার বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে আয়োজিত ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট নেয় ইংল্যান্ড। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের, পুরো ৫০ ওভার টিকে থাকতে পারল না তারা। সে ভাবে ভারতীয় বোলারদের মোকাবিলা করতে না পারার খেসারত দিল তারা। ১৪ বল বাকি থাকতেই ২৪৮ রানে শেষ হয়ে গেল তাদের ইনিংস।
শুরু ভালো হলেও শেষরক্ষা হল না ইংল্যান্ডের
শুরুটা কিন্তু বেশ ভালো করেছিল ইংল্যান্ড। দুই ওপেনার ফিল সল্ট এবং বেন ডাকেট ৮.৫ ওভারে তোলেন ৭৫ রান, ওভারপিছু ৯ রানের কাছাকাছি। দুর্ভাগ্যক্রমে সল্ট রান আউট হতেই ভাঙন ধরল ইংল্যান্ডের ইনিংসে। আর এর মূলে হর্ষিত রানা। দলের ৭৫ রানে সল্ট (২৬ বলে ৪৩ রান) রান আউট হওয়ার পর মাত্র ২ রান যোগ হতেই প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেন বেন ডাকেট (২৯ বলে ৩২ রান) ও হ্যারি ব্রুক (৩ বলে ০ রান)। দশম ওভারের তৃতীয় ও শেষ বলে তাঁদের তুলে নিলেন রানা।
এর পর পতন কিছুটা ঠেকানোর চেষ্টা করলেন জো রুট এবং অধিনায়ক জোস বাটলার। কিন্তু রান ওঠার গতি বেশ কমে যায়। এ বার রবীন্দ্র জাদেজার পালা। দলের ১১১ রানে রুটকে (৩১ বলে ১৯ রান) এলবিডব্লিউ করলেন জাদেজা। উইকেট পতন ঠেকানোর দায়িত্ব বর্তায় জোস বাটলার এবং জ্যাকব বেথেলের উপর। দলের ১৭০ রানে অক্ষর পটেলের বলে বাটলার (৬৭ বলে ৫২ রান) ফিরে যাওয়ার পর ঘন ঘন উইকেট পড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড বাকি ৫ উইকেটে যোগ করে ৭১ রান। বেথেল করেন ৬৪ বলে ৫১ রান। এ দিনের ম্যাচে রবীন্দ্র জাদেজা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর ৬০০ উইকেট পূর্ণ করলেন।

বেথেল এলবিডব্লিউ জাদেজা। ছবি BCCI ‘X’ থেকে নেওয়া।
৬৮টা বল বাকি থাকতেই জয় ভারতের
জয়ের জন্য ভারতের দরকার ছিল ২৪৯ রান। ভারতের শুরুটা কিন্তু ভালো হয়নি। ১৯ রানের মধ্যে ফিরে যান যশস্বী জয়সওয়াল (২২ বলে ১৫ রান) এবং রোহিত শর্মা (৭ বলে ২ রান)। এর পর দলের হাল ধরেন শুবমন গিল এবং শ্রেয়স আইয়ার। দুর্দান্ত ক্রিকেট উপহার দেন তাঁরা। তবে শ্রেয়স তুলনায় অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন। ইংল্যান্ডের চতুর্দশ ওভারের চতুর্থ বলে বেথেলকে বাউন্ডারি সীমানার বাইরে পাঠিয়ে নিজের অর্ধশত পূর্ণ করেন শ্রেয়স। তখন শুবমন রয়েছেন ১৮ রানে। শেষ পর্যন্ত দু’জনে ১৬ ওভারে দলের স্কোর নিয়ে যান ১১৩ রানে। বেথেলেরই বলে শ্রেয়স (৩৬ বলে ৫৯ রান) এলবিডব্লিউ হলে শুবমনের সঙ্গী হন অক্ষর পটেল।
শুবমন আর অক্ষরের চতুর্থ উইকেটের জুটিতে ১৭.৪ ওভারে যোগ হয় ১০৮ রান। ২৫তম ওভারের পঞ্চম বলে জোফ্রে আর্চারকে কভারে পাঠিয়ে ১ রান নেন শুবমন এবং নিজের ৫০ রান পূর্ণ করেন। সেই সময় অক্ষর খেলছেন ২৯ রানে। ইতিমধ্যে অক্ষরও অর্ধশত রান পূর্ণ করেন দলের ৩৩তম ওভারের শেষ বলে। ব্রাইডন কার্সকে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে অক্ষর ৫০ পূর্ণ করেন। কিন্তু পরের ওভারেই আদিল রশিদের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান অক্ষর।
জয়ের জন্য তখনও ভারতের দরকার ২৮ রান। দ্রুত ফিরে যান কে এল রাহুল। তার পর শুবমন গিল শাকিব মাহমুদের শিকার হন। বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি ৯৬ বলে ৮৭ রান করে। বাকি কাজ সমাধা করেন হার্দিক পাণ্ড্য (৬ বলে ৯ রান) ও রবীন্দ্র জাদেজা (১০ বলে ১২ রান)। দু’জনে নট আউট থেকে দলকে কাঙ্ক্ষিত জয়ে পৌঁছে দেন। ভারত জিতে যায় ৪ উইকেটে। তখনও ইনিংসের ৬৮টা বল হাতে রয়েছে ভারতের।